টুকরো খবর
মানবাধিকার সেলের তদন্ত
পুলিশের মারে যুবক রাজু রায়ের মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে তদন্তে নামল রাজ্য পুলিশের মানবাধিকার সেল। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সেলের তিন সদস্যের দল বালুরঘাট থানায় গিয়ে কয়েক দফায় ঘটনার দিন থানায় উপস্থিত পুলিশকর্মীদের জেরা করেন। ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত এএসআই প্রশান্ত বর্মনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁরা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেমস কুজুর বলেন, “বিভাগীয় মানবাধিকার সেলের ডেপুটি পুলিশ সুপার রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে দলটি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।” দলের অন্য দুই সদস্য সাব ইন্সপেক্টর প্রবীর মুখোপাধ্যায় এবং কৌশিক লাহিড়ি। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ তাঁরা কলকাতা থেকে বালুরঘাটে যান। বালুরঘাটের ডিএসপি হরেকৃষ্ণ হালদারের উপস্থিতিতে পুলিশ কর্মীদের জেরা করেন। টানা তিন ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে মিথ্যে বলার জন্য অভিযুক্ত এএসআই প্রশান্তবাবু মৃত রাজুকে চড় মেরেছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁকে মারধরের অভিযোগ প্রত্যেকে অস্বীকার করেছেন। রাজুর কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা টাকার সিজার লিস্ট তদন্তকারীরা পাননি বলে জানা গিয়েছে। পরে ডিএসপি রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। যুবককে থানার আটকানোর অভিযোগও দেখা হবে।” রাজুর বাবা দ্বিজেন্দ্রনাথ রায় অভিযোগ করেন, আদালত থেকে জামিন পেয়ে ৫০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন আনতে গেলে পুলিশ তাঁর ছেলেকে বেধড়ক মারধর করে। অভিযোগ পেয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার চিরন্তন নাগ এএসআই প্রশান্ত বর্মনকে সাসপেন্ড করেন। কুমারগঞ্জ থানার মাঝিনা এলাকার দিনমজুর পরিবারের ছেলে রাজু দুই দাদার সঙ্গে গোয়ায় কাজ করতেন। সাত বছর পরে গত ২২ সেপ্টেম্বর দাদার ও নিজের মজুরি থেকে জমানো ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন। রাতে কুমারগঞ্জ রুটে বাস না পেয়ে বালুরঘাট বাসস্ট্যাণ্ডে ঘোরাফেরার সময় পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। জামিন নিয়ে ২৪ সেপ্টেম্বর থানায় টাকা ও ফোন আনতে গেলে সে পুলিশের অত্যাচারের শিকার হয় বলে অভিযোগ।

অস্ত্র-সহ গ্রেফতার ২ উত্তরবঙ্গে
মালদহে ধৃত এক্রামুল বারি।
বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরবঙ্গের দু-প্রান্ত থেকে অস্ত্র-সহ দুই দুষ্কৃতীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। প্রথম ঘটনা ঘটে কোচবিহারের কোতোয়ালি থানায়। সেখানে মধুপুর এলাকা থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম রণজিৎ রায়। তাঁকে জেরা করে কাছের একটি বাঁশবাগান থেকে পলিথিনে রাখা ৭৭ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, কার্তুজগুলি থ্রি-নট-থ্রি রাইফেলের। পুলিশ ব্যবহার করে। কোচবিহারে রাসমেলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তার প্রাক্কালে এত পরিমাণ অস্ত্র কোনও নাশকতার জন্য আনা হয়েছিল কি না, দেখা হচ্ছে। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের কালিয়াচকে। বৃহস্পতিবার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কর্মীরা কালিয়াচকের মুজমপুরের বালিগ্রামে যায় এক লিচুবাগানের মালিকের খোঁজ করতে। কয়েকদিন আগে ওই লিচুবাগান থেকে শতাধিক রাইফেল তৈরির সরঞ্জাম-সহ নানা অস্ত্র উদ্ধার হয়। লিচুবাগানের মালিকের খোঁজ করতে গেলে দুষ্কৃতীরা সরকারি কর্মীদের উপরে হামলা করে বলে অভিযোগ। পুলিশ সেখানে তল্লাশি চালিয়ে এক্রামুল বারি নামে দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে একাধিক বার পুলিশকর্মী ও পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “দীর্ঘদিন পুলিশ এক্রামুলকে খুঁজছিল। ধৃত দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে খুন, সংঘর্ষ-সহ একাধিক মামলা রয়েছে।”

