একেই বলে, রাখে হরি মারে কে?
বয়স মাত্র মাস পাঁচেক। রাতভর ঝড়বৃষ্টির মধ্যে রেললাইনে পাথরকুচির উপরে পড়ে ছিল ফুটফুটে শিশুটি। তার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে অন্তত চারটি ট্রেন। কপাল জোরে তার কোনও ক্ষতি হয়নি। সুস্থ সবল শিশুটিকে সকালবেলায় ঘুমন্ত অবস্থায় রেললাইনের মাঝে দেখে চমকে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থল গোলাঘাট জেলার তিরুয়াল।
আজ সকালে ফারকাটিং থানার পুলিশ শিশুটিকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। পুলিশের সন্দেহ, গভীর রাতে শিশুটিকে কেউ লাইনে শুইয়ে রেখে গিয়েছিল। তার মাথার তলায় বালিশও রাখা ছিল। প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে শিশুটির কান্না শুনতে পাননি আশপাশের বাসিন্দারা। আজ ভোরে স্থানীয় দুই বাসিন্দা অরুণ ও সঈফুদ্দিন শিশুটিকে দেখতে পেয়ে গোলাঘাট সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে গ্রামপ্রধান শিশুটির বিষয়ে জানতে পারেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
|
এ ভাবেই পড়েছিল শিশুটি। ছবি: উজ্জ্বল দেব |
পুলিশের জিম্মায় থাকা শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য গ্রামপ্রধানের কাছে ইতিমধ্যেই আবেদন জানিয়েছেন সঈফুদ্দিন। দুই কন্যাসন্তানের জনক সঈফুদ্দিনের সাধ ছিল একটি পুত্রসন্তানের। পরিত্যক্ত এই শিশুটি ঘটনাচক্রে ছেলে। তাই এই শিশুপুত্রকে আল্লার পাঠানো উপহার বলেই মনে করছেন তিনি।
দুধের শিশুকে এমন অমানবিকভাবে কে বা কারা রেললাইনে, মাথায় বালিশ দিয়ে শুইয়ে রেখে গেল তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। চারটি ট্রেন শিশুটির উপর দিয়ে চলে যাওয়া সত্ত্বেও যে ভাবে প্রায় অক্ষত রয়েছে শিশুটি, তাতে বিস্মিত পুলিশ ও রেলকর্মীরাও। তাঁদের চোখেও ব্যাপারটি ‘অলৌকিক’ বলে মনে হয়েছে। কারণ চিৎ হয়ে একভাবে শুয়ে না থেকে, পাশ ফিরে লাইনে পড়লেই টুকরো টুকরো হয়ে যেত শিশুটি।
আজ সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তার শরীরে বাইরের দিকে কোনও ক্ষত নেই। সে সুস্থই রয়েছে। |