নিম্নচাপের গেরোতেই শরৎ শেষে ভাদ্রের আঁচ
কোথায় গেল ভোরের সেই শিরশিরানি? চামড়ায় টান ধরানো হাল্কা উত্তুরে বাতাস?
শেষ আশ্বিনে এ যে পুরোদস্তুর ভাদ্রের ঘেমো গরম!
প্রাক হেমন্তের পেলবতা আড়াল করে পরিমণ্ডলে চেপে বসেছে অস্বস্তিকর এক আবহাওয়া। ঘাসের ডগায় শিশিরবিন্দুর দেখা তো নেই-ই, উল্টে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁইছুঁই তাপমাত্রায় হাসফাঁস করছে বাংলার মানুষ।
চার দিন হল, পশ্চিমবঙ্গ থেকে মৌসুমি বায়ু বিদায় নিয়েছে। শরতের শেষে এখন আকাশ পরিষ্কার হয়ে উত্তরের ঠান্ডা বাতাস পরিমণ্ডলে ঢোকার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ার কথা। বছরের এই সময়টায় চামড়ায় ধীরে ধীরে টান ধরতে শুরু করে। আবহবিদদের ব্যাখ্যায়, প্রকৃতির সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী এই সময়ে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের পরিমণ্ডলে উষ্ণ ও শীতল বাতাসে সংঘাত বাধে। তা থেকে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়ে স্থানীয় ভাবে বৃষ্টি নামে। বৃষ্টির পরে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যায়। খুলে যায় উত্তরের ঠান্ডা হাওয়া ঢোকার পথ। তাতে দিন-রাতের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
অথচ এ বার এখনও সেই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারছে না। গরম, আর বাড়তে থাকা আর্দ্রতায় ঠান্ডার লেশটুকুও উধাও। কেন?
আবহবিদেরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরের উপরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা আকাশ পরিষ্কার থাকতেই দিচ্ছে না! বঙ্গোপসাগর থেকে তা মেঘ ঠেলে দিচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে। সঙ্গে জুড়েছে দক্ষিণবঙ্গের উপরে অবস্থিত একটি ঘূর্ণাবর্ত। এবং আকাশে মেঘ থাকলেও নিম্নচাপ-ঘূর্ণাবর্ত জোরালো না-হওয়ায় বৃষ্টির সম্ভাবনা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। চড়ছে অস্বস্তির পারদ।
মৌসুমি বায়ু সাধারণত বিদায়কালে বৃষ্টি দিয়ে যায়। এ বার জুন থেকে সেপ্টেম্বর ভাল বৃষ্টি হলেও শেষলগ্নে বর্ষা তেমন জোরদার ছিল না। ১২ অক্টোবর বর্ষা রাজ্য থেকে বিদায় নিলেও তার আগে-পরে এতটুকুও বৃষ্টি হয়নি। এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতির অবসান ঘটবে কবে?
আবহবিদেরা তাকিয়ে আছেন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপরে সৃষ্ট নিম্নচাপটির দিকে। বলছেন, নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে গেলে ঘূর্ণাবর্তও দুর্বল হয়ে যাবে। তার পরেই আকাশ পরিষ্কার হবে। হু হু করে ঢুকবে উত্তুরে বাতাস। কিন্তু যত দিন তা না হচ্ছে, তত দিন ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ও অন্য পরজীবীদের পোয়াবারো। ফলে রোগ-অসুখের বাড়বাড়ন্ত। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এ হেন মেঘলা আবহাওয়ায় বিশেষত বায়ুবাহিত নানা পরজীবী অতি সক্রিয় হয়ে উঠছে। তাদের দৌলতে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে জ্বর, পেটখারাপ। জ্বরের সঙ্গে গলাব্যথা, কাশি, গা-হাত-পায়ে যন্ত্রণা। আর্দ্রতা কেটে উত্তরের ঠান্ডা বাতাস না ঢোকা পর্যন্ত এমনটাই চলবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন চিকিৎসকেরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.