অনিয়মের অভিযোগ
দক্ষিণ দিনাজপুরে রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগের শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা নিয়ে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলে সরব হলেন নিয়োগ প্রার্থীরা। শুক্রবার বালুরঘাটের দুই চাকুরী প্রার্থী এই ব্যাপারে রাজ্য পুলিশের আইজি’র কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলপুরের পিণ্টু কুণ্ডু এবং চকভৃগুর বাপ্পা হালদারের অভিযোগ, প্রতিযোগী পিছু একজন করে পুলিশ কর্মীকে স্টপ ওয়াচ দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি কম্পিউটারের মাধ্যমেও দৌড়ের সময় মাপা হচ্ছে। কিন্তু সফল প্রতিযোগী চিহ্নিত করা হচ্ছে কম্পিউটারের তথ্যের ভিত্তিতেই। কম্পিউটারের তথ্য প্রতিযোগীদের দেখতে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ স্টপ ওয়াচের তথ্য অনুসারে তাঁরা অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ে দৌড় শেষ করেছেন। কেন এই ধরনের অস্বচ্ছ্বতা সৃষ্টি করা হয়েছে সেই প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি ঘটনার তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন আরও বেশ কিছু প্রার্থী। নিয়োগের দায়িত্ব রয়েছেন মালদহ রেঞ্জের ডিআইজি শশীকান্ত পুজারী। তিনি বলেন, “অস্বচ্ছ্বতা কিংবা অনিয়মের কোনও প্রশ্ন নেই। কম্পিউটারে ঠিক করছে নির্ধারিত সাড়ে ৬ মিনিটের মধ্যে কারা দৌড়ে সফল হচ্ছেন। স্টপ ওয়াচের সময় প্রার্থীদের জানানোর ঘটনা জানা নেই। এমন কিছু হলে সেটা বেআইনি।” গত মাসের ২৫ তারিখ থেকে বালুরঘাট পুলিশ লাইন ময়দানে শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা চলছে। ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত পরীক্ষা চলবে। ১৬০০ মিটার দৌড় সাড়ে ৬ মিনিটে শেষ করতে পারলে লিখিত পরীক্ষা বসার সুযোগ পাবেন। প্রতিদিন পুলিশ লাইন ময়দানে অন্তত ২ হাজার যুবক ভিড় করছেন। কিন্তু কতজনকে নিয়োগ করা হবে তা জানা নেই দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার চিরন্তন নাগের। তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে কিছু জানা নেই। বিষয়টি ডিআইজি দেখছেন।” অভিযোগকারী পিণ্টু কুণ্ডু বলেন, “পুলিশ কর্মীদের স্টপ ওয়াচের তথ্য অনুসারে নির্দিষ্ট সময়ে ১৬০০ মিটার দৌড় শেষ করি। অথচ কম্পিউটারের হিসাবে সময়ে দৌড় শেষ করতে পারিনি জানিয়ে বাতিল করা হয়।”

পুজো নিয়ে গোলমাল
কালীপুজোর আয়োজন নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত তুফানগঞ্জের নাককাটিগছ। বৃহস্পতি বার রাতে পঞ্চায়েতের দ্বীপের পাড়ে ওই সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। সংঘর্ষে দুই দলের অন্তত ১৭ জন জখম হন। তাঁদের মধ্যে ৩ জন তৃণমূল এবং ২ জন বিজেপি সমর্থককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়। ফের গোলমালের আশঙ্কায় শুক্রবার কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপারের কাছে নাককাটিগছে পুলিশ ক্যাম্প বসানোর দাবি জানান বিজেপি নেতৃত্ব। পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “পুজোর জায়গা নিয়ে দু’দল বাসিন্দার মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরে ঘটনা রাজনৈতিক মোড় নিয়েছে। নাককাটিগছ এলাকার বাসিন্দারা কয়েক বছর থেকে কালীপুজোর আয়োজন করছেন। দ্বীপের পাড় মাঠে ওই পুজো হয়ে থাকে। এ বার ওই মাঠে স্থানীয় তৃণমূল সমর্থকরা পুজোর আয়োজনে উদ্যোগী হন। তাঁদের মণ্ডপ তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। একই মাঠে পুরনো কমিটির বিজেপি সমর্থকরা পুজো আয়োজনে তৎপর হলে বৃহস্পতিবার রাতে দু’পক্ষ্যে বচসা শুরু হয়। রাত গড়াতেই শুরু হয়ে যায় লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষ। ঘটনার খবর পেয়ে বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তৃণমূল কংগ্রেস নাককাটিগছ অঞ্চল সম্পাদক শচীন বর্মন বলেন, “দলের সমর্থকরা নিজেদের মতো পুজোর আয়োজন করতে উদ্যোগী হয়েছে। পরিকল্পনা মাফিক গোলমাল পাকাতে একই মাঠে পুজো করার পরিকল্পনা নেয় বিজেপি সমর্থকরা। ওঁদের হামলায় ৭ সমর্থক জখম হয়েছেন। বিজেপি-র কোচবিহার জেলা সম্পাদক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “বৃহস্পতিবার পুজো নিয়ে সভাও হয়েছে। রাতে তৃণমূল কর্মীরা হঠাৎ হামলা চালালে সংঘর্ষ হয়।”

দুর্নীতির প্রতিবাদ
বাসিন্দাদের পাশাপাশি, দলের প্রধানের বিরুদ্ধে উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হলেন আরএসপি’র এক গ্রামপঞ্চায়েত সদস্য। শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের দ্বীপখণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তৃণমূলের নেতৃত্বে বাসিন্দারা ঘেরাও বিক্ষোভ দেখান। পাশাপাশি সরব হন আরএসপি’র ওই পঞ্চায়েত সদস্য। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আরএসপি’র সরলা বর্মন। তাঁর বিরুদ্ধে ইন্দিরাআবাস যোজনা, বার্ধক্যভাতা, ১০০ দিনের প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দুপুর ১ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত টানা ৪ ঘন্টা প্রধানকে ঘেরাও করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। আরএসপি’র ওই সদস্য আকবর আলি সরকার বলেন, “জেলাশাসকের নির্দেশ মেনে প্রধান উন্নয়ন প্রকল্পের কোনও তথ্য এবং খরচের হিসাব দিচ্ছেন না। প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য গ্রাম পঞ্চায়েতে টাঙানো হচ্ছে না।” এ দিন বিক্ষোভ আন্দোলনের সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ যায়। প্রধান সরলা বর্মন অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিক্ষোভকারীদের চাপে এ দিন মুচলেকা দিয়ে আগামী ৩ নভেম্বরের মধ্যে হিসাব দাখিলের প্রতিশ্রুতি দিলে ঘেরাও তোলা হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.