বিয়ে করেই বিধায়ক, আশীর্বাদ নীতীশের |
বিয়ের ঠিক এক মাসের মাথায় বিধায়ক।
কবিতা সিংহের ক্ষেত্রে এটাই বাস্তব। গত ১৭ সেপ্টেম্বর ‘ঘোর পিতৃপক্ষে’ তিনি বিয়ে করেছিলেন দরোন্দার প্রয়াত বিধায়ক জগমাতো দেবীর একমাত্র পুত্র অজয় সিংহকে। আর আজ ১৭ অক্টোবর জেডিইউয়ের টিকিটে দরোন্দার উপ-নির্বাচনে জিতে বিধায়ক হয়ে গেলেন কবিতা। বিরোধী আরজেডি-এলজেপি জোটের প্রার্থী পরমেশ্বর সিংহকে ২০ হাজারেরও বেশি ভোটে হারালেন তিনি। এমনকী, শতাংশের হিসেবে জেডিইউ ২০১০ সালের চেয়েও বেশি ভোট পাওয়ায় একই সঙ্গে ফের প্রমাণিত হয়ে গেল, লালু-রামবিলাস ম্যাজিক আপাতত বিহারের ভোটারদের মন কাড়ছে না।
দরোন্দার বিধায়ক জেডিইউয়ের জগমাতো দেবীর মৃত্যুর পরে ছেলে অজয় চেয়েছিলেন নিজেই বিধায়ক হতে। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাঁর অতীত ‘রেকর্ড’। একাধিক খুনের অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। সিওয়ানের বাহুবলী নেতা শাহবুদ্দিনের চরম শত্রু বলে পরিচিতি হলেও অজয়কে ওই আসনে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করাতে ঘোরতর আপত্তি ছিল নীতীশ কুমারের। দলকে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোনও মতেই যেন অজয়কে প্রার্থী না করা হয়। কিন্তু আসন ধরে রাখতে মরিয়া অজয় তখন অভাবিত এক কাণ্ড ঘটান। তড়িঘড়ি তিনি বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। হাতে সময় ছিল কম। পাঁজিতে বিয়ের দিনও ছিল না। কিন্তু সব বাধা ভেঙে পিতৃপক্ষের মধ্যেই কবিতাকে বিয়ে করেন তিনি। কারণ, অজয়ের স্ত্রী-কে প্রার্থী করতে কোনও আপত্তি ছিল না নীতীশের। অজয়ের নিজের কথায়, “রাজা বললেন, শাদি করলে টিকিট মিলবে। তাই বিয়েটা করেই ফেললাম।”
এই মওকায় রাজনীতিতে একেবারেই নবীন কবিতাকে হারিয়ে কিছুটা হলেও বিহারে নিজের জমি ফেরত পেতে মরিয়া ছিলেন লালু প্রসাদ ও রামবিলাস পাসোয়ান। সিওয়ানের প্রাক্তন বাহুবলী শাহবুদ্দিনের শাগরেদরা ও আর এক বাহুবলী প্রভুনাথ সিংহ নিজে দরোন্দার উপ-নির্বাচনে লালু প্রসাদের প্রার্থীকে জেতাতে সব চেষ্টা চালান। সংখ্যালঘু ভোটারদের কথা মাথায় রেখে আডবাণীর রথযাত্রা থেকে শুরু করে ফারবিশগঞ্জে পুলিশের গুলি-চালনা নিয়ে দরোন্দায় পড়ে থেকে প্রচার করেন লালু প্রসাদও। তার পাল্টা নীতীশ কুমার দরোন্দায় গিয়ে শুধু এ কথাই প্রচার করেন যে, আরজেডি-কে ভোট দেওয়া মানে ফের সিওয়ানে গুণ্ডারাজ শুরু হয়ে যাওয়া। ফল বেরনোর পরে খুশি নীতীশ কুমার সে কারণেই বলছেন, “দরোন্দার উপ-নির্বাচন প্রমাণ করে দিয়েছে, বিহারের মানুষ আর পিছনে ফিরে তাকাতে চান না। তাঁরা এখন শুধুই উন্নয়ন চান।” |