এলাকার বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য মার্কেট কমল্পেক্স তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিল জেলা পরিষদ। প্রায় দু’মাস আগে তার কাজ শেষ হলেও প্রশাসনিক জটিলতায় তা হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি। রায়গঞ্জ ব্লকের বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ও বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে মার্কেট কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকায় বাস স্ট্যান্ড তৈরিরও পরিকল্পনা নিয়েছিল জেলা পরিষদ। কিন্তু টাকার অভাবে সেই কাজ শুরুই করা যায়নি। এমতাবস্থায় মার্কেট কমপ্লেক্স সংলগ্ন জেলা পরিষদের সরকারি জায়গায় প্রতি দিন বেআইনি ভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকী সন্ধ্যার পর ওই জমিতে স্থানীয় দুষ্কৃতীরা চোলাই মদের কারবার চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। অস্বস্তিতে পড়েছেন উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে এমন অভিযোগ জানিয়ে অবিলম্বে মার্কেট কমপ্লেক্স হস্তান্তর করে সংলগ্ন জমিতে বাসস্ট্যান্ড তৈরির দাবি জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যে। উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের শিল্প ও বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ পূর্ণেন্দু দে বলেন, “প্রশাসনিক জটিলতায় মার্কেট কমপ্লেক্স হস্তান্তর করতে দেরি হচ্ছে। খুব শীঘ্রই কমপ্লেক্সের দোকানঘরগুলি বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মধ্যে বিলি হবে। টাকার অভাবে বাসস্ট্যান্ড তৈরির কাজ শুরু করা যায়নি। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। সরকারি জমিতে অসামাজিক কাজ ও বেআইনি দখল রুখতে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।” পঞ্চায়ে ত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিন্দোল পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন স্বর্নিভর গোষ্ঠীর তৈরি করা নানা সামগ্রী বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করে দিতে ২০১০ সালে জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিলের ১৫ লক্ষ টাকা খরচ করে নিজস্ব ২ বিঘা জায়গায় মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির কাজে নামেন জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। ওই কমপ্লেক্সে ৩২ টি দোকানঘর রয়েছে। প্রায় দু’মাস আগে কমপ্লেক্স তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। বিন্দোল এলাকায় কোনও বাসস্ট্যান্ড না থাকায় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ও বাসিন্দাদের দাবি মেনে ২০১০ সালে মার্কেট কমপ্লেক্স সংলগ্ন জমিতে বাসস্ট্যান্ড তৈরির কথা ঘোষণা করেছিল জেলা পরিষদ। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ও বাসিন্দাদের অভিযোগ ছিল, বিন্দোল এলাকায় কোনও বাসস্ট্যান্ড না থাকায় রায়গঞ্জ-বিন্দোল ও কালিয়াগঞ্জ রুটের বিভিন্ন যাত্রীবাহী গাড়ি ও ট্রাক দিনভর রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে প্রতিদিনই বিন্দোল এলাকায় ব্যাপক যানজট ও ছোটখাটো দুর্ঘটনার জেরে নিত্যযাত্রীরা বিপাকে পড়েন। প্রচন্ড গরমে চড়া রোদে পুড়ে ও বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভিজে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বাসিন্দাদের গাড়িতে ওঠা-নামা করতে হয়। বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা হেমতাবাদ বিধানসভা যুব কংগ্রেস কমিটির সহ-সভাপতি মনসুর আলি বলেন, “মার্কেট কমপ্লেক্স হস্তান্তর না হওয়ায় প্রতিদিন সংলগ্ন সরকারি জমিতে অস্থায়ী বিভিন্ন ঘুমটি দোকান গজিয়ে উঠেছে। পাশাপাশি, ওই জমিতে বাসস্ট্যান্ড তৈরির কাজ আটকে যাওয়ায় বেআইনি চোলাই মদের কারবার থেকে শুরু করে নানা অসামাজিক কাজ বাড়ছে। এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ছাত্র-যুবরা বিপথে যাচ্ছে। পঞ্চায়েতের তরফে সমস্যার কথা জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে অবিলম্বে মার্কেট কমপ্লেক্স হস্তান্তর করে বাসস্ট্যান্ড তৈরির কাজ শুরুর দাবি জানিয়েছি।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “দলের তরফে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে মার্কেট কমপ্লেক্স হস্তান্ত করার আর্জি জানানো হয়েছে। আমরা সেখানে বাসস্ট্যান্ড তৈরির দাবি জানাব।” |