যুবকদের সাহায্যে রাস্তায় পড়ে থাকা প্রৌঢ়ের ঠাঁই হাসপাতালে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ক্যানিং |
দিন কয়েক ধরেই রাস্তার ধারে পড়ে ছিলেন প্রৌঢ় মানুষটি। ডান পায়ের ক্ষতে পচন। দুর্গন্ধ পেয়ে পথচারীরা নাকে রুমাল চাপা দিয়ে চলে গিয়েছেন।
কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে এলাকারই কিছু যুবকের ‘মানবিক মুখ’ দেখল ক্যানিংয়ের ভাঙনখালি। ওই এলাকারই একটি রাস্তার ধারে পড়েছিলেন প্রৌঢ়। যুবকেরা তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করিয়ে দিলেন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে।
রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী বা তাঁদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়ার মতো নানা অভিযোগ প্রায়ই ওঠে। কিন্তু ক্যানিং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে ভাবে ওই প্রৌঢ়কে ভর্তি করিয়ে নিয়েছেন, তাতে খুশি চিকিৎসাধীন অন্য রোগী বা তাঁদের আত্মীয়েরা। |
ক্যানিং হাসপাতালে ভর্তি সেই প্রৌঢ়।-নিজস্ব চিত্র। |
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশমতো স্বাস্থ্যকর্মীরা ওই যুবকদের সাহায্যে প্রৌঢ়কে স্নান করিয়ে দেন। তাঁর ডান পায়ের ক্ষত গভীর। পরিষ্কার করা হয় সেই ক্ষতস্থানও। হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল সরকার বলেন, “মনে হচ্ছে প্রৌঢ় মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁর ডান পায়ের ক্ষতে পচন ধরে গিয়েছে। এ জন্য তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানোর প্রয়োজন। সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
শুক্রবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, ওই প্রৌঢ়কে সাবান মাখিয়ে স্নান করানো হচ্ছে। রয়েছেন ওই যুবকেরা এবং সুপার নিজেও। স্নানের পরে প্রৌঢ়কে নিয়ে যাওয়া তাঁর জন্য নির্দিষ্ট শয্যায়। তিনি চুপচাপই ছিলেন। বেশ কয়েক বার জিজ্ঞাসার পরে শুধু জানান, তাঁর নাম পল্টু। বাড়ি বিহারে।
যে যুবকেরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন, তাঁরা এই ঘটনাকে ‘সামাজিক কর্তব্য’ হিসাবেই দেখছেন। তাঁদের মধ্যে সামিরুল খান বলেন, “রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে মনে হয়েছিল ওই প্রৌঢ়ের চিকিৎসার প্রয়োজন। তাই বন্ধুদের নিয়ে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাই। এটা আমাদের সামাজিক কর্তব্য বলেই মনে হয়েছে।” |