পাটের দাম ও সারের কম সরবরাহ নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাটচাষিরা যাতে ফসলের উপযুক্ত দাম পান, তার জন্য সোমবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাটচাষিরা ফসলের উপযুক্ত দাম পাচ্ছেন না। বিভিন্ন স্থানে পাট পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে যোগাযোগ করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু তাতে সাড়া মেলেনি। এ দিন মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এ কথা সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, “পাটচাষিরা সমস্যায় পড়ে গিয়েছেন। বাজারে পাটের উপযুক্ত দাম পাচ্ছেন না। প্রতি কুইন্টাল পাট তৈরি করতে এক জন চাষির খরচ হয় ২৪০০ টাকা। কিন্তু বাজারে পাটের ন্যূনতম দাম কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক করে দিয়েছে ১৭০০ টাকার মতো। ফলে প্রতি ১ কুইন্টাল পাট তৈরি করতে চাষিদের ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা ক্ষতি হচ্ছে।” এই সমস্যা মেটাতে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শরদ পওয়ারকে চিঠি লেখেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী তাতে সদর্থক সাড়া দেননি।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে মমতা ঘোষণা করেছিলেন কাঁচা পাটের সহায়ক মূল্যের উপর প্রতি কুইন্টালে ৪০০ টাকা করে বেশি পাবেন চাষিরা। সেই দাবি করেই তিনি চিঠি লেখেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীকে। এ দিন মমতা বলেন, “আমি আজ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার মন্ত্রীগোষ্ঠীর প্রধান। তাই পাটের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানোর বিষয়টি দেখার জন্য অনুরোধ করেছি। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন গুরুত্ব দিয়েই বিষয়টি দেখবেন।” বস্তুত, কলকাতা বা শিলিগুড়ির বাজারে এক কুইন্টাল কাঁচা পাট কিনতে গেলে এখন ২৪০০ টাকাই দিতে হচ্ছে। কিন্তু পাটচাষিরা সেই দাম পাচ্ছেন না। পাট-বাজারের এক সূত্র এ দিন বলেন, “কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক ন্যূনতম সহায়ক মূল্য স্থির করে দিয়েছে ১৭৫১ টাকা। কিন্তু কাঁচা পাট বিক্রি করতে গিয়ে এখনও এক জন চাষি হাতে পাচ্ছেন ১৭০০ টাকার কাছাকাছি।”
পাটের দাম নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী সারের কম সরবরাহ নিয়েও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কাছে সরব হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে বছরে সারের প্রয়োজন ৭৬ হাজার মেট্রিক টন। অথচ কেন্দ্রীয় সরকার সরবরাহ করেছে ২৫ হাজার মেট্রিক টন। আরও সার সরবরাহ করার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শরদ পওয়ার ও শ্রীকান্ত জেনার কাছে দরবার করেন মমতা। প্রত্যুত্তরে মুখ্যমন্ত্রীকে শ্রীকান্ত বলেছেন, তেলেঙ্গানা আন্দোলনের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে ওড়িশা থেকে সার আনার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, রাজ্যে ধান ও চাল ক্রয় করার জন্য একটি কর্পোরেশন তৈরি করা হবে। নতুন সংস্থার মাধ্যমে ডিসেম্বর থেকে ধান-চাল কেনার কাজ শুরু করা হবে। |