স্মরণ ২...
‘দুঃখজিৎ’ বলে আর ডাকা হবে না
দেশপ্রিয় পার্কের অনুষ্ঠানে তাঁর স্টেজ নেওয়ার কথা রাত ন’টা।
হিন্দুস্থান পার্কের গেস্ট হাউসে তাঁর ইন্টারভিউ শুরু হওয়ার কথা রাত আটটা।
শনিবারের পত্রিকার কভার স্টোরি। অবশ্যই এই সংখ্যার নয়। ফেব্রুয়ারির। ২০১০-এর শেষ ডিসেম্বরে বসে তখন আঁচ পাওয়ারও সম্ভাবনা নেই, একই ব্যক্তিকে নিয়ে মাস দশেকের ভেতর প্রচ্ছদকাহিনির বিষয় যে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে যেতে পারে।
ইন্টারভিউ শুরু হওয়ার আগেই ফেব্রুয়ারির প্রচ্ছদকাহিনির শিরোনাম নির্ধারিত। ‘সেভেনটি প্লাস’। ওই মাসেই যে সত্তর বছরে পা দিচ্ছেন ইন্টারভিউয়ের বিষয়।
ঠিক এক ঘণ্টা বাদে জগজিৎ সিংহ নাইটে গাইতে ওঠার আগে যিনি ব্র্যান্ডি আর গরম জল মিশিয়ে গলাটাকে নরম করে নিচ্ছেন, তাঁকে মনে হল বেশ খোশ মেজাজে। মুম্বইয়ের রেসের মাঠে সে দিনই তাঁর প্রিয় ঘোড়া বাজি জিতেছে। দুপুরে হালকা ঘুমোতে পেরেছেন। একটু পরে শুরু হতে যাওয়া অনুষ্ঠানের তিনি একক শিল্পী তো কী! পরিবেশে কোনও চাপ নেই। মানুষটার মনেও আছে বলে মনে হচ্ছে না। অনুকূল ইন্টারভিউয়ের এর চেয়ে আদর্শ পরিবেশ আর কী হতে পারে। থিম সত্তর বছরে পা দেওয়া জগজিৎ কলকাতা-সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যে ৭০ অনুষ্ঠান করবেন তা নিয়ে এক্সক্লুসিভ কথাবার্তা। কলকাতায় যেমন বললেন শুরু করবেন প্রসেনজিৎ আর সৌরভকে মঞ্চে সংবর্ধনা দিয়ে। ওঁদের নাম্বার দু’টো চাইলেন। জানালেন মুম্বইয়ের জন্য কথা বলেছেন আমির খানের সঙ্গে।
সচিন না গাওস্কর? সচিন।
লতা না আশা? ইজিলি লতা।
আনন্দে। কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে
সৌরভ না ধোনি? সৌরভ। তবে নবাব সাহেবও দারুণ ছিলেন।
মেন কোর্সের আগে যেমন স্টার্টার আসে তেমনই এগুলোও পকোড়া জাতীয় আলাপ। ইন্টারভিউটা জমতে সাহায্য করে। আর জগজিৎ তো আজ দিব্য মেজাজে। কে বলবে ফাংশনের আগে ইন্টারভিউ দেওয়ার তোড়জোড় করছেন। এ তো সুপারহিট অনুষ্ঠানের পর শিভাস রিগ্যাল নিয়ে উদ্যোক্তাদের লোক ঢুকছে সেই মুড।
“আশা হল আমাদের মতো। খুব ভাল। দারুণ ভাল। কিন্তু ওর দিকে সপ্রশংস তাকাই না। লতাজির দিকে তাকাই। হিন্দুস্থান পাকিস্তান মিলিয়ে লতাজি একজনই। সচিনও একটাই। সবাই ক্রিকেট খেলে। সচিন একটা অন্য কিছু খেলে।”
সচিনকে যদি বলা হত একটা গান উৎসর্গ করুন তা হলে কোনটা করতেন? কাপে আবার নতুন করে ব্র্যান্ডি ঢালতে ঢালতে জগজিৎ বললেন, “আমি প্রশ্নটাকে এ ভাবে সাজিয়ে নিতে চাই। সিরি ফোর্ট অডিটোরিয়ামে গান গাইছি। সচিন এসে বসল। আমি তখন মাইকে বলব ‘সচিন, তোমার জন্য আমার জীবনের সবচেয়ে পছন্দের গানটাই উৎসর্গ করতে চাই।’ ইয়ে দৌলত ভি লে লো, ইয়ে শহরত ভি লো...ও কাগজ কি কশতি, ও বারিশ কা পানি।”
