দিদির উপরে শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে প্রতিবাদ করেছিল বোন। সে জন্যই তার গলা টিপে খুন করে ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁর কুশাংড়া গ্রামে লিলুফা খাতুনের মৃত্যুর তদন্তে নেমে পাঁচজনকে জেরার পরে এমনই তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এর পরেই পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম জসিম মোল্লা, মাসাদুল মোল্লা, হাসানুর মোল্লা, আলিউর ও তরিকুল মোল্লা। এদের মধ্যে তিনজন স্কুলছাত্র। জসিম পঞ্চম শ্রেণিতে এবং হাসানু ও তরিকুল মোল্লা নবম শ্রেণিতে পড়ে। বাকিদের একজন দর্জির কাজ করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে বাড়ির পিছনে নির্জন জায়গায় লিলুফার ও তার দিদি নাজমা খাতুন শৌচাগারে গিয়েছিল। বহুক্ষণ পরেও তারা না ফেরায় বাড়ির লোকজন খুঁজতে বের হন। পরে একটি ডোবায় পাঁকের মধ্যে লিলুফারের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। নাজমাকে পাওয়া যায় অচৈতন্য অবস্থায়। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নাজমার বাবা নজরুল ইসলাম প্রতিবেশী পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই পাঁচজনকে জেরার জন্য আটক করে। পুলিশের দাবি, জেরায় ভেঙে পড়ে বছর বারোর বালক জসিম মোল্লা কুকীর্তির কথা ফাঁস করে দেয়। পুলিশের বক্তব্য, উঠতি বয়সের ওই ছেলেরা ওই শৌচাগারের পিছনে মেছোভেড়িতে ঘোরাফেরা করত। বিকেলের দিকে মেছোভেড়ির আশপাশে ঘুরতে আসা মেয়েদের নিয়ে নানা কটূক্তি করত। নেশাও করত তারা। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তারা যখন ঘুরছিল সেই সময় হঠাৎ লিলুফার ও নাজমাকে শৌচাগারে যেতে দেখে। তারা নাজমাকে ধরে আরও নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। হঠাৎ তাদের খেয়াল হয় শৌচাগারে রয়েছে লিলুফার। তাকেও তারা নিয়ে যায়। একটা গাছের আড়ালে নিয়ে গিয়ে নাজমার উপরে অত্যচার শুরু করে তারা। দিদির উপরে অত্যাচার হচ্ছে দেখে লিলুফার বাধা দিতে যায়। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা জানায়, লিলুফারকে বাগে আনতে না পেরে তার গলা টিপে একটু দূরে ডোবার পাঁকে ফেলে দেওয়া হয়। বোনের এ অবস্থা দেখে ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যায় নাজমা। পরে পুলিশকে নাজমা জানায়, “বোন বাথরুমে ঢুকলে আমি বাইরে পাহারা দিচ্ছিলাম। হঠাৎই পিছন থেকে আমাকে কয়েকজন চেপে ধরে। চিৎকার করে বোনকে সাবধান করে দিই। পরে ওরা আমাকে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার শুরু করে।” নজরুল ইসলাম বলেন, “ওদের চিনে ফেলাতেই আমার মেয়েকে প্রাণ দিতে হল।” |