গরিব মানুষজনের জন্য নেওয়া কেন্দ্রের রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবিমা যোজনার টাকা ‘নয়ছয়’ করার অভিযোগে ঝালদার একটি নার্সিংহোমের মালিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত লক্ষ্মীকান্ত সাহুর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদায়। বুধবার সন্ধ্যায় পুরুলিয়া শহর থেকে তাঁকে ধরা হয়। বেশ কিছু দিন ধরেই লক্ষ্মীকান্তবাবুকে পুলিশ খুঁজছিল। বুধবার তিনি ট্রেনে পুরুলিয়ায় এসেছেন, এই খবর পেয়ে জেলা দুর্নীতি দমন শাখার অফিসারেরা তাঁকে গ্রেফতার করেন।
পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার সুনীলকুমার চৌধুরী বলেন, “ওই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ ও নয়ছয় করার অভিযোগ ছিল ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তাই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” ধৃতকে আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁকে ১০ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশের দাবি, ঝালদা ১, ঝালদা ২ ব্লক এবং সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারের স্বাস্থ্যবিমার কার্ড ব্যবহার করে লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছেন ধৃত ব্যক্তি। ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তের ‘দৃষ্টান্তমূলক’ শাস্তির দাবিতে পুজোর আগে ঝালদা ১ ব্লক কার্যালয়ের সামনে অনশনেও বসেছিলেন ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি ভদ্রদুলাল মাহাতো। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বিধানসবা ভোটের আগে প্রশাসন স্বাস্থ্যবিমার কার্ড পুনর্নবিকরণের মেয়াদ ছ’মাস বাড়িয়েছিল। সেই সুযোগে ঝালদার নার্সিংহোমটির কর্ণধার লক্ষ্মীকান্তবাবু গ্রামে গ্রামে প্রচার চালান। সেই প্রচার শুনে গরিব মানুষজন তাঁর কাছে কার্ড জমা রাখেন। সেই সব কার্ড ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলিকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়েছে দেখিয়ে টাকা তুলে নেন। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “শুধু কার্ড রেখে দেওয়াই নয়, গরিব মানুষগুলিকে দিয়ে বিমার ফর্মেও সই করিয়ে নিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি।” বৃহস্পতিবার ভদ্রদুলালবাবু বলেন, “প্রশাসন আমাদের কথা দিয়েছিল তদন্ত হবে। অভিযুক্ত ধরা পড়ায় আমাদের আন্দোলনের জয় হল।” পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। |