বলতে বলতে একটু অন্যমনস্ক হয়ে পড়লেন জগজিৎ। সাংবাদিকের এ বার সতর্ক হওয়ার পালা। এই কি তা হলে সেই সময়টা চলে এল যখন লোকটা ফাংশনের আগে রানওয়ে দিয়ে গায়ক সত্তার গতি বাড়াতে শুরু করল? এই সময়টার খেয়াল রাখতে হবে। পরে লেখায় লাগাতে হবে। লোকটা বোধহয় টেক অফ করা শুরু করল।
একদম ভুল। কোথাও ডুব দেওয়া জগজিৎ ফিরে এলেন জীবজগতে। বললেন, “সচিন বলতে বলতে বিবেককে মনে পড়ে গেল। ও কোনও দিনই ওই ক্লাসের ক্রিকেটার ছিল না। কিন্তু আমার ছেলেটা স্কুল পর্যায়ের ম্যাচে দু’একবার সচিনের সঙ্গে খেলেছিল। ওর কাছে অনেক গল্প শুনতাম।” উদাস ভাবে বললেন, “সাইরাজ বহুতুলে আজও আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। যে বার ইন্ডিয়া খেলতে গেল ফোন করেছিল ‘আঙ্কল যাচ্ছি’ বলে।”
কলকাতায় জগজিতের অনুষ্ঠান মানেই যাঁর মাধ্যমে অনিবার্য যোগাযোগ সেই বাদল ধরচৌধুরী ততক্ষণে এসে গিয়েছেন। তিনি জানেন ২০১১-র ফেব্রুয়ারির প্রচ্ছদ কাহিনির ইন্টারভিউ চলছে। আদৌ জানেন না আমরা ১৯৯০-এর মাঝরাতের মুম্বইয়ে বসা। যেখানে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের পাশ থেকে প্রচণ্ড গতিতে টার্ন করা একটা গাড়ি ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা মেরে তিন পাক ঘুরবে। তার পর কার্যত দু’টুকরো হয়ে যাবে। তার মধ্যে বসা চার হবু ক্রিকেটারের একজন প্রায় পঙ্গু হয়েও বছরখানেক বাদে চমকপ্রদ উত্থান ঘটাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। যাঁর নাম সাইরাজ বহুতুলে। আর মেরিন ড্রাইভের ওপর যে দু’জনের মৃত শরীর আবিষ্কৃত হবে তাঁর একজনের নাম বিবেক সিংহ। ওই একটা মুহূর্ত ঘুরিয়ে দেবে ভারতীয় গজলের জীবন। চরম ভুক্তভোগীদের একজন চিত্রা সিংহ সারা জীবন আর গাইবেন না। তিনি জগজিৎ সিংহ বাকি জীবনটুকু নিচু স্কেলে গাইবেন। বেদনার অদ্ভুত আর্তি আর চোখের জল যোগ করে দেবেন হারমোনিয়ামের নোটগুলোর সঙ্গে।
পরিবেশটা গুমোট পাকিয়ে যাওয়ার মধ্যে বলার চেষ্টা করলাম “আপনি হয়তো জানেন না বিবেকের জন্য করা আপনার অ্যালবাম ‘সাজদা’ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান ১৯৯২-এর বিশ্বকাপে টিম-কোচে চালিয়ে অস্ট্রেলিয়াময় ঘুরত। ইমরান টিমকে উদ্দীপ্ত করতেন এই বলে যে “একটা মানুষ তাঁর একমাত্র পুত্রকে হারিয়েও নিজের বেদনাকে জয় করে এত ভাল অ্যালবাম করেছেন। তাঁর পাশে আমাদের চাপ কী? এই গানগুলো শোনো। ওঠো। লড়াই করো।”
