নভেম্বরে আইন অমান্যের ধুম বামেদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আগামী নভেম্বর মাস বামেদের দৌলতে রাজ্য জুড়ে আইন অমান্যের মাস হতে চলেছে! কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকে এক দিন দেশব্যাপী ‘জেল ভরো’ কর্মসূচির মধ্যে এই রাজ্যই পড়বে। তার পরে বামফ্রন্ট জেলায় জেলায় আইন অমান্য করে এক দিন কলকাতায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করবে।
মাঝে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের এক দিন ১৪টি জেলায় এবং আর এক দিন কলকাতা-সহ পার্শ্ববর্তী ৫টি জেলায় ‘জেল ভরো’র কর্মসূচি রয়েছে। আইন অমান্যের সেই ধারায় সামিল হচ্ছে চারটি বামপন্থী কৃষক সংগঠনও। জেলা ও মহকুমা স্তরে আইন অমান্য করে তারা ২৯ নভেম্বর বামফ্রন্টের কেন্দ্রীয় আইন অমান্যে অংশ নেবে।
সারের দাম কমানো এবং কালোবাজারি বন্ধ করা, লাভজনক দরে সরকারের পাট ও ধান কেনা, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে যথাযথ কর্মসংস্থান-সহ একগুচ্ছ দাবিতে এবং পঞ্চায়েতের কাজে হস্তক্ষেপ-সহ বেশ কিছু প্রতিবাদের কর্মসূচি নিয়ে ২২ থেকে ২৫ নভেম্বর জেলা ও মহকুমা স্তরে আইন অমান্য আন্দোলন করবে বামফ্রন্টের চারটি কৃষক সংগঠন। তার আগে ১ থেকে ১৭ নভেম্বর রাজ্য জুড়ে প্রচার চলবে। জেলা স্তরে তাদের আইন অমান্য জেলা বামফ্রন্টের কর্মসূচির সঙ্গে একই দিনে পড়লে কর্মসূচিও মিলে যাবে। সিপিএমের কৃষক সভার রাজ্য সভাপতি মদন ঘোষ বৃহস্পতিবার বলেছেন, “কৃষকদের জন্য এই সরকার কয়েক মাসে সদর্থক কোনও ভূমিকা পালন করেনি। তাই আন্দোলনের পথে নামা ছাড়া বিকল্প নেই।” সিপিআইয়ের কৃষক সভার নেতা প্রবোধ পণ্ডার বক্তব্য, “১০০ দিনের প্রকল্পে এই রাজ্যে এখন গড়ে মাত্র ৮ থেকে ১৬ দিন কাজ দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার যে নীতিতে চলে, রাজ্য সরকার তা মানতে চাইছে না। সেই বিতর্কের জন্য প্রকল্পের কাজ ব্যাহত হচ্ছে।”
বাম কৃষক নেতাদের বক্তব্য, সাধারণ ধানের সংগ্রহমূল্য কেন্দ্রীয় সরকার ক্যুইন্টাল প্রতি ১০৮০ টাকা এবং ‘গ্রেড এ’-র জন্য ১১১০ টাকা বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য খাদ্য দফতর সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, তারা ওই দামের উপরে কোনও বোনাস দেবে না। ধান সংগ্রহের পদ্ধতি এবং পরিকাঠামো কী হবে, তা নিয়েও রাজ্য সরকার নীরব। এই ভাবে চললে ধান কাটার মরসুমে অভাবি বিক্রি শুরু করতে হবে বলে বাম নেতাদের আশঙ্কা। পাশাপাশিই মদনবাবুর অভিযোগ, “মুখ্যমন্ত্রী জেলাশাসক, মহকুমাশাসক এবং বিডিও-দের প্রধান ভূমিকা পালন করতে বলছেন। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ভূমিকা অস্বীকার করতে চাইছে রাজ্য সরকার। নির্বাচিত পঞ্চায়েতের একটা অংশকে বলা হচ্ছে দলত্যাগ করতে, একটা অংশকে বলা হচ্ছে পদত্যাগ করতে। অন্য একটা অংশকে বলা হচ্ছে, তাদের (তৃণমূল) কথামতো কাজ করতে!” এই সার্বিক ‘আক্রমণে’র প্রতিবাদেই আইন অমান্যের কর্মসূচি নিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি। |