পূর্ব কলকাতা
চাপান-উতোর
বিপজ্জনক পারাপার
দায়িত্ব কার? তা নিয়েই চলছে চাপান-উতোর। ফলে সংস্কারের অভাবে জীর্ণ হয়ে পড়েছে বাগজোলা খালের উপরে লোহার সেতু। বাধ্য হয়ে এই বিপজ্জনক সেতু দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন।
ভিআইপি রোডের ধারে দমদম পার্কের ১২সি বাসস্ট্যান্ডের ঠিক পেছনেই বাগজোলা খালের উপরে রয়েছে এই সঙ্কীর্ণ লোহার সেতুটি। সেতুটি বাগজোলার দক্ষিণ পাড়ের ভিআইপি রোড ও উত্তর পাড়ের বাগজোলা স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মধ্যে যাতায়াতের জন্য প্রায় ৪০ বছর আগে তৈরি হয়। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন সেতুটির কোনও সংস্কার হয়নি। খালের উত্তর পাড়ে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাজার খানেক মানুষ সেতুটি ব্যবহার করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যে কোনও সময়ে সেতুটি ভেঙে পড়তে পারে। কিন্তু মেরামতির কোনও উদ্যোগ নেই।
মেরামতির অভাবে সেতুটির দমদম পার্কের দিকের অংশ ভেঙে গিয়েছে। ভাঙা জায়গায় পাটাতন ফেলে যাতায়াত চলছে। ভিআইপি-র দিকে বাগজোলার উপরে অংশ ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। সেতুর রেলিং ভেঙে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেতুতে উঠলে দুলতে শুরু করে।
তবুও তাঁরা সেতুটি ব্যবহার করেন কেন? বাসিন্দারার জানান, সেতুটি ব্যবহার না করলে প্রায় দেড় কিমি ঘুরে দমদম পার্ক হয়ে ভিআইপি রোডে উঠতে হয়। কয়েক সপ্তাহ আগে সেতু থেকে একটি শিশু খালে পড়ে যায়। বাগজোলা স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের এক কর্মী জানান, সেতুর অবস্থা এতই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে কিছু দিন আগে চাঁদা তুলে সামন্য সংস্কার করা হয়। এখনও অবস্থা শোচনীয়।
রাজারহাট গোপালপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সিপিএমের তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সেতু নিয়ে কোনও অভিযোগ পাইনি। খোঁজ নিয়ে দেখব। প্রয়োজনে সেচ বিভাগকে জানাব।” বাগজোলা স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অশোককুমার বিশ্বাসের বক্তব্য, “ব্রিজটির সংস্কার আমাদের দায়িত্ব নয়, সেচ বিভাগের।”
যদিও সেতুটির মেরামতি নিয়ে সেচ বিভাগের মধ্যেই দ্বন্দ্ব রয়েছে। সেচ বিভাগের মেট্রোপলিটন ড্রেনেজ ডিভিশন ২-এর এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সোমনাথ দেব বলেন, “সেতুটি সংস্কারের দায়িত্ব আমাদের নয়, ক্যানাল ডিভিশনের।” কিন্তু ক্যানাল ডিভিশনের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার মানস চক্রবর্তীর কথায়: “ওই সেতু সংস্কার আমাদের দায়িত্ব নয়। মেট্রোপলিটন ড্রেনেজ ডিভিশনের।”

ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ



অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.