জগজিতকে এ বার খুশি খুশি দেখাচ্ছে। এতক্ষণে আবিষ্কার করতে পেরেছি, বহু বিখ্যাত মানুষকে ছবিতে যেমন বাড়তি লম্বা দেখায় আসলে যথেষ্ট বেঁটে। এও তাই। আর গজলের রাজাধিরাজ বলে যে উচ্চমার্গীয় ভাবমূর্তি আছে তার সঙ্গে বাস্তবের কথাবার্তার কোনও মিল নেই। ভীষণ সিম্পল। ফিল্মকে আজও বলে ‘ফিলম্’। জ্যোতি বসুর পুরনো বাড়িটাই এখন গেস্ট হাউস আর অধুনা তাঁর কলকাতার অধিষ্ঠান। কিন্তু তাতে কী? জ্যোতিবাবু নিয়ে এমন সব শ্রদ্ধামিশ্রিত প্রশ্ন শুরু করে দিলেন যে মনেই হচ্ছিল না এত বড় সেলিব্রিটি। যেন বর্ধমানের অজ গ্রামের বাম সমর্থক। জীবনে প্রথম কলকাতায় এসেছে। আর জ্যোতিবাবুর পুরনো ভিটে দেখতে জড়ো হয়েছে। এই মানুষটাই ৪০০ টাকা হাতে নিয়ে এককালে দাড়িগোঁফ কামিয়ে পঞ্জাবের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে কঠিন জীবনসংগ্রাম করেছিল মেনে নেওয়াই যায়। এর অনায়াস বিবিএম স্টেটাস মেসেজ হতে পারে: ‘সর্ষো কি শাগ মকাই দি রোটি’।
ছেলে বিবেকের সঙ্গে জগজিৎ আর চিত্রা
কিন্তু ভেবে কূল পাওয়া যাচ্ছে না সেই ১৯৭৬-এ জীবনের প্রথম অ্যালবামে সাড়া ফেলে দেওয়ার পর থেকে তিরিশ বছরেরও বেশি তথাকথিত বাণিজ্যিক প্লেব্যাকের বাইরে থেকেও এমন চড়চড়ে নাম কী করে রেখে দিল? আর যদি রাখলই বা তাঁর মিডিয়া সম্পর্কে আন্দাজ কী করে এত কম হতে পারে? বিশ্বের সব প্রান্তে এই রকম ক্যাপটিভ অডিয়েন্স সম্পন্ন মানুষ জীবনের ৭০ বছরে বিশ্বব্যাপী যে ৭০টা অনুষ্ঠান করবেন তা নিয়ে ভাবনার কী আছে? যে কাগজের কাছে যাবেন তারাই লিখবে। যে চ্যানেলকে ফোন তুলবেন তারাই দেখাবে। কিন্তু জগজিৎ যে তাঁর দিল্লির রেস্তোঁরার (তাঁর ছোট ভাই চালান) উত্তর ভারতীয় রান্নার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম রেসিপি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। আধুনিক মিডিয়া সম্পর্কে ন্যূনতম ধ্যানধারণাও নেই।
আলোচনার এই পর্যায়ে এসে কেন জানি না মনে হল, অসাধারণ এই মানুষটাকে কাগুজে সাক্ষাৎকারে খেলো করার মানে হয় না। ‘নায়ক’-এর অরিন্দম তাঁকে ইন্টারভিউ নিতে আসা অদিতি সাক্ষাৎকারের কাগজগুলো আচমকা কুচিকুচি করে ফেলার পর বলেছিল “সে কী! মন থেকে লিখবেন না কি?” অদিতি বলেছিল, “মনে রেখে দেব।”
সে দিন ইন্টারভিউ হল না দেখে জগজিৎ বলেছিলেন, “পরের দিন দুপুরে ফোন করতে পারেন। আসতেও পারেন। আমার সন্ধের ফ্লাইট।” আসা হয়নি। ফোনটাও করা হয়নি। জাস্ট মনে হয়েছিল এই মানুষটা একটা চলমান মিউজিক্যাল নাইট। এঁকে স্রোতের মতো বইতে দিতে হবে। সেটা একমাত্র সঙ্গীতের ঝরনাতে সম্ভব। শুকনো বারোশো শব্দের সাক্ষাৎকারের প্রাত্যহিকতায় এই মানুষটাকে কেন খোঁচাখুঁচি করা হবে? এর রংটা না-হয় কাগজের বাইরেই থেকে গেল। সব রং কাগজে আসতেই হবে তার কী মানে আছে?
