 |
মাছি? পিছলে যাবে
পুজো গেল, ত্বকও যাই যাই প্রায়। ও দিকে শীত ছুঁই ছুঁই। এ সময় ত্বকের
দরকার একটু বেশি যত্নআত্তি।
মন দিয়ে ত্বকের পরিচর্যা করলে ত্বকের
জেল্লা আর কমপ্লিমেন্টস দুই-ই বাড়বে চক্রবৃদ্ধি হারে। জানালেন
অ্যারোমাথেরাপিস্ট একতা বাগাড়িয়া |
 |
|
হুল্লোড়, হই হই করে পুজো কেটে গেল। পুজো আসছে আসছে। সেটাই ভাল। কোন দিন কী সাজব সেই হাজারো চিন্তা প্ল্যানিং একটু দুশ্চিন্তায় বেশ দিন কাটে। কিন্তু পুজোর পরের টেনশনটি মারাত্মক। পুজোর ক’দিন আমাদের খেয়ালই থাকে না আমরা কী ভাবে সাজছি। সকালের মেকআপ না তুলেই আবার সন্ধের জন্য প্রস্তুত হতে শুরু করি। এই ভাবে চার-পাঁচ দিন আমরা রীতিমত অত্যাচার করি ত্বকের ওপর। সারা বছর অল্পবিস্তর যত্নআত্তি করে যেটুকু চকচকে হয় সেটা এই অত্যাচারে একেবারে ভ্যানিশ হয়ে যায়। মেকআপ’এর হ্যাংওভার এবং পুজোর পর থেকে যে টানের হাওয়া আরম্ভ হয় তার সঙ্গে মোকাবিলা করতে কতক ফর্মুলা বললেন অ্যারোমা কনসালটেন্ট একতা বাগারিয়ার।
একতা বাগারিয়ার মতে অক্টোবর থেকে মার্চ এই সময় ঠিক করে যত্ন নিলে সারা বছর তার একটা ভাল ফল পাওয়া যায়। এই সময় অবজ্ঞা করা ঠিক না। আবহওয়ার বিভিন্ন রকম পরিবর্তনের ফলে ত্বকেরও প্রচুর পরিবর্তন ঘটে। ত্বকের এই সব পরিবর্তনকে ঠিক ভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে।
প্রথমে খাওয়াদাওয়ার দিকে একটু নজর দিতে হবে। পুজোর সময় জাঙ্ক ফুড বাইরে খাওয়া, বেশি রাতে খাওয়া সব কিছু চলে। এই কারণে আমাদের শরীরটিও খারাপ হয় এবং ত্বকের মধ্যে একটি প্রাণহীন ব্যাপার দেখা যায়। এই সময় শরীরকে ডি-টক্সিনাইজেশন করা খুব প্রয়োজন। ৩০ মিলিলিটার অ্যালোভেরার রস খাবারের আগে তিন সপ্তাহ খেলে শরীর ঠান্ডা হয় এবং শরীরের অভ্যন্তরীণ সিস্টেমটি ঠিক হয়। এ ছাড়া আমরা যদি পাঁচটি প্রাথমিক রং অনুযায়ী এক দিন অন্তর এক দিন সবজি বা ফলের রস খাই (কালার থেরাপি) তবে শরীরের সঙ্গে ত্বকের জেল্লাও বৃদ্ধি পায়।
|
প্রথম দিন - শশা বা মুলোর রস (সাদা)
দ্বিতীয় দিন - লাল শাকের রস ( লাল)
তৃতীয় দিন - পালং শাকের রস (সবুজ)
চতুর্থ দিন - গাজরের রস ( কমলা)
পঞ্চম দিন - পাতিলেবুর রস (হলুদ) |
 |
খাবারের রুটিনের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকেরও একটি নিয়মমাফিক রুটিন তৈরি করে যত্ন করতে হবে। প্রথমে জানতে হবে আমাদের মেকআপ তোলার ঠিক পদ্ধতি এবং তার পরবর্তী চর্চা। চোখ আমাদের খুবই সংবেদনশীল একটি জায়গা। সুতরাং চোখের মেকআপ তোলাটা জরুরি, এবং তা করতে হবে অত্যন্ত সাবধানে। সুইট আমন্ড অয়েল ক্লিনজিং-এর জন্য খুবই