আতসবাজি কারখানায় বিস্ফোরণে পুড়ে মৃত্যু হল মালিক-সহ দু’জনের। অগ্নিদগ্ধ হন চার জন। রবিবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির কৌতলা আদকপাড়া গ্রামে। স্থানীয়রা প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভান।
পুলিশ জানায়, মৃত জগন্নাথ হালদার (৬০) কারখানার মালিক। ঘটনাস্থলের কাছেই তাঁর বাড়ি। এ ছাড়া, মারা গিয়েছেন কারখানার কর্মী নবীন বৈদ্য (৪৮)। বাড়ি খাঁড়া খ্রিস্টানপাড়ায়। কী ভাবে আগুন লাগল, সে ব্যাপারে পুলিশ বা কারখানার কর্মীরা নির্দিষ্ট ভাবে কিছু জানাতে পারেননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর কালীপুজোর আগে কয়েক মাস ধরে ওই গ্রামে আতসবাজি তৈরির কাজ চলে। কয়েকটি কারখানাও রয়েছে। জগন্নাথবাবুর আতসবাজি তৈরির লাইসেন্স ছিল। পুলিশের দাবি, কয়েক মাস আগে ওই লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। জগন্নাথবাবু লাইসেন্স পুননর্বীকরণ করাননি। |
টালির চালের ওই কারখানার তিনটি ঘরে এ দিন কাজ হচ্ছিল। সেখানে জগন্নাথবাবু এবং দুই মহিলা-সহ সাত কর্মী ছিলেন। সর্বত্র ছড়ানো ছিল বাজির মশলা। হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ। গ্রামবাসীরা গিয়ে দেখেন, কারখানাটি
জ্বলছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা জল এনে আগুন নেভানো শুরু করেন। কারখানার একটি ঘর থেকে জগন্নাথবাবু ও নবীনবাবুর দেহ মেলে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কর্মী
তাপস মণ্ডল, সত্যেন হালদার এবং পুলক হালদারকে। তাঁরা ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সঞ্জয় ঘরামি নামে আর এক কর্মীকে উদ্ধার করা হয় পাশের পুকুর থেকে। তাঁকে ভর্তি করা হয় রায়দিঘি গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। দুই মহিলা কর্মী অবশ্য জখম হননি।
সঞ্জয়বাবুর কোমর থেকে পা পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছে। তিনি জানান, যে ঘরে কাজ করছিলেন, সেই ঘরেই বিস্ফোরণ হয়। সঞ্জয়বাবু বলেন, “আতসবাজি বানাচ্ছিলাম। কী ভাবে যে আগুন লেগে গেল, কিছুই বুঝতে পারলাম না। আচমকা বিস্ফোরণ। আমি কোনও রকমে বেরিয়ে পাশের পুকুরে ঝাঁপ মারি। তার পরে আর কিছু মনে নেই।” রায়দিঘি থানার পুলিশ জানায়, বিস্ফোরণের কারণ জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে এ দিন দেখা যায়, কারখানাটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইটের স্তম্ভ এবং চালের বাঁশগুলির গায়েও পোড়া দাগ। তখনও ধোঁয়া বেরোচ্ছে মাটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা জিনিসপত্র থেকে। বাতাসে বারুদের গন্ধ। পাশের কয়েকটি নারকেল গাছের গায়েও পোড়া চিহ্ন। জগন্নাথবাবুর বাড়ির লোকজন কথা বলতে রাজি হননি। |