হকারমুক্তই রইল হাওড়ার বঙ্কিম সেতু
‘অন্যায়ের’ বিরুদ্ধে দৃঢ় বার্তা সরকারের
সাধারণ মানুষের অসুবিধা হয়, এমন কোনও দাবি আদায়ের চেষ্টা হলে তা যে কোনও মতেই বরদাস্ত করা হবে না, বুঝিয়ে দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বঙ্কিম সেতুতে বসতে দেওয়ার দাবিতে যে হকারেরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধর্না দিচ্ছিলেন, মঙ্গলবার তাঁদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হল, সাধারণ মানুষের অসুবিধা করে এমন কোনও কাজই মেনে নেবে না সরকার। এ দিন হকার প্রতিনিধিদের বৈঠকে ডেকে মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা জানিয়ে দেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী। বলা হয়, বঙ্কিম সেতু দখল করে যাঁরা বসতেন, তাঁরা মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ী নন। যদিও তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে।
যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে গত সপ্তাহে হাওড়ার বঙ্কিম সেতু জুড়ে বসা হকারদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। প্রতিবাদ জানাতে সে দিনই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে স্মারকলিপি দেন ওই হকারেরা। মমতার নির্দেশে গত সপ্তাহেই তাঁদের পুনর্বাসন নিয়ে হাওড়ায় বৈঠক করে জেলা প্রশাসন। বৈঠকে প্রশাসনের দেওয়া বিকল্প জায়গার প্রস্তাব পছন্দ না হওয়ায় হকারেরা বেঁকে বসেন। ভেস্তে যায় বৈঠক। এ দিনও হকারেরা ফের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধর্না দিয়ে দাবি আদায়ের চেষ্টা করলে মহাকরণে বৈঠকে ডাকা হয় তাঁদের। বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু ও কৃষি বিপণনমন্ত্রী তথা মধ্য হাওড়ার বিধায়ক অরূপ রায়।
পুলিশের কড়া পাহারা। ফিরতে পারলেন না সেতু আটকানো
হকারেরা। মঙ্গলবার, মঙ্গলাহাটের দিন। —নিজস্ব চিত্র
এ দিন ছিল মঙ্গলাহাট। হাটের এলাকার বাইরে বঙ্কিম সেতু দখল করে হকারদের বসা আটকাতে সোমবার রাত থেকে সেতুর উপরে-নীচে মোতায়েন করা হয়েছিল বিশাল পুলিশবাহিনী। প্রস্তুত রাখা হয়েছিল র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স ও জলকামান। সেতুতে বসতে না পেরে প্রায় হাজার দুয়েক হকার এ দিন ম্যাটাডর-লরিতে চেপে কালীঘাটে চলে যান। ‘মঙ্গলাহাট বাঁচাও কমিটি’ লেখা পোস্টার নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে কালীঘাট ব্রিজে জড়ো হন তাঁরা। আচমকা ওই জমায়েতে বেশ কিছুক্ষণ যানচলাচল ব্যাহত হয়। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। পুলিশকে হকারেরা বলেন, তাঁদের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দিতে হবে। তাঁরা দাবিতে অনড় থাকায় পদস্থ পুলিশ অফিসারেরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কার্যালয়ে বিষয়টি জানান। পরে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের কর্তব্যরত অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি ঘটনাস্থলে গিয়ে হকার প্রতিনিধিদের জানান, এ দিনই মহাকরণে হকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন দুই মন্ত্রী পুর্ণেন্দু বসু ও অরূপ রায়। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের আধিকারিকের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে ফিরে যান ওই হকারেরা।
দুপুরে মহাকরণে ওই বৈঠকের পরে অরূপবাবু বলেন, “ওঁদের জানিয়ে দিয়েছি, কোনও সেতুর উপরে এ ভাবে দোকান বসতে দেব না। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত।” তিনি জানান, একাধিক বার ওই সেতু থেকে বাস পড়ে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, সেতুতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে।
হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “বঙ্কিম সেতুর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুতে যানজট এড়াতে ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে সেতুর উপরে হকারদের বসতে দেওয়া যাবে না। উচ্ছেদ হওয়া হকারদের কোথায় বসতে দেওয়া হবে বা সেতুর নীচের হকারদের উচ্ছেদ করা হবে কি না, তা রাজ্য সরকারের বিবেচনার বিষয়।” হকারদের পুর্নবাসনের বিষয়ে অরূপবাবু বলেন, “দুটো বিকল্প জায়গার কথা ওই হকারদের বলা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো ওঁদের পছন্দ হয়নি।”
এ দিকে, বিভিন্ন ঘটনা কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বারবার বিক্ষোভ-মিছিল চলে যাওয়ার প্রবণতা দেখে উদ্বিগ্ন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। বিষয়টি আর ছোট করে দেখতে রাজি নন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কঠোর করার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন তাঁরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.