ভরদুপুরে গয়না তৈরির কারখানায় হানা দিল দুষ্কৃতীরা। ‘প্রেস’ স্টিকার লাগানো গাড়ি চড়ে এসেছিল তারা। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ডোমজুড়ের উত্তর ঝাপড়দহ এলাকায় ৫৭ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে। বোমাবাজি করে পালিয়ে যাওয়ার সময়ে এক দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে জনতা। ওই দুষ্কৃতীর কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
রাস্তার ধারেই একটি চারতলা ভবনের প্রায় প্রতিটি তলে রয়েছে সোনার গয়না তৈরির কারখানা। এই ভবনেরই নীচের তলায় একটি ঘর নিয়ে কারখানা করেছেন সমীর দাস। কারখানায় কর্মচারী ১২ জন। তবে ডাকাতির ঘটনার সময়ে ছিলেন সাত জন। বাকিরা বাইরে দুপুরের খাবার খেতে গিয়েছিলেন। সমীরবাবু নিজেও ওই সময়ে কারখানায় ছিলেন না।
বেলা দেড়টা নাগাদ একটি গাড়ি এবং মোটর বাইকে চড়ে কয়েক জন দুষ্কৃতী দোকানের সামনে হাজির হয়। আগ্নেয়াস্ত্র এবং বোমা নিয়ে কারখানার ভিতরে ঢুকে পড়ে জনাপাঁচেক দুষ্কৃতী। তিন দুষ্কৃতী কর্মচারীদের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে রাখে। দু’জন লুঠপাট চালাতে থাকে। কর্মচারীরা যে সব সোনার গয়না তৈরি করছিলেন সেগুলি কেড়ে নিয়ে থলিতে ভরতে থাকে তারা। দুষ্কৃতীরা লোহার সিন্দুকের তালাও খুলে ফেলে। সিন্দুকের চাবি কারখানার মালিকের কাছে থাকলেও তিনি বলেন, “সিন্দুকের তালা খুলতে দুষ্কৃতীরা নকল চাবি ব্যবহার করেছিল বলে আমার অনুমান।” সিন্দুকের ভিতর থেকেও তারা প্রচুর সোনার গয়না নিয়ে নেয় বলে তাঁর দাবি।
ডাকাতির পরে তারা কারখানার বাইরে এসে মোটর বাইক এবং গাড়িতে উঠে পড়ে। যাওয়ার আগে তারা দু’তিনটি বোমা ফাটায়। বোমার শব্দে স্থানীয় মানুষ দলে দলে হাজির হন। গাড়িতে করে কয়েক জন দুষ্কৃতী চম্পট দিলেও মোটর বাইকে চড়ে তিন জন পালিয়ে যাওয়ার সময়ে এক জন পড়ে যায়। তাকেই ধরে শুরু হয় মারধর। লুঠের জিনিসপত্র অবশ্য কিছু মেলেনি ওই দুষ্কৃতীর কাছ থেকে।
খবর পেয়ে দ্রুত দোকানে আসেন সমীরবাবু। তাঁর বাড়ি উত্তর ঝাপড়দহ গ্রামেই। মুম্বইয়ে তিনি গয়না তৈরির কাজ করতেন। বছর চারেক হল নিজের গ্রামে ফিরে কারখানা গড়েছেন। তাঁর কথায়, “আমার সর্বনাশ হয়ে গেল।” ঘটনার তদন্ত করতে জেলার পদস্থ পুলিশ কর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। জেলার পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দুষ্কৃতীরা মোটর বাইক এবং একটি গাড়িতে করে এসেছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গাড়িতে দু’জন মহিলা বসেছিলেন এবং গাড়িটিতে প্রেস স্টিকার লাগানো ছিল। সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” সিন্দুকের নকল চাবি তৈরি হলে খুঁটিনাটি কিছু বিষয় জানা দরকার। দুষ্কৃতীরা ওই সব সব তথ্য পেল কোথা থেকে, এ ব্যাপারটি আশ্চর্য ঠেকেছে পুলিশের কাছে। |