প্রধানের বিরুদ্ধে দলীয় সদস্যদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটি নিয়ে মঙ্গলবার তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে হুলুস্থুল বাঁধল হুগলির শ্রীপুর-বলাগড় পঞ্চায়েতে।
অভিযোগ, ভোটাভুটিতে যোগ দিতে আসা অনেককে পঞ্চায়েত ভবনে ঢুকতেই দেয়নি তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর ছেলেরা। এই দলে মূলত ছাত্র-যুবরা ছিল। অন্য দিকে, অনাস্থার পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্যও কাউকে কাউকে অন্য গোষ্ঠীর তরফে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৫ জন সদস্য উপস্থিত হতে পেরেছিলেন। ভোটাভুটি ৩-২ ফলে জয়ী হয়ে আসন ধরে রাখেন প্রধান। এই ঘটনায় তৃণমূল নেতৃত্ব বিরম্বনায় পড়েছে। দলের জেলা সভাপতি দপন দাশগুপ্ত বলেন, “অনেকে ভোটাভুটিতে যোগ দিতে আসতে পারেননি। কেন সেখানে এমন ঘটনা ঘটল, দলীয় স্তরে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
শ্রীপুর-বলাগড় পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা ১৯। এর মধ্যে তৃণমূলের দখলে রয়েছে ১৬টি আসন। বাকি ৩টি সিপিএমের হাতে। গত নির্বাচনের পরে বোর্ড গঠনের সময় থেকেই তৃণমূলের গোষ্ঠীবিবাদে জর্জরিত ওই পঞ্চায়েত। প্রধানের পদটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। নির্বাচনের পরে দলের তরফে প্রধান করা হয়েছিল সুমনা দাসকে। কিন্তু বছর খানেকের মাথায় তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন দলেরই কিছু সদস্য। অনাস্থায় হেরে প্রধানের পদ থেকে তাঁকে সরে যেতে হয়। নতুন প্রধান হন গৌরী দাস। এর পরেও অবশ্য ডামাডোল থেমে থাকেনি।
বেশ কিছু দিন থেকে দলেরই কিছু সদস্য গৌরীদেবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছিলেন, তিনি দলের এক পুরুষ সদস্যের ‘অঙ্গুলিহেলনে’ পঞ্চায়েত চালান। গৌরীদেবী নামে প্রধান থাকলেও আসলে পঞ্চায়েত চালান দলের ওই সদস্যই। এই নিয়ে গোলমাল বাড়তে থাকে। চলতি মাসের ১১ তারিখে গৌরীদেবীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তৃণমূলেরই ৯ জন সদস্য। দলের ভাবমূর্তির কথা ভেবে ব্লক স্তরের কয়েক জন তৃণমূল নেতা ভোটাভুটি এড়াতে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, দলেরই অপর কিছু নেতার ইন্ধনে তাঁদের চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি। শেষ পর্যন্ত, মঙ্গলবার ভোটাভুটির দিন স্থির হয়। দু’পক্ষেরই অভিযোগ, তাদের সদস্যদের হুমকি দিয়েছে অপর গোষ্ঠীর লোকজন। তবে, স্থানীয় তৃণমূল নেতারা এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না।
মঙ্গলবার অবশ্য ভোটাভুটিকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল এড়াতে যথেষ্ট সংখ্যায় পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা হাজির থাকায় বিষয়টি শেষ পর্যন্ত বেশি দূর গড়ায়নি। |