বিচারাধীন মহিলা বন্দির আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় মহিলা প্রহরীদের দিকে অভিযোগ আঙুল উঠল। রবিবার রাত ১১টা নাগাদ গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ওই মহিলা বিচারাধীন বন্দি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ঘটনাটি নজরে আসার পরে মহিলা প্রহরীরা তড়িঘড়ি ওই মহিলা বন্দিকে উদ্ধার করেন। জেল কর্তৃপক্ষ রাতেই ওই বন্দিকে মালদহ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারাধীন ওই মহিলা বন্দির নাম সাবিনা বিবি। জাল নোট পাচারের ঘটনায় অভিযুক্ত তিনি। এর আগে হত ১২ সেপ্টেম্বরও তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সেবারও জেল রক্ষীরা টের পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। সোমবার মালদহ জেলা হাসপাতালের মেঝেয় শুয়ে ওই বিচারাধীন বন্দি অভিযোগ করেন, “জেলে আমার উপর অত্যাচার করত মহিলা প্রহরীরা। পুরুষ কয়েদিরা আমাকে লক্ষ্য করে অশ্লীল কথাবার্তা বলত। জেল কর্তৃপক্ষকে জানালে মহিলা প্রহরীরা আরও বেশি করে মারধর করত। মহিলা প্রহরীদের মারধরের হাত থেকে রেহাই পেতে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলাম।” এমন অভিযোগে উদ্বিগ্ন রাজ্যের কারামন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্ত্তী বলেন, “এখনও এ ব্যাপারে কোনও রিপোর্ট পাইনি। খোঁজ নিয়ে দেখছি, কেন ওই মহিলা বিচারাধীন বন্দি আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন। রিপোর্ট পাওয়ার পরেই পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”জেলের ভিতরে মহিলা প্রহরীদের অত্যাচারের অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা সংশোধনাগারের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “জেলের ভিতরে বিচারাধীন বন্দির উপর অত্যাচারের প্রশ্নই ওঠে না। ১২ সেপ্টেম্বর বিচারাধীন বন্দি সাবিনা বিবি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ফের যাতে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করতে না-পারেন সেই জন্য নজরদারি রাখা হয়েছিল। এই নজরদারিকে সম্ভবত ওই মহিলা অত্যাচার বলে মনে করছেন। সময়মতো জেলরক্ষীরা না দেখলে ওই মহিলাকে বাঁচানো যেত না।” মালদহ জেলা সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, জাল নোট পাচারের অভিযোগে ২৭ অগষ্ট পুলিশ সাবিনা ও তাঁর স্বামী হামিদুর রহমানকে গ্রেফতার করে। ২৮ অগষ্ট থেকে সাবিনা বিবি সংশোধনাগারে বন্দি। এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বরও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সাবিনা। সেই সময়ও তিনি প্রহরীদের হাতে ধরা পড়েন। ফের আত্মহত্যা করতে পারেন আশঙ্কায় জেল কর্তৃপক্ষ তার উপরে নজরদারি শুরু করেছিল। তার পরেও রবিবার রাতে তিনি জেল ওয়ার্ডের বাথরুমের কলে ওড়নার পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বাথরুমের বাইরে থেকে ওড়না দেখতে পেয়ে জেল রক্ষীরা ছুটে গিয়ে সাবিনাকে উদ্ধার করেন। ওই মহিলা বিচারাধীন বন্দির দাবি, “২৭ অগষ্ট স্বামী হামিদুর রহমানের সঙ্গে নিমতিতা থেকে খুড়তুতো বোনের বিয়েতে মালদহের মহব্বতপুরে যাচ্ছিলাম। স্বামীর ব্যাগ থেকে বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ এক লক্ষ টাকার জাল নোট উদ্ধার করে। জাল নোটের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। তা সত্ত্বেও পুলিশ জাল নোট পাচারের অভিযোগে আমাকেও তুলে আনে। একদিকে মিথ্যে মামলা, অন্যদিকে জেলের ভিতর অত্যাচার অসহ্য হয়ে উঠেছে।” জেলার পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।” |