কোথাও আঙ্করভাটের মন্দির। কোথাও আবার ভূমিকম্প বিধ্বস্ত সিকিমের চিত্র। কোনও কোনও পুজো কমিটি বালুশিল্পে ভরসা করেই বাজিমাত করতে চাইছে। শিল্পাঞ্চলের বিগ বাজেটের পুজোর পাশাপাশি গ্রাম এলাকার প্রাচীন সাবেকি পারিবারিক পুজোগুলিও আপন গড়িমা বজায় রাখতে মরিয়া।
সি টি সেন্টারের সি টি অ্যাথলেটিক ক্লাব পুজো এ বার ৩৬ বছরে পড়ল। কাল্পনিক মন্দিরের আদলে এ বার তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। ভিতরে পৌরাণিক কিছু চিত্রকল্প ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পুজো কমিটির সম্পাদক বাপ্পাদিত্য অধিকারী জানান, অন্য বারের মতো পুজো উপলক্ষে এ বারও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
সি জোন সর্বজনীন পুজো কমিটি এ বার মণ্ডপ গড়েছে আঙ্করভাটের মন্দিরের আদলে। পুজো কমিটির সম্পাদক ইন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, ৩০ বছরে পা দিল তাঁদের পুজো। বাঁকুড়ার শিল্পীরা এই মণ্ডপ তৈরি করেছেন মাসখানেক ধরে। মণ্ডপের সঙ্গে মানানসই আলোকসজ্জ্বাও রয়েছে।
শিবাজি রোড বটতলা শ্যামাপুজো কমিটির মণ্ডপেও এ বার ওড়িশার মন্দিরের স্থাপত্যশৈলির ছোঁয়া। শিল্পীরা ওড়িশার বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখে এসে মণ্ডপ তৈরি করেছেন। কাজেই দশর্নার্থীরা যে আনন্দ পাবেন সে ব্যাপারে আশাবাদী উদ্যোক্তারা। টেগোর অ্যাভিনিউ (পশ্চিম) শ্যামাপুজো কমিটি এ বার মণ্ডপ তৈরি হয়েছে আমেরিকার একটি চার্চের আদলে। মেদিনীপুরের শিল্পীরা মণ্ডপটি তৈরি করেছেন।
বেনাচিতির বিদ্যাসাগরপল্লির বুদ্ধ মন্দির রোডে এ বার জাঁকজমকভাবেই পুজো করছে এন ভি এস ক্লাব। এ বার তাদের ৩৫ তম বর্ষ। এ বারের মুখ্য আকর্ষণ বালুশিল্প। শিল্পী সুদর্শন পট্টনায়কের গ্রুপ শিল্পীরা মঙ্গলবার চলে এসেছেন দুর্গাপুরে। বালুশিল্পের মাধ্যমে প্রথম দু’দিন তাঁরা বিভিন্ন দৃশ্যকল্প গড়বেন। পরের দু’দিন উদ্যোক্তারা জীবন্ত মানুষদের দিয়ে বিভিন্ন দৃশ্য তৈরি করে চমক দেবেন বলে জানিয়েছেন পুজো কমিটির সম্পাদক রথীন রায়। ৩৪ বছর ধরে পুজো হচ্ছে ভিড়িঙ্গির মিলন সঙ্ঘে। মণ্ডপ তৈরি হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার মন্দিরের আদলে। তিন দিন সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সিকিমের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত ছবি তুলে ধরেছে ডিপিএল গোলপার্ক স্পোর্টিং ক্লাব। এ বছর তাদের পুজো ১৯ বছরে পা দিল। বছরভর বিভিন্ন ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে ক্লাবটি। পাশাপাশি সাফল্যের সঙ্গে শ্যামাপুজোর আয়োজন করে এলাকায় আলাদা পরিচিতি পেয়েছে ক্লাবটি। বীরভানপুরেও বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কালীপুজো হয়। এখানে কোথাও দেবীর দশ মাথা-দশ হাত, কোথাও দেবীর ছিন্নমস্তা রূপ। কোথাও আবার দেবীর উচ্চতাই আলোচনার বিষয়। আবার কোথাও দেবীর মূর্তি গড়া হয়েছে কালীঘাটের মায়ের আদলে। বিধাননগরের স্টিল পার্ক সংলগ্ন সংহতি সঙ্ঘ প্রথম বড় বাজেটের পুজো করছে। মেদিনীপুরের শিল্পীরা মণ্ডপটি তৈরি করেছেন একটি কাল্পনিক মন্দিরের আদলে। এ বার এই পুজোর পঞ্চম বর্ষ।
পিছিয়ে নেই পারিবারিক পুজোগুলিও। কাঁকসায় একাধিক প্রাচীন পারিবারিক পুজো রয়েছে। তিনশো বছর ধরে স্থানীয় সিলামপুরে শ্যামাপুজো চট্টোপাধ্যায়, বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখোপাধ্যায় পরিবারে পুজো হয়। প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই তিন পরিবার একত্রে পুজো আয়োজনের দায়িত্ব পালন করে আসছে। ৪৩ বছর ধরে পানাগড় গ্রামের শ্মশানকালী পুজোর আয়োজন হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের পক্ষে কল্যাণীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় জানান, সাবেক রীতি ও উপচারে এই পুজোর আয়োজন করা হয়ে থাকে। |