বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের সাঁওতালডিহি কেন্দ্রের দু’টি ইউনিটই অচল হয়ে পড়েছে। তাতে অবশ্য বিদ্যুৎ কর্তারা ততটা উদ্বিগ্ন নন। কারণ, আবহাওয়ার কল্যাণে রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা কমেছে। ফলে লোডশেডিং ছিল না বললেই চলে। কর্তারা ভাবছেন, বিদ্যুৎ চাহিদা কম হলে উৎপাদন কম করলেই চলবে। আর এতে কয়লা বাঁচবে। সংস্থার এক মুখপাত্র জানান, কয়লা সংস্থাগুলি টাকা না পেয়ে যে কোনও দিন সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে। তাই কয়লা বাঁচিয়ে রাখায় জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দুশ্চিন্তা বেড়েছে পূর্ব রেলের। এমনিতেই তারা সঙ্কটে। লোকসানের বোঝা কমাতে টিকিটের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন সত্ত্বেও রাজনৈতিক কারণে তারা তা পারছে না। তার উপরে কয়লা পরিবহণ কমে যাওয়ায় আয়ও কমে গিয়েছে।
এক রেলকর্তা জানান, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর এই ছ’মাসে তাদের সামগ্রিক পণ্য পরিবহণ কমে গেছে। এর এক মাত্র কারণ কয়লা। গত বছরের এই ছ’মাসে কয়লা পরিবহণ হয়েছিল এক কোটি ৭৩ লক্ষ টন। এ বছরের সেটা কমে হয়েছে এক কোটি ৬৭ লক্ষ টন। অথচ লক্ষ্য ছিল, এ বছর কয়লা পরিবহণ হবে এক কোটি ৮৩ লক্ষ টন। বাস্তবে সেই লক্ষ্যের চেয়ে কয়লা পরিবহণ কমেছে ১৬ লক্ষ টন। যদিও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অন্যান্য পণ্যের পরিবহণ বেড়েছে পাঁচ লক্ষ টন। |
রেলের এক কর্তা বলেন, “বন্যার কারণে উৎপাদন কমে যাবার কথা বলছে ইসিএল। কিন্তু সেটাই এক মাত্র কারণ নয়। অর্থ সঙ্কটে জর্জরিত নিগম কয়লা কিনছে কম। সঙ্গে রয়েছে ইসিএল-এর নিজস্ব উৎপাদন সমস্যা।” রেলকর্তাদের বক্তব্য রেল চলে বছরের ৩৬৫ দিনই। কিন্তু কয়লার উৎপাদন পুজোর সময় প্রায় বন্ধই থাকে।
নিগম যতই কয়লা সংস্থাগুলির পাওনা টাকা বকেয়া ফেলে রাখছে, ততই বিভিন্ন কয়লা সংস্থা নিগমের জন্য কয়লার বরাদ্দ কমিয়ে দিচ্ছে। কেবল ইসিএল নয়, নিগমকে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে মহানদী কোলফিল্ডস ও ভারত কোকিং কোলও। এর ফলে আয় কমে যাচ্ছে পূর্ব রেলের। রেলকর্তাদের দাবি, তাঁদের দিক থেকে কয়লা পরিবহণের জন্য আরও ওয়াগন ও রেক বরাদ্দ করতে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু নিগমের অর্থ সঙ্কট বাড়লে কয়লা আসার পরিমাণও কমবে। আর এতে রেলের ক্ষতির
পরিমাণও বাড়বে।
|