|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা |
বাড়ছে ক্ষোভ |
জোড়াতালির সড়ক |
কাজল গুপ্ত |
অবশেষে রাস্তা মেরামতির কাজ শুরু করল বিধাননগর পুরসভা। আপাতত প্যাচওয়ার্ক, পরে পাকাপাকি ভাবে মেরামতির কাজ হবে বলে জানিয়েছেন পুরকর্তৃপক্ষ। কিন্তু রাস্তা নিয়ে বাসিন্দারা রীতিমতো ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, রাস্তা মেরামত
করার পরে দ্রুত তা খারাপ হয়। পুরসভার আর্থিক অবস্থা সন্তোষজনক নয় বলে পুরকর্তৃপক্ষই স্বীকার করেছেন। এই অবস্থায় দু’-তিন বছরের জন্য স্থায়ী ভাবে রাস্তা মেরামত নিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে না। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে পুরকর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদি ভাবে রাস্তা মেরামতির বিষয়ে ইতিমধ্যেই চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
এক দিকে বর্ষা, অন্য দিকে মেট্রো প্রকল্পের জেরে বিধাননগরের বিভিন্ন রাস্তার বেহাল দশা। এর মধ্যে অবশ্য সব ক’টি রাস্তায় পুরসভা মেরামতির কাজ করে না, কেএমডিএ এবং নগরোন্নয়ন দফতরও কয়েকটি রাস্তা সারাই করে। |
|
বর্ষার মরসুম শেষ হলে কাজ শুরু হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন বিধাননগর পুরকর্তৃপক্ষ। পিএনবি মোড় থেকে লাবণি মোড়, সিএ মোড় থেকে পূর্ত ভবনের মোড় সমেত ১, ২ ও ৩ নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন রাস্তার বেহাল দশা। রাস্তা ভেঙে, পিচ উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্ত হয়েছে। পাশাপাশি, মেট্রো প্রকল্পের জেরে বিদ্যাসাগর থেকে টানা উইপ্রো মোড় এবং আশপাশের এলাকার রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি করতে হয়। সব মিলিয়ে বিধাননগরের প্রতিটি সেক্টরের রাস্তারই কার্যত বেহাল দশা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই চলছে এই অবস্থা। যদিও আর্থিক অনটনের পাশাপাশি বর্ষার মরসুমের জেরে কাজ করা যায়নি বলেই পুরকর্তৃপক্ষের দাবি। পরে কাউন্সিলরদের কাছ থেকে ওয়ার্ডভিত্তিক বেহাল রাস্তার তালিকা চান পুরকর্তৃপক্ষ। তালিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলির মেরামতির জন্য টেন্ডার ডাকা হয়। বর্ষা থামতেই প্রাথমিক ভাবে রাস্তা মেরামতির কাজ শুরু হয় পুজোর আগেই।
এই প্রসঙ্গেই বাসিন্দাদের ক্ষোভ, অস্থায়ী মেরামত কেন? প্রতি বারই এমন ভাবে মেরামতির পরে কিছু দিনের মধ্যেই রাস্তা খারাপ হচ্ছে। কেন স্থায়ী পরিকল্পনা করা হচ্ছে না? এলাকার মানুষ থেকে শুরু করে গাড়ি চালকেরাও এই বেহাল রাস্তা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। |
|
যেমন, ইএ ব্লকের বাসিন্দা শ্যামলেন্দু ভৌমিক বললেন, “এত দিন বাদে পুজোর আগে দেখলাম কোনও মতে প্যাচওয়ার্কের কাজ চলছে। কিন্তু আবার তা খারাপ হবে। কেন যে দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা করা যায় না, কে জানে!”
বিধাননগরের মধ্যে দিয়েই রোজ কর্মসূত্রে পাঁচ নম্বর সেক্টরে যান খন্নার বাসিন্দা কনক চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়: “রাস্তার যেটুকু অংশে গর্ত কিংবা খারাপ হয়েছে, সেখানটা বোজানো হচ্ছে। কিন্তু গাড়ির চাপ অনেক। অস্থায়ী এই মেরামতি কত দিন টিকবে?” বাসিন্দাদের সংগঠন সল্টলেক ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, “রাস্তা মেরামতির পরে কিছু দিনের মধ্যেই তা খারাপ হয়। বাসিন্দাদের সমস্যা বাড়ছে ওই বেহাল রাস্তার জন্য। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের পাশাপাশি কেন স্থায়ী পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে না তা বোঝা দুষ্কর।”
অভিযোগের জবাবে বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (পূর্ত) অনুপম দত্ত বলেন, “পুরসভা একা বিধাননগরের সব রাস্তা মেরামত করে না। ফলে সমস্তটাই পুরসভার ঘাড়ে ফেলা ঠিক নয়।” তাঁর দাবি, পুরসভা যে সব রাস্তা সারাই করে তা তিন বছর ঠিক থাকে। কিন্তু তার মাঝে সরকারি কাজের জেরে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করতে হয়। পরে তা ঠিকও করা হয়। তবে রাস্তা স্থায়ী ভাবে মেরামতের জন্য টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই স্থায়ী ভাবে রাস্তা মেরামত করা হবে।
|
ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ |
|
|
|
|
|