মহানগরে এ বার চলবে এসি ট্রাম
হরের পথে এ বার চালানো হবে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ট্রাম। উঠিয়ে দেওয়া হবে ট্রামের দ্বিতীয় শ্রেণিও। বৃহস্পতিবার ‘ক্যালকাটা ট্রাম কোম্পানি’ (সিটিসি)-র পরিচালনমণ্ডলীর বৈঠকে এই মর্মে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আপাতত দু’টি ট্রামে এসি বসানো হবে। তার জন্য বদলাতে হবে ট্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থা। এখন ট্রাম চলে ডিসি, অর্থাৎ ‘ডিরেক্ট কারেন্ট’-এ। কোনও ট্রামে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বসাতে গেলে তাতে ডিসি-র বদলে বসাতে হবে ‘অল্টারনেট কারেন্ট’ (এসি)-এর ব্যবস্থা। সিটিসি-র চেয়ারম্যান শান্তিলাল জৈন এ কথা জানিয়ে বলেন, “এই ব্যবস্থা বদলাতে প্রতিটি ট্রামে লাগবে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। বেসরকারি কোনও সংস্থাকে দেওয়া হবে এই ট্রাম চালানোর দায়িত্ব। ওই সংস্থা সেই ট্রামে বিজ্ঞাপন দেওয়ার সুযোগ পাবে।” আগ্রহী দু’-একটি সংস্থার সঙ্গে এ বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে কথাবার্তাও হয়েছে বলে শান্তিবাবু জানিয়েছেন। কোন কোন রুটে এসি ট্রাম চালানো হবে এবং ভাড়া কী হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। পরে এসি ট্রামের সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়, এখন থেকে এসি ট্রাম ছাড়া অন্য ট্রামের সব কামরাতেই পাখা বসানো থাকবে। একই ট্রামে দু’রকম ভাড়ার দু’টি শ্রেণির কামরা আর থাকবে না। ট্রাম-পরিষেবা চালু হওয়ার পর থেকে প্রতিটি ট্রামে দুই শ্রেণির কামরা থাকে। সাতের দশকে ট্রামের এই দুই শ্রেণির ভাড়ার ব্যবধান ছিল পাঁচ পয়সা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৫০ পয়সা। পরিষেবার ব্যবধান বলতে, প্রথম শ্রেণির কামরায় থাকে তিনটি পাখা। দ্বিতীয় শ্রেণিতে যা থাকে না। তিন মাস আগে আয় বাড়ানোর চেষ্টায় ট্রামের দ্বিতীয় শ্রেণির ভাড়া ৫০ পয়সা বৃদ্ধির অনুমতি চেয়ে ট্রাম-কর্তৃপক্ষ মহাকরণে চিঠি দিয়েছিলেন। তার উত্তর এখনও আসেনি। সংস্থার চেয়ারম্যান বলেন, “২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ট্রামে সবই হবে প্রথম শ্রেণির কামরা।” সংস্থার এক অফিসার বলেন, “বিভিন্ন ডিপোয় অনেক অচল ট্রাম রয়েছে। সেগুলির কিছু পাখা খুলে নেওয়া যাবে।”
২০১০-’১১ অর্থবর্ষে ট্রামের জন্য রাজ্য সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ১৩২ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা। পরের বছর তা ধরা হয়েছে ১৭১ কোটি ৫ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা। সিটিসি সূত্রে খবর, কী ভাবে এই অবস্থার উন্নতি ঘটানো সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা করতে কলকাতায় একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন হবে। তাতে সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের অভিজ্ঞদের কাছ থেকে শোনা হবে বর্তমান পরিকাঠামোয় কী ভাবে ট্রামকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।
নিকাশির কাজের জেরে সাময়িক ভাবে বন্ধ হওয়া বহু ট্রাম-রুটই সেই কাজ শেষ হওয়ার পরেও আর চালু হয়নি। শহরের দুই-তৃতীয়াংশ ট্রাম কার্যত গুমটিতেই পড়ে থাকে। কেন এই অবস্থা, তা খতিয়ে দেখতে মহাকরণে দু’টি বৈঠক হয়েছে। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী সুব্রত বক্সী ও দফতরের পদস্থ অফিসারেরা ছাড়াও কলকাতা পুরসভা, হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স, মেট্রো রেলের পদস্থ কিছু অফিসার ছিলেন। তাতেও জট কাটেনি। উল্টে, কিছু রুট একমুখী হয়ে যাওয়ায় সে সব দিকে কয়েক মাসের জন্য ট্রাম আরও কমেছে বলে সিটিসি সূত্রে খবর। তবে আয় বাড়ানোর চেষ্টায় কী করা যায়, তা খতিয়ে দেখেও আশাবাদী নন কর্তৃপক্ষ।
অন্য দিকে, ব্যয় কমানোর চেষ্টায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ট্রাম সংস্থার অফিসারদের জন্য ভাড়া নেওয়া বেশ কিছু গাড়ি। কর্তৃপক্ষ ফতোয়া দিয়েছেন, রুগ্ণ সংস্থায় এ রকম বিলাসিতা আর চলবে না। তাই যাতায়াতে এখন গাড়ি পাবেন কেবল সংস্থার চার জন শীর্ষ কর্তা।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.