বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন এক প্রসূতির প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় দ্রুত দু-প্যাকেট রক্ত দেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন চিকিৎসক। স্ত্রীকে বাঁচাতে দু-প্যাকেট রক্তের জন্য শুক্রবার সন্ধ্যায় মালদহ সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ছুটে গিয়েছিলেন রতুয়ার নুর আলম। কিন্তু, ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘সন্ধ্যা ৬টা বেজে গিয়েছে এখন রক্ত দেওয়া যাবে না।’ বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে চড়া দামে রক্ত কিনতে হয়েছে নুর আলমকে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন কুমার ঝরিয়াত বলেন, “ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত পাবে না এটা হতে পারে না। একটু অপেক্ষা করলেই হয়ত রক্ত পেয়ে যেতেন।” কিন্তু মালদহ সদর হাসপালের সুপার হিমাদ্রি আড়ির গলায় অন্য সুর, “যখন খুশী রক্ত নিতে ব্লাড ব্যাঙ্কে গেলেই রক্ত পাওয়া যাবে না। নার্সিং হোমগুলিকে স্পষ্ট বলা আছে দুপুর ২ টোর মধ্যে রক্ত নিতে হবে। অথচ নার্সিংহোমগুলি রাতবিরেতে রক্ত চেয়ে পাঠাচ্ছে। তা ছাড়া যে রোগীর জন্য এ দিন রাতে রক্ত চাওয়া হয়েছিল তাঁর হিমোগ্লোবিন ৮.৭। থ্যালাসেমিয়া কিংবা যাদের রক্তে হিমোগ্লোবিন ৪-৫ তাঁদের আগে রক্ত দেওয়া দরকার।”
মালদহ সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক রাধারমণ সামন্ত বলেন, “বতর্মানে ব্লাড ব্যাঙ্কে বি পজিটিভ রক্তের সঙ্কট চলছে। এখন মাত্র ২ প্যাকেট বি-পজিটিভ রক্ত ব্লাড ব্যাঙ্কে পড়ে রয়েছে। যা হাসপাতালের জরুরি রোগীদের জন্য রাখা হয়েছে। সেই কারণে শুক্রবার বি পজিটিভ রক্ত দেওয়া সম্ভব হয়নি।” এ দিকে যে চিকিৎসক প্রসূতিকে বাঁচাতে দুই প্যাকেট রক্ত আনার জন্য রোগীর স্বামীকে ব্লাড ব্যাঙ্কে পাঠিয়েছিলেন সেই দ্বিজেন সরকার বলেন, “প্রসবের পর প্রচন্ড রক্তক্ষরণের জন্য আমি দু-বোতল রক্ত দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে রক্ত পাওয়া যায় নি।”
জেলা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুর ৩টা নাগাদ রতুয়ার দেবীপুরের নুর আলম তাঁর স্ত্রী সাহেমা বিবিকে মালদহ শহরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করেছিলেন। ভর্তি করার কিছুক্ষণ পরই সাহেমা বিবি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। প্রসবের পরই সাদেমা বিবির প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ শুরু হতেই চিকিৎসক তাঁকে দুই প্যাকেট রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দেয়। চিকিৎসক জানিয়ে দেন, রক্ত না দিলে রোগীকে বাঁচানো যাবে না। এরপর স্ত্রীকে বাঁচাতে নুর আলম ছুটে যান মালদহ হালপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্কে। |