|
|
|
|
সমস্যা জঙ্গলমহলে |
পুরনো কার্ড না ফিরিয়ে বিলি নয়া রেশন কার্ড |
সুমন ঘোষ • মেদিনীপুর |
বিলি হচ্ছে নতুন রেশন কার্ড। কিন্তু পুরনো কার্ড ফেরত নেওয়া হচ্ছে না। ফল দাঁড়াচ্ছে, জনসংখ্যার থেকে রেশন কার্ডের মালিক কয়েক লক্ষ বেশি! এই পরিস্থিতি জঙ্গলমহলে!
বাম-সরকারের আমলে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় রেশন কার্ড বিলির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল। রাজ্যের নতুন সরকার ঘোষণা করেছে, সাধারণের ক্ষেত্রে বার্ষিক আয়ের উর্ধ্বসীমা ৩৬ হাজার টাকা ও তফসিলিদের ক্ষেত্রে ৪২ হাজার টাকা হলেই ২ টাকা কেজি দরে চাল পাওয়া যাবে। আগে মাসে মাথা পিছু ৩৫ কেজি চাল দেওয়া হত ২ টাকা কেজি দরে। এ বার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫৫ কেজি। নতুন এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে রেশন কার্ড বিলি করতে গিয়ে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। অভিযোগ, প্রশাসনিক উদাসীনতা ও এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর জন্যই এমনটা হচ্ছে।
প্রশাসনের হিসেব বলছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের মাওবাদী উপদ্রুত ১১টি ব্লকে জনসংখ্যা হওয়া উচিত ১৬ লক্ষ ৬২ হাজার ১৫৮ জন। অথচ খাদ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, জঙ্গলমহলে রেশন কার্ড রয়েছে ১৭ লক্ষ ৫১ হাজার ২৩৭ জনের। এর মধ্যে এপিএল ৭ লক্ষ ৮০ হাজার ৭ জন। বাকিরা বিপিএল। নতুন সরকার ২ টাকা কেজি দরে চাল প্রাপকের পরিধি বাড়ানোর পরে ফের সমীক্ষা শুরু হয়। দেখা যায়, এতদিন এপিএল তালিকায় থাকা ৭ লক্ষ ৮০ হাজার ৭ জনের মধ্যে ৬ লক্ষ ৬৮ হাজার ৫৫৫ জন এ বার ২ টাকা কেজি দরে চাল পাবেন। অর্থাৎ এপিএল তালিকায় থাকবেন ১ লক্ষ ১১ হাজার ৪৫২ জন। হিসেব মতো প্রতি ব্লকে পড়ে ১০ হাজার জনে ১ জন এপিএল থাকবেন।
নতুন চিহ্নিত বিপিএলদের তালিকা তৈরি হয়েছে। সেখানে তফসিলি সম্প্রদায়ের ২ লক্ষ ৩২ হাজার ১৪৬ জনের নাম রয়েছে। বাকি ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪০৯ জন সাধারণ। প্রত্যেকেরই কার্ড তৈরি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কার্ড বিলি হয়েছে মাত্র ৬৪ হাজার ২০৫টি। অথচ কার্ড ফেরত নেওয়া হয়েছে ২৬ হাজার ৩৮৭ জনের কাছ থেকে। অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক কার্ড ফেরত নেওয়া যায়নি। এক আধিকারিকের কথায়, “কার্ড ফেরত চাইলে হাজার প্রশ্ন। কিছু মানুষ আবার রটিয়ে দিচ্ছে যে, পুরনো কার্ডই আসল। নতুন কার্ডের দাম নেই। অনেকে তা বিশ্বাস করে কার্ড ফেরত দিচ্ছে না। এতে ইন্ধন জোগাচ্ছে কিছু ডিলার।” জেলা খাদ্য নিয়ামক প্রদীপ ঘোষ বলেন, “আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে কার্ড ফেরত নেওয়ার উপর জোর দিচ্ছি। তবে কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। যাতে অধিকাংশ পুরনো কার্ড ফেরত নেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
পুরনো কার্ড ফেরত না নিয়ে নতুন কার্ড দেওয়ায় বেড়ে যাচ্ছে গ্রাহক সংখ্যা। বামফ্রন্ট সরকার যখন আদিবাসী উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু মৌজায় বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করে কার্ড বিলি শুরু করেছিল, তখনও নতুন কার্ড দেওয়া হয়। কিন্তু সব পুরনো কার্ড ফেরত নেওয়া যায়নি। এ বারও যাচ্ছে না। |
|
|
|
|
|