ভাল। এটি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করলে চোখ ও তার পাশ্ববর্তী জায়গার কোনও ক্ষতি হয় না। ৬-৮ ঘণ্টা পর্যন্ত নরম থাকে এবং কোনও আন্ডারআইক্রিম লাগানোর দরকার নেই। মুখের মেকআপ তোলা বা যে কোনও ধরনের ক্লেনজিং-এর জন্য অল্প অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে দু’ফোঁটা লেমন অয়েল মিশিয়ে মাখতে হবে। এতে ত্বকের সাতটি স্তর পর্যন্ত পরিষ্কার হয় এবং আমাদের ত্বকের পি-এইচ’এর ভারসাম্য বজায় থাকে। অন্যান্য ক্লেনজার ত্বকে জলের ভারসাম্য নষ্ট করে কিন্তু এটিতে তা হয় না। ফলে অনেক দিন পর্যন্ত তারুণ্য বজায় থাকে। এই সময় রোদে ঘোরার ফলে অতিবেগুনি রশ্মির তেজে ত্বকের খুবই ক্ষতি হয়। ত্বকের সমস্ত রকম মেরামতির করতে ২.৫ মিলিলিটার জোজোবা অয়েলের সঙ্গে দু’ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে দু’বেলা মাখলেই তফাৎটা বুঝতে পারবেন। এটি ব্যবহার করলে কোনও ময়েশ্চারাইজার বা সানস্ক্রিন কোনওটারই প্রয়োজন হয় না। জোজবার মধ্যে সহজাত ময়েশ্চারাইজারের দ্রব্যগুণ আছে। এটি সব বয়সের মহিলারাই ব্যবহার করতে পারেন। এর থেকেও বেশি উজ্জ্বল ত্বক যদি আপনি চান তবে বেরনোর আগে ছয় থেকে আট ফোঁটা জিরেনিয়াম অয়েল লাগিয়ে নিতে পারেন, যাঁরা বাড়িতে থাকেন তাঁরাও ব্যবহার করতে পারেন। |
 |
অ্যান্টিএজিং |
শীত শুরুর আগে থেকে অ্যান্টিএজিং-এর জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কয়েক ফোঁটা আমন্ড অয়েলের সঙ্গে পেট্রোলিজেলি মিশিয়ে লাগালে খুব ভাল, সম্ভব হলে রেড ওয়াইন অল্প পরিমাণে মিশিয়ে নেবেন। এই মিশ্রণটিকে বলা হয় বিউটিশিয়ানের জাদু দণ্ড। এটি কাজ করে ম্যাজিকের মতো। শতকরা সত্তর ভাগ উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। শীতের কোনও টানই ত্বকের ওপর ছাপ ফেলতে পারে না।
সমস্ত ক্লান্তি দূর করতে ও নতুন প্রাণশক্তি ফিরে পেতে অন্তত একটি স্পা’র প্রয়োজন। বডি স্পা যদি ঠিক হয় আপনার মুখেও তার প্রতিফলন দেখা যায়। সিয়াৎসু (Shiatsu) মাসাজের সঙ্গে কিছু অ্যারোমা অয়েল ও কিছু হার্বস দিয়ে বডি-স্পা করালে সমস্ত নেগেটিভ এনার্জি চলে যায়। এবং এই স্পা’টি শেষ হওয়ার পর মনে হয় যেন দু-তিন কেজি ওজন কমে গেছে। অর্থাৎ শরীরটি রিল্যাক্সড হলে, সমস্ত টেনশন দূর হলে আপনার অনুভূতিটি এই রকমই হবে। তবে স্পা’টি কাজের রকমফের অনুযায়ী করানো উচিত। এক জন গৃহবধূর সঙ্গে কর্পোরেট কর্মারতা মহিলার স্পা’র ধরন আলাদা হবে। স্পা’এ ব্যবহৃত জিনিসও ভিন্ন হবে।
এই অনুশাসন মেনে চললে আপনার গ্লোয়িং-স্কিন প্রাপ্তি কেউ আটকাতে পারবে না। |
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
|