গাড়ি চুরি চক্রের দুই পাণ্ডা-সহ ছ’জনকে গ্রেফতার করল কলকাতার গোয়েন্দা পুলিশ। ধৃতদের তিন জন ছত্তীসগঢ়ের দন্তেওয়াড়া থেকে কলকাতায় চোরাই গাড়ি কিনতে এসেছিল। তাদেরও ধরা হয়েছে। উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া নতুন ৩টি গাড়িও। শনিবার পাঁচ জনকে শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। অপর এক জনকে আজ, রবিবার আদালতে হাজির করানো হবে।
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) দময়ন্তী সেন শনিবার জানান, গাড়ি চুরি চক্রের দুই পাণ্ডার নাম দেবাশিস ঘোষ এবং অভিজিৎ কর। দেবাশিসের বাড়ি কলকাতার মহাত্মা গাঁধী রোডে। অভিজিৎ সোদপুরের বাসিন্দা। তাদের সঙ্গে দন্তেওয়াড়ার রঘুনাথ দেওয়াঙ্গি, অশোককুমার মিশ্র এবং উপেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে শুক্রবার গ্রেফতার করা হয় চোরাই গাড়ি কেনার অভিযোগে। দেবাশিসকে জেরা করে এ দিন দুপুরে গার্ডেনরিচের আনিস ওরফে বাবলু নামে এক যুবককেও গ্রেফতার করা হয়।
এই চক্র কী ভাবে গাড়ি চুরি করত?
গোয়েন্দাদের দাবি, অভিজিৎ জানিয়েছে, শহর বা শহরতলির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কোথায় নতুন গাড়ি রাখা থাকে তার তালিকা তৈরি করত সে। এর পরে সে ও দেবাশিস বিহারের কয়েক জন দুষ্কৃতীকে (যারা এখন কলকাতা শহরেই আস্তানা গেড়েছে) ওই সব গাড়ি চুরির বরাত দিত। তারা গাড়ির ‘লক’ ভেঙে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যেত কলকাতা ও লাগোয়া এলাকার কয়েকটি গ্যারাজে। অভিজিৎ চোরাই গাড়ির নকল কাগজপত্র তৈরি করত। দেবাশিসের কাজ ছিল ভিন রাজ্যের দালালদের মাধ্যমে চোরাই গাড়ির খরিদ্দার জোগাড় করা।
গোয়েন্দাদের দাবি, দেবাশিস ও অভিজিৎ মূলত গাড়ি কেনাবেচার দালালি করত। দেবাশিসের একটি গাড়ি আছে। শুক্রবার সকালে গোপন সূত্রে গোয়েন্দারা খবর পান, নিজের গাড়িতে চেপে দেবাশিস সল্টলেকের এক অতিথিশালায় যাবে। সেই অতিথিশালায় ছত্তীসগঢ়ের কয়েক জন চোরাই গাড়ি কেনার জন্য অপেক্ষা করছে বলেও জানতে পারেন গোয়েন্দারা।
দেবাশিস গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোতেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে সঙ্গে নিয়েই সল্টলেকে যান গোয়েন্দারা। সেখান থেকে দন্তেওয়াড়ার ওই তিন ব্যক্তিকে ধরা হয়। দেবাশিসই গোয়েন্দাদের দেখিয়ে দেন, ওই অতিথিশালার কাছে কোথায় দু’টি চোরাই গাড়ি রাখা আছে। ওই গাড়ি দু’টির একটি বেনিয়াপুকুর থানা এলাকা থেকে গত ১৬ অক্টোবর চুরি হয়েছিল। গোয়েন্দাদের দাবি, দন্তেওয়াড়ার বাসিন্দারা জেরায় স্বীকার করেছে, বছর দু’য়েক আগেও তারা দেবাশিসদের থেকে চোরাই গাড়ি কিনে ছত্তীসগঢ়ের বিভিন্ন লোককে বিক্রি করেছে। পুলিশ জানায়, বাবলুর কাছ থেকেও একটি চোরাই গাড়ি মিলেছে। সেই গাড়িটি ভবানীপুর থানা এলাকা থেকে ১৭ অগস্ট চুরি হয়েছিল। |