সঙ্গীত সমালোচনা...
গিরিশ যুগের মঞ্চগান
৭ ডিসেম্বর ১৮৭২। বাঙালির থিয়েটার হয়ে উঠল পাবলিকের বিনোদনের সঙ্গী। হাল ধরলেন গিরিশচন্দ্র ঘোষ। আমৃত্যু জড়িয়ে ছিলেন মঞ্চসাধনাতেই। তাই মেলবন্ধন ঘটাতে পেরেছিলেন ইউরোপীয় থিয়েটারের অভিনয় কেতা এবং স্বদেশি যাত্রা-কথকতার।
সেই সময়ে সব নাট্যকারের বিচিত্র মঞ্চগানগুলির প্রধান বিষয় ছিল ‘সময় ও সমাজভাবনা’। সম্প্রতি তারই প্রকাশ ঘটল রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অফ কালচারের (গোলপার্ক) বিবেকানন্দ প্রেক্ষাগৃহে। শিল্পী দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘গিরিশ যুগের মঞ্চগান’ শীর্ষক নিবেদনে। সম্পাদক সর্বভূতানন্দজির শিল্পী বরণের সূত্র ধরেই বেজে উঠল কনসার্টের সুর ইমন-কল্যাণে। গানের শুরু ‘বিল্বমঙ্গল’ নাট্যের ‘কি ছার আর কেন মায়া’য়। এই নাটকের মূল কাহিনি রামকৃষ্ণ শুনিয়েছিলেন তাঁর ভক্ত গিরিশকে। পর পর গীত হয় বঙ্কিমচন্দ্রের ‘সাধের তরণী আমার’ (মৃণালিনী), রবীন্দ্রনাথের বাল্মীকি প্রতিভার ‘রাঙাপাদপদ্মযুগে প্রণমি গো’, অমৃতলালের ‘নব জীবন’ নাট্যে ‘অয়ি ভুবনমনোমোহিনী’, জ্যোতিরিন্দ্রনাথের ‘শুনলেম নাকি নিদারুণ মানে’ (মানময়ী) প্রভৃতি। পাশাপাশি ছিল গিরিশের আগমনী নাটকের গান ‘কুস্বপন দেখেছি গিরি’, ‘মন আমার দিন কাটালি’ (প্রফুল্ল) প্রভৃতি। উঠে এল নানা ঘটনাস্রোত। তিনটি গানের উল্লেখ বিশেষ প্রয়োজন। প্রথমটি ‘ডুব ডুব রূপসাগরে’ - যে গান রামকৃষ্ণ শুনিয়েছিলেন গিরিশকে। দ্বিতীয়টি নিবেদিতাকে উৎসর্গীকৃত ‘অবনত সসাগরা অবনী’, যে গানের আধার রবীন্দ্রনাথের ‘এ কি সুন্দর শোভা’। শেষে ‘চৈতন্যলীলা’ নাট্যের দর্শক শ্রোতা রামকৃষ্ণের একাত্ম সমাধির গান ‘কেশব কুরু করুণাদীনে’। যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন দীপঙ্কর আচার্য, সৌরভ ঘোষ, দীপক মাইতি এবং আবলু চক্রবর্তী।

পুজোর থিম সং এ বার রিং টোনে
পুজো চলে গেলেও রয়ে গেল পুজোর সুর। মানুষের হাতে হাতে, কানে কানে।
সে আবার কী!
আরে এ বার নিউ আলিপুর সুরুচি সঙ্ঘের পুজো উদ্যোক্তারা তো সেটাই করেছেন। পুজোর থিম মিউজিক-এর কনসেপ্ট এ বারই প্রথম বাজারে এনে। জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সুরে।
এ খবর পুরনো।
যে খবরটা নতুন তা হল এই যে
‘ভূস্বর্গ আজ ভূস্বর্গে থাক
যুদ্ধ শেষের ভোরে
রূপং দেহি
জয়ং দেহি....”

সুরুচি সংঘের এই থিম সং এখন মোবাইলের রিংটোন, কলার টিউন হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যেই নাকি মোনালি ঠাকুর জুবিন গর্গ প্রমুখ শিল্পীর গাওয়া এই গান আড়াই লাখ গ্রাহকের মোবাইলে ঢুকে পড়েছে।
“পুজো চলে গেলে মন কেমন করে। পুজোর আমেজের সুরটা যদি বারবার মোবাইলে শোনা যায় তা হলে পুজোর স্মৃতি নিয়েই কেটে যাবে ছ’মাস। আর তার ছ’মাস বাদে আবার পুজো।” হাসতে হাসতে বললেন এই সুরুচি সংঘের সভাপতি অরূপ বিশ্বাস। সেই থেকেই পুজোর থিম সং-এর ভাবনা আর মোবাইলে সেটাকে ছড়িয়ে দেওয়া।
আর সুরকার জিতের বক্তব্য কী? তাঁর তো পুলক আর ধরে না। তাঁর সুরে বহু সিনেমার জনপ্রিয় গান রিংটোন হয়েছে। কিন্তু এমনটা তো এই প্রথম। “ চমৎকার লাগছে। পুজোর থিম সং রিংটোন হয়ে যাবে ভাবতে পারিনি”, বললেন জিৎ। তা হলে নিশ্চয়ই সামনের বছর আরও নামী-দামি পুজো থিম সং তৈরিতে নেমে পড়বে! আর সেই গানে সুর করার বরাত আসবে? সেগুলোও করবেন নিশ্চয়ই?
উত্তরে জিৎ হাসতে বললেন, “না, না। শুধু সুরুচি সঙ্ঘেরই থিম সং করব। সামনের বছর আরও ভাল সুর দেব। কারণ এটা আমার পাড়ার পুজো। নিজের পুজো।”

কেন নয়নে আবির ছড়ালে
সম্প্রতি ‘কাব্যলোক’-এর ‘বসন্তবন্দনা’য় শোনা গেল বেশ কিছু গান ও আবৃত্তি। শুরুতেই বলতে হয়, মনোশ্রী লাহিড়ির পরিচালনায় গীতি-আলেখ্যটি শ্রোতাদের মনে দাগ কেটেছে।
এ দিন বসন্তের গান শোনালেন সুস্মিতা দত্ত, মানসী ভট্টাচার্য, আশিস সরকার, জয়তী ভট্টাচার্য, অমিতেশ চন্দ এবং তৃপ্তি দত্ত। সুস্মিতা দত্তের কণ্ঠে ‘মধু বসন্তে বধূ এল ফিরে’, ‘কেন নয়নে আবির ছড়ালে’, মানসী ভট্টাচার্যের কণ্ঠে ‘যাব না যাব না ঘরে’, আশিস সরকারের গাওয়া ‘পাগল হাওয়া’ প্রভৃতি এ দিনের উল্লেখযোগ্য নিবেদন।
সব শেষে কবিতা শোনালেন সুজিত দত্ত। অঞ্জলি, পরিচয়, বাসন্তী, ঝুলন কবিতাগুলি শ্রোতাদের অনেক দিন মনে থাকবে। তাঁর বাচনভঙ্গি এবং কবিতার চরিত্রানুযায়ী তা পাঠ করার যে দৃঢ়তা, এমন দু’টি বৈশিষ্ট্যই শিল্পীর বড় সম্পদ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.