সম্মেলনে ভোটাভুটি চান না জেলা নেতারা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ঐক্যবদ্ধ ভাবে ক্ষমতাসীন তৃণমূলের মোকাবিলা করতে দলীয় সম্মেলনে ভোটাভুটি এড়ানোর পরামর্শ দিলেন সিপিএমের জেলা নেতারা। শনিবার সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির বৈঠক ছিল। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। সেখানেই জেলা নেতারা ভোটাভুটি এড়ানোর কথা বলেন। আজ, রবিবার বৈঠক শেষ হবে।
বিমানবাবুর সামনে জেলা নেতারা বলেন, যে ভাবে সিপিএমের কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন, কৃষকদের জমি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে, তাতে লোকাল-জোনাল-জেলা কোনও স্তরেই কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ভোটাভুটি হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। সবাই মিলে বসে আলোচনা করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে কমিটি গড়তে হবে। ইতিমধ্যেই আলিমুদ্দিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ বার শাখা সম্মেলন হবে না। শাখার প্রতিনিধিরা লোকাল সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন।
আজ, রবিবার বিমানবাবু তাঁর জবাবি বক্তৃতা করবেন। তখনই তিনি তাঁর মত জানাবেন। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, “এ বার কমিটি গঠনের জন্য কোনও স্তরেই যে ভোটাভুটি ঠিক হবে না, সকলেই তা বুঝছেন। আশা করি, আলিমুদ্দিনও এ ব্যাপারে সায় দেবে।” উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্মেলন হবে জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। গত সম্মেলনের সময়েও প্রয়াত সুভাষ চক্রবর্তী এবং জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য অমিতাভ নন্দীর গোষ্ঠীর মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ভোটাভুটি করে কমিটি গঠন হয়েছিল। বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পরে সিপিএম এতটাই ‘কোণঠাসা’ যে নিজেদের বাঁচাতেই নেতা-কর্মীরা ব্যস্ত। কিন্তু সম্মেলনকে কেন্দ্র করে যাতে নতুন করে গোষ্ঠী রাজনীতি মাথাচাড়া না-দেয়, তার জন্যই জেলা নেতারা ভোটাভুটি এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
জেলা নেতাদের আরও বক্তব্য, উত্তর ২৪ পরগনায় জেলা পরিষদ বামেদের হাতে থাকা সত্ত্বেও রাজ্য প্রশাসন কোনও ভাবেই তাদের গুরুত্ব দিচ্ছে না। চলতি সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারাসতে এসে উন্নয়নের জন্য বৈঠক করলেও জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে ডাকেননি। অথচ, আলিপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বৈঠকে জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কারণ, ওই জেলা পরিষদ তৃণমূলের দখলে। বিষয়টি জেলার মানুষের কাছে প্রচার করা উচিত বলে মনে করেন সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নেতারা। তাঁদের আরও বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী যে ‘দলতন্ত্র’ কায়েম করতে চান, মানুষকে সে কথা বলতে হবে। |