দুর্গাপুজোয় হাত টান থাকলেও কালীপুজোয় উপুরহস্ত ফরাক্কা। বুধবার তাই এই শিল্পশহরে ৪০টি কালীপুজোকে ঘিরে এলাহি আয়োজন শুরু হয়েছে। আর সেই জমজমাট রঙে লেগেছে রাজনীতির রংও। ফরাক্কার জুভেন্টাস ক্লাবের পুজোকে যেমন সবাই এক ডাকে চেনেন সিপিএমের পুজো বলে ঠিক তেমনই মিডিয়াম ক্লাব, নয়-দশ পল্লি ও শিশুতলাকে চিনিয়ে দেওয়ার দরকার নেই এলাকার কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হকের পুজো বলে। রাজনীতির রেষারেষি পুজোতেও ছাপ ফেলেছে। শুরু হয়ে গিয়েছে একে অন্যকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা।
মিডিয়াম ক্লাবের পুজো এ বার ২৫ বছরে পড়ল। রজতজয়ন্তী বর্ষে বৌদ্ধ মন্দিরের সাজে সেজে উঠছে মণ্ডপ। চন্দননগর থেকে আনা হয়েছে আলোকসজ্জা। ক্লাবের সম্পাদক নোপন দাস বলেন, “প্রায় ৩ লক্ষ টাকার বাজেট।” নয়-দশ পল্লির মণ্ডপ সাজানো হয়েছে পুরনো মন্দিরের আদলে। ক্লাবের সম্পাদক তরুণ দাসের বক্তব্য, “মালদহ থেকে আনা হয়েছে মণ্ডপের কারিগর। আলো কৃষ্ণনগরের।” শিশুতলাও কম যায় না। তাঁদেরও বাজেট প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। ক্লাবের সহ সভাপতি সুজিত সাহা বলেন, “কাঠমান্ডুর একটি মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। সাজানো হয়েছে মাদুর, বাঁশের নানা উপকরণ দিয়ে।” তবে এই পুজোর বাড়তি আকর্ষণ মণ্ডপের সামনের মাঠ। সেখানে আড্ডা চলে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
সুজিতবাবুর কথায়, “দুর্গাপুজোর সেই আড়ম্বর আর নেই ফরাক্কায়। কিন্তু কালীপুজোয় অন্য রকম।” তিনি বলেন, “এই শহরে মইনুল হকের যেমন পুজো রয়েছে, তেমনই রয়েছে আবুল হাসনাতের পুজো। একে অন্যকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করে ক্লাবগুলি। তাতে লাভবান তো হন দশর্কেরাই।”
জুভেন্টাস ক্লাবের সভাপতি আবুল হাসনাৎ। তাঁর ছেলে রকি খান ক্লাবের সম্পাদক। রকি বলেন, “এ বারের মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বর্ণ বৈচিত্রময় ভারতকে। বাঁশ, কাপড়, কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে এই মণ্ডপ। এমন মণ্ডপ এই শহরে আর পাওয়া যাবে না।” মইনুলের কথায়, “পুজো এখন কোনও ধর্মের গণ্ডিতে বাঁধা নেই। সর্বজনীন উৎসবের চেহারা নিয়েছে। এই উৎসবকে উপলক্ষ করে তৈরি হয় জনসংযোগও।” আবুল হাসনাৎ বলেন, “পুজোর দু’দিন রাজনীতি থেকেও দূরে থাকি। সুখে আনন্দে একে অপরকে পাশে পাওয়াটাই আনন্দ। এর মধ্যে কোনও রেষারেষি নেই।” |