আজও প্রতিশ্রুত সাক্ষাৎকার থেকে সরে আসা নিয়ে বিন্দুমাত্র কোনও অনুতাপ নেই। শুধু এক এক সময় মনে হয় যাঁকে এত বার তিনি ‘খানদানি’ বলছিলেন সেই পটৌডির মৃত্যুর দিন তাঁকে একটা ফোন করা যেত কি না। পরের দিন ফোন করার প্রশ্ন ছিল না। ২২ সেপ্টেম্বর পটৌডির শেষ যাত্রা। আর ২৩ সেপ্টেম্বর জগজিতের জীবন-মৃত্যুর সীমান্তে পৌঁছে যাওয়া। জগজিতের মৃত্যুর
পর একবার মনে হচ্ছিল, সচিন তেন্ডুলকরকে একবার ফোন করে দেখলে কেমন হয়? যন্ত্রণা আর আর্তির যে পরিবেশটা দক্ষ গজল গায়ক তাঁর মেহফিলে চাঁদোয়ার মতো বিছিয়ে দেন, সেটা তো আপনিই জগজিৎ-শোক হয়ে বিছিয়ে রয়েছে গোটা দেশে। সচিন-- তিনিও নিশ্চয়ই ব্যতিক্রম হবেন না। জগজিৎ নিজের পছন্দের সেরা গান তাঁকে উৎসর্গ করতে রাজি ছিলেন।
সচিন জীবনের কোন স্মরণীয় ইনিংস উৎসর্গ করবেন গজলের ট্র্যাজিক শাহেনশাকে?
এই মুহূর্তে যদিও মনে হচ্ছে তার চেয়ে অনেক প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন হবে, দেবরাজ ইন্দ্র রাজসভায় কোন গানটা প্রথম শুনতে চাইবেন জগজিতের কাছে?
‘হোশওয়ালো কো খবর ক্যায়া বেখুদি ক্যায়া চিজ হ্যায়’। না কি ‘তুমকো দেখা তো ইয়ে খয়াল আয়া’। না কি ‘তেরি দুনিয়া মে জিনে সে তো বহতর হ্যায় কে মর যায়ে।’
না কি গানের মাঝে থামিয়ে দেওয়া হবে তাঁকে। বলা হবে আর আর্তি নয়, আর যন্ত্রণা নয়, আর শোক নয়। আজ থেকে তোমার সুখে আরোহণ ঘটল।
আর তোমায় কেউ ‘দুঃখজিৎ’
বলে ডাকবে না।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
তুমকো দেখা তো ইয়ে খয়াল আয়া
জগজিতের গান যে একটা অন্য রকম অনুভূতি সেটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বিশেষ করে ওঁর ‘তুমকো দেখা তো ইয়ে খয়াল আয়া’ গানটা তো খুবই স্পেশাল আমার কাছে। ব্যাটিং করতে নামার আগে বা ড্রেসিংরুমে বসে থাকতে থাকতে আইপডে গান শুনে রিল্যাক্স করাটা ব্যাটসম্যানদের খুব কমন অভ্যেস। আমিও করতাম। ওঁর গানও শুনতাম তখন।
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়
তুম ইতনা জো মুসকুরা রহে হো ক্যায়া গম হ্যায় জিসকো ছুপা রহে হো
আমার সব থেকে প্রিয় গানই বোধহয় বলব এই গানটাকে। এই লাইন দু’টো শুনলে মনে হয় জীবনের মর্র্মার্থ বোধহয় এটাই। বিশেষত আমাদের শিল্পীদের তো এটাই জীবন। কষ্ট লুকিয়ে অভিনয় করা। এখানে একটা কথা না বলে পারছি না, আমার ‘সম্রাট ও সুন্দরী’তে গান গেয়েছিলেন জগজিৎজি। আমি লিপ দিয়েছিলাম। আমার জীবনের সেরা পাওয়ার একটা সেটা।
শ্রেয়া ঘোষাল
ঝুকি ঝুকি সি নজর
খবরটা পেয়ে খুব ভেঙে পড়েছিলাম। কাজে বেরোতে পারিনি সে দিন। ‘ঝুকি ঝুকি সি নজর’ গানটার কথা মনে হচ্ছে। ইউনিক! জীবনের নানা মুহূর্তের সঙ্গে মিশে যায় ওঁর গান। গজল ব্যাপারটা কঠিন। খটমট। কিন্তু সেই কাঠিন্যকে ভেঙে গজলকে তিনি মানুষের হৃদয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছিলেন। জগজিৎজিদের বিকল্প হয় না।
রূপা গঙ্গোপাধ্যায়
ইয়ে তেরা ঘর ইয়ে মেরা ঘর ইয়ে ঘর বহুত হসিন হ্যায়
আমার চিরকালের প্রিয় গান। শুনলেই স্বপ্নের ঘরের কথা মনে হয়। আর কেউ এ ভাবে ওই গানটা গাইতে পারত না হয়তো। আমার সঙ্গে ওঁর বহুবার দেখা হয়েছে। কোনও একটা কারণে আমাকে মনে রাখতেন। অবাকই হতাম যে ওঁর মাপের মানুষ আমাকে মনে রেখেছেন!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.