রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আগামী কাল তার ঋণনীতিতে আরও এক দফা সুদ বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে।
ষাণ্মাসিক ঋণনীতির প্রাক্কালে সোমবার প্রকাশিত সমীক্ষায় দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানিয়ে দিয়েছে, মূল্যবৃদ্ধির উপরে রাশ টানা সম্ভব হয়নি এবং তা আরও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও যথেষ্ট। সেই কারণেই আর্থিক বৃদ্ধির উপর চড়া সুদের প্রভাব সত্ত্বেও তুল্যমূল্য বিচারে তারা সম্ভবত সুদ বাড়ানোর পথেই হাঁটবে। সে ক্ষেত্রে এটা হবে ২০১০ সালের মার্চ থেকে ধরে ১৩ দফা সুদ বৃদ্ধি। তবে রির্জাভ ব্যাঙ্কের সুদ বৃদ্ধির পূর্বাভাস সত্ত্বেও সোমবার চাঙ্গাই ছিল শেয়ার বাজার। কারণ, এই সুদ বৃদ্ধি প্রত্যাশিত বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বরে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৯.৭২ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি গত ৮ অক্টোবর শেষ হওয়া সপ্তাহে সাড়ে ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়ে পৌঁছেছে ১০.৬ শতাংশে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই পরিপ্রেক্ষিতে এ দিনের সমীক্ষায় জানিয়েছে, “মূল্যবৃদ্ধির চ্যালেঞ্জ এখনও পূর্ণমাত্রায় রয়েছে।”
শীর্ষ ব্যাঙ্ক তার সোমবারের সমীক্ষায় আর যে-সব পূর্বাভাস দিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে:
• আর্থিক বৃদ্ধির হার আগেকার হিসাব ৮ শতাংশের চেয়েও নীচে নেমে যেতে পারে
• মূল্যবৃদ্ধির চাপ থাকবে দু’মাস
• রাজকোষ ঘাটতি জাতীয় আয়ের ৪.৬ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে যাবে
• চড়া সুদের প্রভাবে লগ্নি কমবে
• রফতানির উপর বিশ্ব-মন্দার প্রভাব পড়বে
• বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় -দের কাছ থেকে আসা বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণও কমবে
• ৪০ হাজার কোটি টাকার বিলগ্নিকরণ লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া যাবে না
• কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে
গত বৃহস্পতি এবং শুক্রবারের পতনের পর এ দিন বাজার বন্ধের সময়ে সেনসেক্স ১৫৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ১৬,৯৩৯.২৮ অঙ্কে। তবে এক সময়ে সেনসেক্স ৩০০ পয়েন্ট বেড়ে গেলেও বাজার সেই উত্থান ধরে রাখতে পারেনি। তার অন্যতম কারণ মুনাফা ঘরে তোলার তাগিদে শেয়ার বিক্রির চাপ। তবে দ্বিতীয় কারণটি হল, ব্লু চিপ শেয়ারের বাইরে সাধারণ শেয়ারের দাম তেমন বাড়েনি।
সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি ৫ থেকে ৬ শতাংশে নেমে এলে তবেই তা স্বস্তিজনক অবস্থায় আসবে বলে মনে করছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এই কারণেই সুদ বাড়ানোর রাস্তাই তারা বেছে নিতে চলেছে বলে ইঙ্গিত। তবে বিশ্ব বাজারের অনিশ্চয়তা এবং ক্রমশ কমে আসা শিল্প বৃদ্ধির হারের কারণেই আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। |