রঘুনাথপুর ২ ব্লক
মিড-ডে মিল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত প্রধান শিক্ষকদের
র আগে তাঁরা মিড-ডে মিল পরিচালনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন। এ বার স্কুলে মিড-ডে মিল বন্ধ করে দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিলেন রঘুনাথপুর ২ ব্লকের ৯৮টি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা। সম্প্রতি তাঁরা এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন ব্লক প্রশাসনকে। গণস্বাক্ষর করে ওই সব স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকেরা বিডিও-কে লিখিত আবেদনে জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ১ নভেম্বর থেকে তাঁরা স্কুলে মিড-ডে মিল বন্ধ করবেন।
মিড-ডে মিল পরিচালনার ‘সামগ্রিক দায়িত্ব’ তাঁদের উপরেই থাকায় স্কুলের পড়াশোনার দিকটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেমূলত এই যুক্তি দেখিয়েই দুপুরের রান্না করা খাবারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন ওই ৯৮টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা। গত ২৩ সেপ্টেম্বর ব্লক প্রশাসনকে এই মর্মে তাঁরা স্মারকলিপিও দেন। তার এক মাসের মধ্যে প্রধান শিক্ষকেরা প্রশাসনকে জানিয়ে দিলেন, স্মারকলিপি পাওয়ার পরেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করেনি। তাই তাঁরা মিড-ডে মিল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বস্তুত, স্কুলগুলিতে দুপুরের রান্না করার জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠী থাকলেও সামগ্রিক পরিচালনার দায়িত্ব রয়েছে প্রধান শিক্ষকদের হাতেই। মিড-ডে মিলের জন্য বরাদ্দ অর্থ খরচ করা, টাকা ও চালের হিসাব রাখা, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রশাসনের কাছে সেই হিসাব পেশ করা-সহ সমস্ত বিষয় দেখভাল করেন প্রধান শিক্ষকেরা। রঘুনাথপুর ২ ব্লকের হদলা প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুভাষ রায় বলেন, “স্কুলগুলিতে ছাত্র সংখ্যার অনুপাতে শিক্ষকের সংখ্যা কম। আবার কিছু স্কুলে এক জনই মাত্র শিক্ষক রয়েছেন। তাঁর পক্ষে মিড-ডে মিলের তদারকি করতে গিয়ে পড়ুয়াদের পড়াশোনার দিকে ঠিকমতো মন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।”
প্রধান শিক্ষকেরা এই যুক্তি দিলেও বাস্তব তথ্য বলছে, মিড-ডে মিল চালু হওয়ার পর থেকে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পড়ুয়া সংখ্যা বেড়েছে। ফলে এ ভাবে এতগুলি স্কুলে মিড-ডে মিল বন্ধ করে দিলে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুলমুখী করার উদ্দেশ্যটাই ব্যাহত হতে পারে বলে প্রশাসন মনে করছে। এই প্রেক্ষিতে ব্লকের প্রাথমিক স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের দাবি, মিড-ডে মিলের সামগ্রিক দায়িত্ব স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও সংশ্লিষ্ট গ্রামশিক্ষা কমিটির হাতে তুলে দেওয়ার বিকল্প প্রস্তাব তাঁরা প্রশাসনকে দিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষকদের আরও যুক্তি, মিড-ডে মিল নিয়ে বহু ক্ষেত্রেই অভিভাবকদের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ‘নষ্ট’ হচ্ছে। জোরাডি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রহ্লাদ মেহেতার কথায়, “সময়মতো চাল বা টাকা না পাওয়া-সহ বিভিন্ন কারণে স্কুলে মিড-ডে মিল রান্নায় সমস্যা হলে অভিভাবক ও গ্রামবাসীদের হাতে আমাদেরই হেনস্থা হতে হচ্ছে। ফলে অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষকদের যে সুস্থ সম্পর্ক পড়াশোনার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য থাকা দরকার, তা নষ্ট হচ্ছে।” তবে এ ব্যাপারে ব্লক প্রশাসনের কার্যত করণীয় কিছু নেই বলে জানিয়েছেন বিডিও (রঘুনাথপুর ২) উৎপল ঘোষের বক্তব্য, “জেলায় যে নিয়ম ও পদ্ধতিতে মিড-ডে মিল চলছে, তার ব্যতিক্রম ঘটানো কেবল একটা ব্লক এলাকায় করা সম্ভব নয়। শিক্ষকদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি। পরবর্তী নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.