আজ দ্বিতীয় ওয়ান ডে
স্পিনের পাসওয়ার্ড খুঁজছে ইংল্যান্ড
সাতসকালে কোটলায় পাশাপাশি দুটো প্র্যাক্টিস উইকেটে অজিঙ্ক রাহানের সঙ্গে গৌতম গম্ভীর। আর কোচ ডানকান ফ্লেচার হঠাৎই রাহানের উইকেটে আম্পায়ারের ভূমিকায়।
সামান্য কুঁচকে যাওয়া ভুরু, ফ্লেচার নেটে রাহানেকে বল করাচ্ছিলেন স্পিনার দিয়ে। ব্যাটসম্যানকে বলা ছিল, স্টেপ আউট করো। দু’বার স্টেপ আউট করতে গিয়ে স্টাম্পড্ রাহানে। বোলার রাহুল শর্মা। হায়দরাবাদে প্রথম ওয়ান ডে-তে ফার্স্ট পাওয়ার প্লে-তে আটকে গিয়েছিলেন বলে রাহানের জন্য এই দাওয়াই। স্লো উইকেটে কী ভাবে স্পিনের বিরুদ্ধে হবে পায়ের ব্যবহার। কখন ওজন চলে যাবে পিছনের পায়ে, গোড়ালি সামান্য উঠবে এবং সামনের পা স্বচ্ছন্দে পৌঁছবে বলের পিচে।
উদ্দেশ্য একই, কিন্তু একই প্র্যাক্টিসের সামান্য রকমফের চোখে পড়ল বিকেলে ইংরেজদের অনুশীলনে। যখন একগাদা নেট বোলার ডেকে ব্যাট হাতে ক্রিজে নেমে পড়লেন স্বয়ং অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। ভারতকে মাত্র ক’মাস আগে টেস্টে ৪-০, এক দিনের সিরিজে ৩-০ হোয়াইটওয়াশ করার অন্যতম কারিগর। তিনি ভারতের স্পিন মন্ত্রের দাওয়াই খুঁজছিলেন সুইপে। দেখাচ্ছিলেন, কী ভাবে ভারতীয় উইকেটে স্রেফ সুইপ দিয়ে নির্বিষ করে দেওয়া যায় স্পিনের ইন্দ্রজাল। জানা গেল, ‘পেপ-টক’ দিতে গিয়ে জিম্বাবোয়ান ফ্লাওয়ার বেশ কয়েক বছর আগে নাগপুরে ভারতের বিরুদ্ধে তাঁর টেস্টে করা ডাবল সেঞ্চুরিকে নয়, টেনে এনেছেন আরও পিছনের ’৮৭-র বিশ্বকাপ সেমিফাইনালকে।
খোশমেজাজে। রবিবার টিম ইন্ডিয়ার প্র্যাক্টিসে ধোনি। ছবি: উৎপল সরকার
যেখানে গ্রাহাম গুচ স্রেফ ‘মার ঝাড়ু মার, ঝাড়ু মেরে ঝেঁটিয়ে বিদায় কর’ মন্ত্রে নির্বিষ করে দিয়েছিলেন মনিন্দর সিংহকে। পিটারসেন, কুকরা সুইপের রাস্তায় যান বা না যান, আপাতত ইংরেজ শিবির সোমবার কোটলায় স্পিন খেলার পাসওয়ার্ড খুঁজতে ব্যস্ত। যে কারণে কাল প্রথম এগারোয় ফিরিয়ে আনা হতে পারে ইয়ান বেলকে, যিনি নাকি স্পিনটা ভাল খেলেন।
যাঁর হাতে পাসওয়ার্ড, তিনি রবিচন্দ্রন অশ্বিন। যাঁকে আজ ‘অপ্শনাল’ প্র্যাক্টিসে ছুটি দিয়েছিল ভারত। মুখে বলা হচ্ছে ছুটি, কিন্তু আসল কারণ অন্য। ইংল্যান্ডের প্রচারমাধ্যমের একাংশ নাকি ভারতের প্র্যাক্টিসের ছবি মোবাইল ক্যামেরায় তুলে পাঠিয়ে দিচ্ছিল উপযুক্ত জায়গায়। যেখানে তুলে রাখা হচ্ছিল অশ্বিনের বলের গতিপ্রকৃতি। সন্দেহ নেই, এই সিরিজে ইংল্যান্ডের কাঁটা বলতে ওই অশ্বিন। মোটেই জাডেজা বা অন্য কেউ নন। ‘দ্য টাইমস’-এর ক্রিকেটলিখিয়ে রিচার্ড হবসন বলছিলেন, “হায়দরাবাদে জাডেজা তিনটে উইকেট পেলে কী হবে, ভারতীয় বোলিংয়ের অস্ত্র বলতে ওই অশ্বিন। ওর দশটা ওভারই না সিরিজ নিয়ে নেয়!” অশ্বিন এবং স্পিনই যে এই সিরিজে ধোনির ট্রাম্পকার্ড, সবাই জানে। নতুন কিছু নয়। প্রেসের সামনে সে কথা বলে গেলেন ঘরের ছেলে বিরাট কোহলিও। “হায়দরাবাদে দেখেছি, স্পিন খেলতে গিয়ে ওরা কী করল। গোটা সিরিজে স্পিনই হবে আমাদের অস্ত্র।”
অস্ত্র কাজ করতে গেলে লাগে ভাগ্যের সহায়তা। ধোনি যেমন হায়দরাবাদে বলেছিলেন, “শিশির পড়বে কি পড়বে না, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। হায়দরাবাদে শিশির পড়েনি, দিল্লিতে পড়তে পারে।” শিশির পড়া মানে স্পিনারদের বল গ্রিপ করতে সমস্যা হওয়া আর পরে ব্যাট করে ব্যাটিং টিমের বাড়তি সুবিধে পাওয়া। রাজধানীর আবহাওয়া এখন নাতিশীতোষ্ণ, কিন্তু শিশির পড়বে কি পড়বে না, কে বলতে পারে?
সব মিলিয়ে ছবিটা যেন আমূল বদলে গিয়েছে ৪৮ ঘণ্টার তফাতে। একটা দলের হোয়াইটওয়াশের তৃপ্তির রেশ কেটে দিয়েছে প্রথম ম্যাচেই। ধাক্কা খেয়ে ব্যস্ত ফাঁকফোকর মেরামতিতে। আর ধাক্কাটা যারা দিয়েছে অভাবিত ভঙ্গিতে, তারা ফিরে পাওয়া প্রত্যয় নিয়ে ঝাঁপাচ্ছে আরও তেড়েফুঁড়ে। ক্রিকেট এমনই, ‘দুরন্ত ঘূর্ণির ওই লেগেছে পাক’এর মতো। ছন্দে ছন্দে কত রঙ বদলায়!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.