শরীরের ধুলো ঝাড়ুন
খাসা আছি। মেশিন কাচছে জামাকাপড়, বাটনা বাটছে, থালা-বাটি ধুয়ে দিচ্ছে, ধুলো ঝেড়ে দিচ্ছে জীবনে আর কী চাই বলুন তো! আর আমরা গাড়িতে হুউউশ করে পৌঁছে যাচ্ছি শপিং মল বা সিনেমা হলে। সেখানে চলছে দেদার শপিং, হাঁউ হাঁউ করে জাঙ্ক ফুড গলাধঃকরণ করা আর নরম গদিতে ঠেস দিয়ে সিনেমা দেখা। জানি, অনেকেই রে রে করে তেড়ে আসার জন্য তৈরি হচ্ছেন। কেন, আমরা কি দেদার খানাখন্দ ঠেকিয়ে আপিস করি না? কম্পিউটারের সামনে হাঁ করে বসে মাথা ধরাই না? এইটুকু আয়েশও কি আমাদের করতে নেই?
নিশ্চয়ই আছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কারিকুরিকে পাশ কাটিয়ে গেলে অন্যরা তো ‘ব্যাকডেটেড’ বলে গাল পাড়বে। কিন্তু ঘণ্টাখানেকের পরিশ্রম বাঁচাতে নিজের শরীরটার কী পরিমাণ দফারফা করে বসছি, সেটার বিষয়ে ভাবছেন কিছু? যন্ত্রনির্ভর সভ্যতায় ঝপঝপ করে নামছে দৈহিক সক্রিয়তার মাত্রা, সরাসরি প্রভাব পড়ছে ফিটনেস আর ওয়েট ম্যানেজমেন্ট-এর মতো বিষয়ের ওপর।
হু হু করে বাড়ছে পেট্রলের দাম। কিন্তু একখানা গাড়ির মালিক না হতে পারলে মানসম্মান নিয়ে টানাটানি। দু’পা দূরে লেকের ধারে হাওয়া খেতে হলেও অনেকেই গ্যারেজের দরজা তোলেন। ফল? কার্ডিয়োভাসকুলার সিস্টেম, অর্থাৎ হৃৎপিণ্ড আর ফুসফুস হয়ে পড়ছে কমজোরি। পায়ের জোর কমায় হাঁটার ক্ষমতা যাচ্ছে কমে। হাঁটলে যে পরিমাণ ক্যালরি পুড়তে পারত, তা আর হচ্ছে না। তাই ডায়েটিশিয়ানের নিদান ব্যর্থ করে ওজনের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকছে।
আর এক নিঃশব্দ ঘাতক হল কম্পিউটার। এখন কোনও পড়ুয়ার কাছে কম্পিউটার নেই ভাবলেই কেমন অবাস্তব লাগে। গত কয়েক বছরে হঠাৎ করেই যেন পাল্টে গিয়েছে তাদের অবসর বিনোদনের সরঞ্জামগুলো। মাঠে নেমে ক্রিকেট, ফুটবল, কবাডির বদলে হাতে এসেছে মাউস। থিতু হয়ে না বসলে কম্পিউটারে কাজ বা টেলিভিশন দেখা কোনওটাই হয় না। ফলে কমে শারীরিক সক্ষমতার মাত্রা। তাই কি-বোর্ড নিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ সময় কাটানোর সঙ্গে সুস্বাস্থ্য আর তরতাজা থাকার চাবিকাঠিকে কী করে মেলানো যায়, এটা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা দরকার।
বাড়িতে ভালমন্দ রেঁধে খাওয়া বা খাওয়ানোর প্রথা তো প্রায় উঠেই গেছে। শহরের বুকে এখন এমন বাড়ির দেখা মেলা দুষ্কর, যার আশেপাশে কোনও না কোনও বিখ্যাত ব্র্যান্ডের ফুড-জয়েন্ট তার ব্যবসা ফেঁদে বসেনি। তাই ব্যস্ত জীবন বাড়ির রান্নাকে দূরে সরিয়ে শরণাপন্ন হচ্ছে এই ধরনের উচ্চ-ক্যালরি, অথচ পুষ্টিশূন্য খাদ্যের। একটা বার্গার, ফ্রাই আর নরম পানীয় সমেত মিল-এ যতটা ক্যালরি থাকে, তার পরিমাণ সারা দিনের প্রয়োজনীয় ক্যালরির অর্ধেকেরও বেশি। ভাবতে পারেন?
