একেই কোষাগারে টানাটানি। তার উপরে প্রত্যাশামাফিক কর আদায়ও হচ্ছে না। অবস্থা সামাল দিতে তাই ফের বাজারের দ্বারস্থ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। অর্থ দফতর-সূত্রের খবর: চলতি মাসে রাজ্য আবার বাজার থেকে ১,৫০০ কোটি টাকা ঋণ নিতে চলেছে।
অর্থ দফতর সূত্রের খবর: গত ক’মাসে রাজস্ব আদায়ে সরকার বেশ খানিকটা ধাক্কা খেয়েছে। রাজ্যের নিজস্ব আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল, শতাংশের হিসাবে তার অনেকটাই পিছনে ছুটছে সেই অঙ্ক। ফলে অন্যান্য খরচ সামলিয়ে রাজ্য সরকারি প্রায় ১০ লক্ষ কর্মীর বেতন ও পেনশনের টাকা জোগাড় করাটাই এখন মহাকরণের বড় মাথাব্যথা। যার দরুণ নতুন করে দেড় হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের সিদ্ধান্ত। চলতি অর্থবর্ষের (২০১১-১২) জন্য রাজ্য সরকার বিধানসভায় যে ভোট-অন-অ্যাকাউন্ট পেশ করেছিল, তাতে গত বছরের তুলনায় ৩০% বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে। কিন্তু নানা কারণে সে হিসেব এখন অনেকটা উল্টে গিয়েছে।
সরকারি সূত্রের খবর: চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকের গোড়ায় এসে তা দাঁড়িয়েছে ১৯ শতাংশের আশপাশে। ফলে নগদের ভাঁড়ারে বেশ খানিকটা টান পড়েছে। শুধু কর্মীদের বেতন-পেনশন খাতেই ফি মাসে সরকারকে যে ২,৭০০ কোটি টাকা গুনতে হয়, তার সংস্থান করতেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। এবং এই কারণেই বাজার থেকে ফের ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত। এ ক্ষেত্রে অবশ্য রাজ্য সরকার প্রথাগত পথেই হাঁটছে বলে জানিয়েছেন অর্থ দফতরের এক আধিকারিক। তাঁর কথায়, “প্রতিটা রাজ্যই টাকার জোগাড় করতে বাজার থেকে ধার করে। এতে অনিয়মের কিছু নেই। বরং এটাই রেওয়াজ।”
রাজ্য সরকার প্রধানত দু’টো উপায়ে বাজার থেকে ঋণ নেয়। স্বল্প সঞ্চয়ের মাধ্যমে, এবং বন্ড ছেড়ে। গত অর্থবর্ষে (২০১০-১১) বামফ্রন্ট সরকার বন্ড মারফত সর্বাধিক ১৫,৩৯১ কোটি টাকা ঋণ তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। রাজনৈতিক পালাবদলের পরে নতুন সরকার দায়িত্বে এসে বাজারি-ঋণ গ্রহণের মাত্রা বাড়িয়ে করেছে ২০,৫৩৪ কোটি টাকা। এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত তার ১৩,৬৭৩ কোটি টাকা তোলা হয়ে গিয়েছে। অর্থ-সূত্রের হিসেবে, এর মধ্যে রয়েছে পূর্বতন সরকারের নেওয়া ৫,১৭৩ কোটি টাকা ঋণের দায়। এবং তা বাদ দিয়েও বাজার থেকে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার দেনা করেছে নতুন সরকার।
সঙ্কট সামলাতে দ্বিতীয় ধাপে নেওয়া হচ্ছে দেড় হাজার কোটির বাজারি-ঋণ। |