প্রায় দেড় দিন পরে বৃহস্পতিবার রাতে নিজেই ফিরে এল কালনা সংশোধনাগার থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া বন্দি। টিঙ্কু গাইন নামে নিখোঁজ ওই বন্দির বাড়ির লোকজন তাকে কালনা থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর বধূ নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় হুগলির কুন্তিঘাট এলাকার বাসিন্দা টিঙ্কু গাইনকে। তাকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। বুধবার সকালে উপ-সংশোধনাগার থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় ওই যুবক। বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েও তার কোনও খোঁজ মেলেনি। জেল থেকে কী ভাবে সে নিখোঁজ হল, তার কোনও সদুত্তরও দিতে পারেননি জেল কর্তৃপক্ষ। জেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন টিঙ্কু সকালের খাবারও খায়। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদও তাকে জেলের ভিতরে দেখা গিয়েছে। ওই দিন সকালে নাপিত যাওয়া-আসা এবং কয়েক জন বন্দিকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার জন্য সংশোধনাগারের মূল ফটক খোলা হয়েছিল। অন্য সময়ে ওই ফটক বন্ধই ছিল বলে জেল সূত্রে জানা যায়। |
এই ঘটনায় সংশোধনাগারের দুই রক্ষীকে সাসপেন্ডও করা হয় বৃহস্পতিবার। ঘটনাটি নিয়ে মহকুমাশাসকের নির্দেশে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়। এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ ঘটনার তদন্তে উপ-সংশোধনাগারে আসেন ডিআইজি (কারা)। প্রায় তিন ঘণ্টা সংশোধনাগারে ছিলেন তিনি। অন্য বন্দি ও জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ দিন সকালে মহকুমা প্রশাসনের তরফেও এক ম্যাজিস্ট্রেট উপ-সংশোধনাগারে গিয়ে ঘটনার তদন্ত করেন। সন্ধ্যায় উপ-সংশোধনাগারের সুপার তথা কালনার মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি বলেন, “কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সত্ত্বেও কী ভাবে ওই বন্দি পালিয়ে গেল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” এই ঘটনায় বিনয়কুমার সিংহ ও মনসুর হাবিব মল্লিক নামে দুই রক্ষীকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কিন্তু এর পরেই রাত ১০টা নাগাদ নাটকীয় ভাবে ফিরে আসে টিঙ্কু। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কালনা থানার পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে সে। টিঙ্কু জানিয়েছে, বুধবার জেলের ছাউনি বেয়ে কয়েদিদের ঘরের ছাদে উঠে পড়ে সে। তার পরে ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পাঁচিল টপকে বাইরে পড়ে। খানিকটা চোটও পায় তখন। তার পরে সকলের নজর এড়িয়ে কালনা খেয়াঘাট হয়ে নদিয়ার শান্তিপুর, সেখান থেকে কল্যাণীর এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যায়। সেখান থেকেই এ দিন বাড়িতে ফোন করে সে। বাড়ির লোকজন কালনার তৃণমূল নেতা শঙ্কর হালদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শঙ্করবাবুর পরামর্শ মতো টিঙ্কুকে ফিরে আসতে বলেন তার বাড়ির লোকজন। রাতে মহকুমাশাসক বলেন, “টিঙ্কুকে পুলিশ ধরেছে।” |