রোজ মাথাপিছু ৭০ লিটার
বাঁকুড়া-পুরুলিয়ায় পানীয় জল জোগাতে ঋণ দেবে জাপান
ক জেলায় মাত্র ১৭% মানুষকে পানের জল দিতে পেরেছে রাজ্য সরকার। অন্য জেলায় অনুপাতটা সাকুল্যে ২২%! পশ্চিমবঙ্গের ‘শুখা’ দুই জেলা বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার অধিকাংশ বাসিন্দারই তাই ফ্লুরাইড মিশ্রিত বিষ-জল পান করা ছাড়া গত্যন্তর নেই। এ বার দুই জেলার ঘরে ঘরে শুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দিতে জাপানের দ্বারস্থ হয়েছে কেন্দ্র।
এবং দুই জেলার সর্বত্র পাইপলাইনে পানীয় জল সরবরাহের দু’টো প্রকল্পে জাপান প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা সাহায্য করতে চলেছে বলে রাজ্যকে ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্রীয় পানীয় জল ও নিকাশি মন্ত্রক। রাজ্যের দাবি: পুরো প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দুই জেলার বাসিন্দারা বছরভর দৈনিক মাথাপিছু ৭০ লিটার জল পাবেন।
মূলত নদীর জল পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহের প্রকল্প-পরিকল্পনাটি আদতে তৈরি করেছিল রাজ্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি (পিএইচই) বিভাগ। কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্প দু’টি জাপানি আর্থিক সহায়তার জন্য পাঠিয়েছে। রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরিমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, বাঁকুড়ার প্রকল্পে প্রায় ১২০৪ কোটি টাকা এবং পুরুলিয়ায় অন্তত ১২৭৬ কোটি টাকা (মোট ২৪৮০ কোটি টাকা) খরচ ধরা হয়েছে। কেন্দ্র তা মঞ্জুর করে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জিকা)-কে পাঠিয়েছে বলে রাজ্যকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় পানীয় জল ও নিকাশি মন্ত্রকের অধিকর্তা সুজয় মজুমদার। জাপানের টাকা কি আদৌ মিলবে?
পিএইচই-কর্তাদের বক্তব্য: সাধারণত কেন্দ্রীয় সরকারের এই ধরনের প্রস্তাব বিদেশি ঋণদাতা সংস্থাগুলো প্রত্যাখ্যান করে না। প্রাথমিক ভাবে জাপানি সংস্থাটি প্রস্তাব দু’টো সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাবই দেখিয়েছে বলে কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া এমনিতেই খরাপ্রবণ জেলা হিসাবে পরিচিত। রাজ্যের অন্যান্য জেলার তুলনায় অনগ্রসরও বটে। এই তল্লাটে যতটুকু জল পাওয়া যায়, তার সিংহভাগই ভূগর্ভের। এবং তা-ও উচ্চমাত্রার ফ্লুরাইডে দূষিত বলে পিএইচই-কর্তারা জানিয়েছেন। কেন্দ্র ও রাজ্যস্তরে সঙ্কট সুরাহার চেষ্টা হয়েছিল। সুজয়বাবু তাঁর চিঠিতে বলেছেন, ২০১১-১২ অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গে পানীয় জল সরবরাহে কেন্দ্র-রাজ্য মিলে ৫৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই করেছে। যার মধ্যে কেন্দ্রের দেয় ৩২১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। দিল্লি মনে করে, এই পরিস্থিতিতে বাইরের অর্থ সহায়তা ছাড়া খরা ও ফ্লুরাইড-প্রবণ বাঁকুড়া-পুরুলিয়ায় আলাদা ভাবে পানীয় জল সরবরাহ সম্ভব নয়। তাই জাপানি মদতে পৃথক প্রকল্পের পরিকল্পনা।
ওই টাকায় কী কী কাজ হবে?
পিএইচই-সূত্রের খবর: বাঁকুড়ায় দামোদর, দ্বারকেশ্বরের শাখা ও কংসাবতী এবং পুরুলিয়ায় এগুলো ছাড়াও সুবর্ণরেখা ও কুমাইয়ে ছোট ছোট ‘চেক’ বাঁধ দিয়ে জল ধরে রেখে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে। যে সব নদীতে বছরভর জল থাকে না, সেখানে এই জাতীয় কম উচ্চতার ‘চেক’ বাঁধের সাহায্যে জল ধরে শুখা মরসুমে সরবরাহ করা হয়। পাহাড়ে ছোট ছোট ঝোরাতেও এমন বাঁধ দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। আরও একটি পরিকল্পনা রয়েছে পিএইচই কর্তাদের। দুই জেলার কয়েকটি প্রত্যন্ত এলাকায় ভূগর্ভে জলধারার ফাটল (ফিশার) খুঁজে জল তুলতে চান তাঁরা।
পিএইচই-কর্তাদের আশা, টাকা মিললে আগামী তিন বছরের মধ্যে প্রকল্পের আশি ভাগ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। সুব্রতবাবু বলেন, “রাজ্যের পূর্বতন বাম সরকার বাঁকুড়ার ৮৩% এবং পুরুলিয়ার ৭৮% মানুষের কাছে জল পৌঁছে দিতে পারেনি। তাই দুই জেলার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে দুই জেলার মানুষ সারা বছরই দৈনিক মাথাপিছু ৭০ লিটার জল পাবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.