শারীরিক সক্ষমতা বাড়বে কী করে আচমকা বিশাল কোনও ফিটনেস প্রোগ্রাম নিয়ে ফেলবেন না। কারণ, বেশি দিন এত নিয়মে থাকা সম্ভব নয়। বরং জীবনযাত্রায় ছোট ছোট পরিবর্তন আনুন। ভোরে ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছে না-ই করতে পারে। তার বদলে আধ ঘণ্টা আগে ওঠার অভ্যাস করুন। এই সময়টুকু খরচ করুন কোনও হাল্কা কসরত করে। হাঁটার মতো ভাল অভ্যেস খুব কমই আছে। একটু হেঁটে দুধ বা খবরের কাগজটা নিয়ে এলেন, অথবা বাড়ির চার পাশের বাগানটা ভাল করে ঘুরে দেখলেন। কিছু দিনের জন্য গাড়ির কথাটা ভুলে গিয়ে একটু সাইকেল ব্যবহার করুন তো! অনেকটা না গিয়ে একটু দূরের বাসস্টপ অবধি চালিয়ে গেলেন। এতে মন, শরীর দুই-ই ঝরঝরে থাকবে।
সারা দিন যদি অফিসে কম্পিউটারের সামনে বসেই কেটে যায়, তা হলে বাড়িতে কিছুটা সময় বরং খরচ করতে পারেন নাচের জন্য। নিজের ঘরেই মিউজিক চালিয়ে একটু সালসা বা বেলি ডান্স-এর চিন্তাটা কিন্তু মন্দ নয়। এগুলো করতে পারেন না? আরে, নিদেন পক্ষে হাত-পা তো ছুঁড়তে পারবেন ইচ্ছে মতো! ছুটির দিনে দু-চার জন বন্ধু-বান্ধবকে ডেকে নিয়ে বাড়ির সামনেটায় জমিয়ে টেনিস, ব্যাডমিন্টন বা কবাডি খেলতে পারেন। কোনও জিমে না গিয়েও তফাতটা কয়েক দিনেই দিব্যি বুঝতে পারবেন।
আধুনিক সভ্যতার সুফল নিশ্চয়ই ভোগ করবেন। কিন্তু উপায় যখন আছে, তখন খামোখা এর অভিশাপ বইবেন কেন? নিজের একঘেয়ে জীবন থেকে একটু বেরিয়েই দেখুন না, কতটা ভাল থাকতে পারেন।
বাড়িতে ভালমন্দ রেঁধে খাওয়া বা খাওয়ানোর প্রথা তো প্রায় উঠেই গেছে। ব্যস্ত জীবন বাড়ির রান্নাকে দূরে সরিয়ে শরণাপন্ন হচ্ছে উচ্চ-ক্যালরি, অথচ পুষ্টিশূন্য জাঙ্ক ফুডের। একটা বার্গার, ফ্রাই আর নরম পানীয়র মিল-এ যতটা ক্যালরি থাকে, তার পরিমাণ সারা দিনের প্রয়োজনীয় ক্যালরির অর্ধেকেরও বেশি। ভাবতে পারেন?
সক্ষমতা বাড়াবে কী করে
আচমকা বিশাল কোনও ফিটনেস প্রোগ্রাম নিয়ে ফেলবেন না। কারণ, বেশি দিন এত নিয়মে থাকা সম্ভব নয়। বরং ছোট ছোট পরিবর্তন আনুন। ভোরে ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছে না করলে আধ ঘণ্টা আগে ওঠার অভ্যাস করুন। এই সময় খরচ করুন কোনও হাল্কা কসরত করে। হাঁটার মতো ভাল অভ্যেস খুব কমই আছে। একটু হেঁটে দুধ বা খবরের কাগজটা নিয়ে এলেন, অথবা বাড়ির চার পাশের বাগানটা ভাল করে ঘুরে দেখলেন। কিছু দিনের জন্য গাড়ির কথাটা ভুলে গিয়ে সাইকেল ব্যবহার করুন তো! অনেকটা না গিয়ে একটু দূরের বাসস্টপ অবধি চালিয়ে যান। এতে মন, শরীর দুই-ই ঝরঝরে থাকে।
সারা দিন যদি অফিসে কম্পিউটারের সামনে বসেই কেটে যায়, তা হলে বাড়িতে কিছুটা সময় বরং খরচ করতে পারেন নাচের জন্য। নিজের ঘরেই মিউজিক চালিয়ে সালসা বা বেলি ডান্স-এর চিন্তাটা কিন্তু মন্দ নয়। এগুলো করতে পারেন না? আরে, নিদেন পক্ষে হাত-পা তো ছুঁড়তে পারবেন ইচ্ছে মতো! ছুটির দিনে দু-চার জন বন্ধু-বান্ধবকে ডেকে নিয়ে বাড়ির সামনেটায় জমিয়ে টেনিস, ব্যাডমিন্টন বা কবাডি খেলতে পারেন। কোনও জিমে না গিয়েও তফাতটা কয়েক দিনেই দিব্যি বুঝতে পারবেন। আধুনিক সভ্যতার সুফল নিশ্চয়ই ভোগ করবেন। কিন্তু উপায় যখন আছে, তখন খামোখা এর অভিশাপ বইবেন কেন? নিজের একঘেয়ে জীবন থেকে একটু বেরিয়েই দেখুন না, কতটা ভাল থাকতে পারেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.