বৃত্তিশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির হাল বুঝতে শীঘ্রই তদন্ত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যের বৃত্তিশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। প্রতিষ্ঠানগুলিতে আর্থিক তছরুপ থেকে নিয়মিত ক্লাস না হওয়ার অভিযোগ তো রয়েছেই। কোনও কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবার পঠন-পাঠনের পরিকাঠামো না থাকা সত্ত্বেও ছাত্র ভর্তি করা হয়েছে ফি বছর। এই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই এ বার প্রতিটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সরেজমিনে তদন্ত শুরু করতে চলেছে রাজ্যের নতুন সরকার।
সিদ্ধান্ত হয়েছে, নভেম্বর থেকে আগামী তিন মাস রাজ্যের প্রতিটি জেলা ঘুরে তদন্ত শুরু করতে চলেছেন ৩৬ জন ইন্সপেক্টর। কারিগরি শিক্ষা দফতর চুক্তির ভিত্তিতে ওই ইন্সপেক্টরদের নিযুক্ত করছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক পরিস্থিতি, পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা, অভ্যন্তরীণ পরিকাঠামো ইত্যাদি খতিয়ে দেখে তাঁরা সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দেবেন।
শনিবার এক অনুষ্ঠানে রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রধানশিক্ষক টাকা আত্মসাৎ করেছেন, কোথাও আবার পঠনপাঠনই ঠিকমতো হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাচ্ছি। তাই বৃত্তিশিক্ষার সবক’টি প্রতিষ্ঠানের বাস্তব অবস্থা বুঝতে শীঘ্রই তদন্ত শুরু হবে।’’
দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যের প্রায় ৩ হাজার ৫৭০টি বৃত্তিশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনও নজরদারি চালানো হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। আর তার জেরেই রাজ্যে বৃত্তিশিক্ষা মানের চূড়ান্ত অবনমন ঘটেছে বলে মনে করছেন শিক্ষক মহলের একাংশ। মন্ত্রী বলেন, “কী অবস্থায় এই প্রতিষ্ঠানগুলি চলছে, তার কোনও সুস্পষ্ট রিপোর্ট দফতরের কাছে নেই। তদন্তকারী ইন্সপেক্টররা যে রিপোর্ট জমা দেবেন, তা খতিয়ে দেখার পর অভিযুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির অনুমোদন বাতিল বা আর্থিক অনুদানও বন্ধ করা হতে পারে।”
ইতিমধ্যেই কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কারিগরি শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে সেই অভিযোগই সার। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলে মন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, মাত্র তিন মাসে ৩৬ জন ইন্সপেক্টরের পক্ষে রাজ্যের ৩ হাজার ৫৭০টি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সঠিক ভাবে সব কিছু খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি সম্ভব কি না। কারিগরি শিক্ষা বিভাগের সচিব মনোজ অগ্রবালের দাবি, “দিনে দু’টি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেলেই মাসে এক-এক জন ইন্সপেক্টর ন্যূনতম ৫০টি করে স্কুল ঘুরে দেখতে পারবেন। ৩৬ জনের পক্ষে ৩ মাসে সবকটি প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখে রিপোর্ট দিতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।” তবে আংশিক সময়ের ইন্সপেক্টর দিয়ে তদন্তের কাজটি যথাযথ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকেই। |