|
|
|
|
ডেল্টা জুটমিল |
ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও মিলল না সমাধান সূত্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সাঁকরাইল |
ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও হাওড়ার সাঁকরাইলের মানিকপুরের ডেল্টা জুটমিলের সমস্যার সমাধান হল না। বেতন থেকে তিন বছর ধরে কেটে নেওয়া টাকা ফেরত না পাওয়ায় গত মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন এই জুটমিলের প্রায় চার হাজার শ্রমিক।
সমস্যা মেটাতে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর নির্দেশে শুক্রবার নব মহাকরণে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকেন রাজ্যের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার সুবল বিশ্বাস। বৈঠকে চটকলের ৯টি স্বীকৃত শ্রমিক সংগঠন এবং মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন।
শ্রম দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে মালিকপক্ষ জানিয়ে দেন, তাঁরা কেটে নেওয়া টাকার একটি কিস্তি নভেম্বর মাসে ফেরত দেবেন। সেই মর্মে তাঁরা বৃহস্পতিবার রাতে মিলে বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছেন বলে জানান। শ্রমিক সংগঠনগুলি পাল্টা দাবি করে, কোন পদ্ধতিতে টাকা ফেরত দেওয়া হবে সে বিষয়ে মালিকপক্ষকে স্পষ্ট করে জানাতে হবে। মিল কর্তৃপক্ষের তরফে তখন বলা হয় বিষয়টি লিখিত ভাবে দু’চার দিনের মধ্যে শ্রম কমিশনারকে জানিয়ে দেওয়া হবে। এ দিন কোনও সুনিশ্চিত আশ্বাস না-পাওয়ায় তাঁরা শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা বলতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শ্রমিক সংগঠনগুলির নেতারা।
২০০৬ সালে আর্থিক সঙ্কট চলাকালীন চটকল কর্তৃপক্ষ একটি ইউনিটের শ্রমিকদের বেতন থেকে প্রতিদিন ২৫ টাকা করে এবং অন্য একটি ইউনিটের শ্রমিকদের বেতন থেকে প্রতিদিন ১৫ টাকা করে কেটে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। শ্রমিকেরা ওই প্রস্তাবে রাজি ছিলেন। কথা ছিল, তিন বছর ধরে এই ভাবে বেতন কেটে নেওয়া হবে। তিন বছর পর থেকে ফের একই ভাবে কেটে নেওয়া টাকা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের ফিরিয়ে দেবেন। কিন্তু মেয়াদ কেটে যাওয়ার প্রায় দু’বছর পরেও যে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছিল তা ফেরত দেওয়া হয়নি বলে শ্রমিকদের অভিযোগ। তা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে কারখানার দু’টি ইউনিটের প্রায় চার হাজার শ্রমিক মঙ্গলবার থেকে কাজ বন্ধ করে দেন। উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়ে মালিকপক্ষ রাজ্যের শ্রমমন্ত্রীকে চিঠি দেন।
কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে পথিক বক্সি বলেন, “আমরা দু’চার দিনের মধ্যেই শ্রম কমিশনারকে লিখিত ভাবে জানিয়ে দেব কী পদ্ধতিতে কেটে নেওয়া টাকা ফেরত দেব।” চটকল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চিঠি পাওয়ার পরেই ফের বৈঠক ডাকা হবে বলে শ্রম কমিশনারের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। কারখানার আইএনটিইউসি নেতা মোশারফ মোল্লা বলেন, “কর্তৃপক্ষের টালবাহানার ফলেই এ দিনের বৈঠকে কোনও সমাধান সূত্র পাওয়া গেল না। সুনিশ্চিত আশ্বাস না পাওয়ার জন্য শ্রমিকদেরও আমরা কাজ করার কথা বলতে পারছি না।” একই বক্তব্য অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনগুলিরও। কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ দিনও জানিয়েছেন, কারখানায় ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ বা ‘লক-আউট’-এর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে না। শ্রমিকেরা চাইলেই কাজে যোগ দিতে পারেন। কাজে যোগ দেওয়ার পরে সমস্যা সমাধানে শ্রমিকেরা তাঁদের সঙ্গে আলোচনাও করতে পারেন। |
|
|
|
|
|