|
|
|
|
মাওবাদী-হানায় ৯ নিহতের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মাওবাদী হামলায় নিহত সাধারণ নাগরিকের পরিজনেদের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রকল্পে অবশেষে অর্থ বরাদ্দ করল কেন্দ্রীয় সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুরের এমন ৯টি পরিবারের ব্যাঙ্ক-অ্যাকাউন্টে প্রথম দফার ক্ষতিপূরণের টাকা জমা দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে সম্প্রতি।
আরক্ষাকর্মীরা কর্তব্যরত অবস্থায় মাওবাদী হামলার শিকার হলে তাঁদের পরিজনেদের জন্য বিশেষ আর্থিক ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা ছিলই। দু’বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করে, এ বার থেকে মাওবাদী-হানায় নিহত সাধারণ নাগরিকের নিকটাত্মীয়রাও এককালীন ৩ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবেন। পশ্চিম
মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলে ২০০৮-এর শেষ দিক থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত মাওবাদী-হানায় নিহত সাধারণ নাগরিকের সংখ্যা দেড়শোরও বেশি।
এ ছাড়া নিখোঁজও রয়েছেন অন্তত পঞ্চাশ জন। দু’বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষতিপূরণ ঘোষণার পরেই জেলা প্রশাসন নিহতদের তালিকা তৈরি করে তথ্যপ্রমাণ-সহ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো শুরু করে। কিন্তু নানা কারণে সেই ক্ষতিপূরণ আর মিলছিল না। অবশেষে আপাতত ৯ জন নিহতের পরিজনের নামে ক্ষতিপূরণের টাকা এসে পৌঁছেছে জেলায়। প্রাপকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি সেই টাকা জমা করে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।
জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্তর বক্তব্য, “আমরা এখনও পর্যন্ত ৯ জন নিহতের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছি। সংশ্লিষ্টদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিয়ে দেওয়াও হয়েছে। যাঁরা এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি, তাঁরা যাতে দ্রুত ক্ষতিপূরণ পান সে জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
গোড়ায় ২১ জন নিহতের নামের তালিকা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠিয়েছিল জেলা প্রশাসন। তার পরে আরও কয়েক দফায় এখনও পর্যন্ত মোট ৯৭ জনের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে।
প্রথম বার তালিকা পাওয়ার পরে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, বাংলায় লেখা সুরতহাল রিপোর্ট নতুন করে ইংরাজিতে লিখে না পাঠালে দাবি বিবেচনা করা সম্ভব নয়। নিহতের প্রকৃত নিকটাত্মীয় কারা, কার নামে, কী ভাবে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হবে, কে প্রয়োজনীয় শংসাপত্র দেবেনএ সব নিয়েও তৈরি হয়েছিল
জটিলতা। মাস-বছর গড়িয়ে যায় সে-সব জট ছাড়াতেই। অবশেষে সেই জট কেটেছে।
প্রথম ধাপে যে ৯ জনের নামে ক্ষতিপূরণ-অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন শালবনির কনকলতা মাহাতো, নয়াগ্রামের চৈতালি সিংহ, ঝাড়গ্রামের কামিজ ফতেমা, বাসন্তী চালক, গড়বেতা-২ ব্লকের সুরেন্দ্রনাথ হাঁসদা, বৈদ্য মাসান্ত, কল্যাণী ঘোষ, সাঁকরাইলের ভারতী প্রধান ও বিনপুর-১ ব্লকের সুজাতা ঘোষ। এঁদের কারও স্বামী, কারও ছেলে মাওবাদী হামলায় নিহত হয়েছিলেন।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, যে ৯৭ জন নিহতের তালিকা এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয়েছে, তার মধ্যে ১২ জনের ক্ষেত্রে সংযোজিত নথিপত্র নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। জবাব সমেত নথিপত্র ফের পাঠানো হচ্ছে। মাওবাদী হানায় নিহত আরও ৬০ জনের একটি তালিকাও নতুন করে পাঠানো হচ্ছে দিল্লিতে। |
|
|
|
|
|