অম্বালায় ৫ কেজি আরডিএক্স ভর্তি গাড়ি উদ্ধার করেও শান্তি নেই! আগামী বছরের গোড়ায় পঞ্জাবে বিধানসভা ভোট। তার আগে নতুন করে মাথাচাড়া দিতে বব্বর খালসার মতো শিখ জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি বড়সড় হামলার ছক কষছে বলে গোয়েন্দারা আশঙ্কা করছেন। তাদের সঙ্গে রয়েছে, লস্কর-ই-তইবা। পঞ্জাব পুলিশের ডিজি-ই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে জানান, ভোটের সময় মুখ্যমন্ত্রী, শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা, আমলা বা ডেরা সচ্চা সৌদা, রাষ্ট্রীয় শিখ সঙ্গত ও আরএসএসের মতো সংগঠনের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রাণনাশের চেষ্টা হতে পারে।
পঞ্জাবে নতুন করে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে জনবহুল এলাকায় বড় মাপের বিস্ফোরণের চেষ্টাও চলছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষকর্তারা জানান, বব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনাল, খলিস্তান জিন্দাবাদ ফোর্স, ইন্টারন্যাশনাল শিখ ইয়ুথ ফেডারেশন ও নতুন তৈরি খলিস্তান টাইগার ফোসের্র মতো দলগুলির উপর চাপ তৈরি করছে আইএসআই। পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর দীর্ঘদিন ধরেই ওই দলগুলিকে মদত দিচ্ছে। অম্বালা ক্যান্টমেন্ট স্টেশনে যে বিস্ফোরক আটক হয়, তা দিয়ে দিল্লিতে নাশকতার চক্রান্তও করেছিল লস্কর ও বব্বর খালসা। অম্বালা-কাণ্ডের পর আজ দিল্লি, মুম্বই-শহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিতে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। গোয়েন্দারা জানান, এর আগেও উত্তরপ্রদেশ-নেপালের মধ্যে শিখ জঙ্গিদের যাতায়াতের তথ্য মিলেছে। নেপাল থেকে আসা ফোনের সূত্রেই অম্বালায় বিস্ফোরকের হদিস মিলেছে। এ ছাড়া গোয়া-মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যেও শিখ জঙ্গিদের উপস্থিতি টের পাওয়া গিয়েছে। দিল্লির মতো মুম্বইয়েও জঙ্গিরা হাত মিলিয়ে হামলার চেষ্টা করতে পারে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, গত এক দশক ধরেই পঞ্জাবে নতুন করে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে আইএসআই। বব্বর খালসা, খলিস্তান জিন্দাবাদ ফোর্স, ইন্টারন্যাশনাল শিখ ইয়ুথ ফেডারেশনের জঙ্গিরা সীমান্তপারের শিবিরে প্রশিক্ষণও পাচ্ছে। এ বার জম্মু-কাশ্মীর ও পঞ্জাবের আন্তর্জাতিক সীমান্তের বিভিন্ন ফাঁকফোকর নিয়ে মাথা ঘামাতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তাদের হিসেবে, ওই সীমান্তের ২০০টি জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে গিয়েছে। ওই জায়গা দিয়ে অনুপ্রবেশ চলছে। তা রুখতে দ্রুত বেড়া তৈরির বরাত দেওয়ার কাজ মেটাতে চাইছে কেন্দ্র।
গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, বব্বর খালসার প্রধান ওয়াধয়া সিংহ পাকিস্তানেই লুকিয়ে রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে দলের আর এক পাণ্ডা মেহল সিংহ। কানাডা ছাড়াও ইউরোপ-উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশেও বব্বর খালসার সদস্যরা শিখ সন্ত্রাসবাদের ‘পুনরুজ্জীবনের’ চেষ্টা করছে। ফের খলিস্তানের জিগির তুলেই সমর্থন জোটানোর চেষ্টা করছে তারা। ১৯৯৩-এ দিল্লিতে যুব কংগ্রেসের সদর দফতরের বাইরে বিস্ফোরণে অভিযুক্ত দেবেন্দ্র পাল সিংহ ভুল্লারের মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করেও তারা শিখদের মধ্যে সহানুভূতি আদায় করতে চাইছে। ১৯৮৫-র এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে বিস্ফোরণ, ১৯৯৫-এ পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী বিয়ন্ত সিংহকে হত্যা করে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল তারা। নতুন করে মাথাচাড়া দিতে বিধানসভা ভোটের সময় সেই পুরনো রাস্তাই ধরতে চাইছে তারা। |