জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্য সাজছে কৃষ্ণনগর
যেন উলট পুরাণ। টানা দুর্গাপুজোর ধকল নেওয়ার পরে বারোয়ারির উদ্যোক্তারা যখন ক্লান্ত, ঠিক তখনই গা ঝাড়া দিয়ে উঠছেন কৃষ্ণনাগরিকেরা। সকলের ব্যস্ততা যখন তুঙ্গে, তাঁদের ব্যস্ততা তখন শুরু।
কৃষ্ণনগরের শ্রেষ্ঠ উৎসব জগদ্ধাত্রী পুজো দুয়ারে। সারা বছর ধরেই এই পুজোর উৎসবের জন্য প্রস্তুতি চলে ঠিক কথাই। কিন্তু এখন সময় আর নেই। তাই চূড়ান্ত মুহূর্তের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই কাজটাই হয় দুর্গা পুজোর পর লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত লম্বা ছুটিতে। এই গোটা সপ্তাহটাই তাই বারবার আলোচনা, নিজেদের মধ্যে কথা বলে পরিকল্পনার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার কাজ হয়। এই সপ্তাহান্ত পর্যন্তই সময়। তারপর কেবল পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ তোলার কাজ। রবিবারও সারা দিন কেটেছে পুজো নিয়ে পরিকল্পনাতেই।
কী কী কাজ হয় এখন? পুজোর উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, প্রথম কথা হল বাজেট তৈরি করা। বাজেট নিয়ে আলোচনা চলে সারা বছর ধরেই। কিন্তু এ বারই পুরোপুরি বোঝা যায়, ঠিক কত টাকা এ বার ধরা যেতে পারে পুজোর জন্য। তারপরে তৈরি হয়ে যায় পুজো পরিচালন সমিতি। নানা উপ সমিতি। তার সঙ্গে যোগ হয় প্রতিমা থেকে আলো পর্যন্ত বায়নার কাজ। দেবীর সাজ বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যও ব্যবস্থা পাকা করে ফেলতে হয় এখনই।
কৃষ্ণনগরের অন্যতম বড় পুজো চাষাপাড়া বারোয়ারি। তাঁদের পূজিতা দেবীর নাম বুড়ি মা। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ আসেন। ফলে প্রতি বছরই পুজোর পরিকল্পনায় নতুনত্ব থাকে। এই ছুটিটার মধ্যেই তাঁরা সেরে ফেলেছেন তাঁদের প্রস্তুতি। ক্লাবের গৌতম ঘোষ বলেন, “আমাদের সদস্যদের সকলকে এক সঙ্গে পাওয়ার সুযোগটা সব থেকে বেশি পাওয়া যায় দুর্গাপুজোর সময়েই। মোটামুটি সকলেই বাড়ি থাকেন। শহরে দুর্গা পুজোও তেমন হয় না। তাই পাড়ার পুজো নিয়ে ব্যস্ততাও এখানে কম। তাই এই সময়টাই সব থেকে ভাল।”
নগেন্দ্রনগর যুবগোষ্ঠীর সম্পাদক স্বপন ঘোষের বক্তব্য, “আমরাও বরাবর পুজোর ছুটিটাই চূড়ান্ত প্রস্তুতির জন্য ব্যবহার করেছি। এই সময় সকলেই হাল্কা থাকেন। অনেকক্ষণ ধরে আলোচনা করা যায়। তাই পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করার ক্ষেত্রে এটাই সব থেকে ভাল সময়।” তিনি বলেন, “এ বার আমরা বাজেট তৈরি করা থেকে অনেক কাজই করে ফেলেছি।” তাঁর কথায়, “বাজেট করাটাই বড় কথা। কারণ সাধ আর সাধ্য তো মেলানো হয় সেখানেই।” তাঁরা এ বার পুজোর জন্য তাঁদের শুভেচ্ছা-পত্রিকাও ছাপতে দিয়ে দিয়েছেন।”
যত দিন বাড়ছে, ততই জিনিসের দামও বাড়ছে। ফলে পুজোর বাজেটেও সেই ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে রীতিমতো পরিশ্রম করতে হচ্ছে। জজ কোর্ট পাড়া বারোয়ারির অন্যতম কর্মকর্তা সুবীর সিংহরায় বলেন, “জিনিসের দাম যে হারে বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিতে হিমসিম খাচ্ছি আমরা।” তাঁর কথায়, “অতিরিক্ত টাকাটা তুলতে চাঁদা সব সময় বাড়ানো যায় না।”
তবে কোনও প্রতিবন্ধকতার কাছেই হার মানতে চান না পুজোর উদ্যোক্তারা। এ বারেও কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির পুজো মণ্ডপগুলি থিমের ভাবনার বৈচিত্র নিয়ে দর্শকদের চমকে দিতে চান। উদ্যোক্তাদের অন্যতম গৌতম রায় বলেন, “আমরা মন্দির তৈরি করছি। নিখুঁত ভাবে তা তৈরি করতে গেলে অনেক অর্থের চাপ পড়বে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.