নাম না করে তৃণমূলের দিকে আঙুল প্রদীপের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাকদ্বীপ |
দলীয় কর্মীদের উপরে অত্যাচার, মারধর, বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় নাম না করে তৃণমূলের দিকে আঙুল তুললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। ‘পরিস্থিতি’ মোকাবিলায় কংগ্রেস কর্মীদের প্রতি প্রদেশ সভাপতির পরামর্শ, “গ্রামে গ্রামে অত্যাচার হলে, আপনারা সংগঠিত হয়ে রুখে দাঁড়ান।”
শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে দলীয় জেলা পঞ্চায়েতি-রাজ সম্মেলনে প্রদীপবাবু বলেন, “সিপিএমের ৩৪ বছরের ক্ষমতার অবসান আমরাও চেয়েছিলাম। তাই জোট করে লড়াই করে সিপিএমকে পরাজিত করতে পেরেছি। পরিবর্তন হল। কিন্তু এখনও আমাদের কর্মীদের মারধর, দোকান-বাড়ি ভাঙচুর, মহিলাদের উপরে অত্যাচার চলেছে। এই পরিবর্তন আমরা চাইনি।” তবে তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রদীপবাবু বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। বর্ষীয়ান নেতা। উনি এ কথা কেন বললেন, বুঝতে পারছি না। বিধানসভা ভোট পর্যন্ত আমাদের দু’দল সমন্বয় রেখে কাজ করেছে। এখনও তা-ই চলছে। ওঁর এই বক্তব্য আমার কাছে দুর্ভাগ্যজনক।”
প্রদেশ সভাপতির উপস্থিতিতেই স্থানীয় কংগ্রেস নেতারা এ দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে একের পরে এক অভিযোগ জানাতে শুরু করেন। কাকদ্বীপ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সন্তোষ জানার অভিযোগ, “রাজ্যে ক্ষমতায় বদলের পরে মধুসূদনপুর, সূর্যনগর, বাপুজি, শ্রীনগর গ্রামের ১০-১২টি পরিবারকে কংগ্রেস করার অপরাধে গ্রামছাড়া করেছে তৃণমূলের লোকেরা। নানা কারণে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকী, মোটা টাকা জরিমানা না দিলে আমাদের লোকেদের গ্রামে থাকতে দিচ্ছে না তৃণমূল কর্মীরা।” দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কংগ্রেস সভাপতি মানব মিত্রর দাবি, “বিভিন্ন পঞ্চায়েতে আমাদের নির্বাচিত সদস্যেদের সঙ্গে ওরা (তৃণমূল) কোনও সহযোগিতা করছে না। প্রলোভন দেখিয়ে নিজেদের দলে টানার চেষ্টা করছে। ওদের কথা মতো না চললে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে।” সন্তোষবাবু জানান, এই ‘পরিস্থিতি’তে পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব একক ভাবে লড়তে চান। সে কথা প্রদেশ নেতৃত্বকে জানানোও হয়েছে।
প্রদীপবাবুও এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছেন, এখন থেকেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য দলকে তৈরি করতে চাইছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রদেশ সভাপতির কথায়, “আপনারা গ্রামে গিয়ে দেখুন, কেন্দ্রীয় সরকারের ১০০ দিন কাজের প্রকল্প ছাড়া অন্য প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে কি না। যদি না হয়ে থাকে, তবে ব্লকে গিয়ে স্মারকলিপি দিন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই তৈরি হন।” এ দিনের সম্মেলনে ২৯টি ব্লকের কংগ্রেসের নির্বাচিত জন-প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। |