ফের যাত্রী-দুর্ভোগ
ব্যাটারি-বাক্সে আগুন, চার ঘণ্টা ট্রেন আটক
ক সপ্তাহে তিন বার! দূরপাল্লার রেলযাত্রায় যেন রাহুর দশা চলছে!
গত সোমবার রাতে অবৈধ যাত্রীদের দখলদারিতে হাওড়ামুখী তিরুঅনন্তপুরম-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস এবং করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যাত্রীদের প্রাণান্তকর অবস্থা হয়েছিল বিশাখাপত্তনম স্টেশনে। রিজার্ভেশনের টিকিট নিয়েও তাঁদের জানলা দিয়ে সংরক্ষিত কামরায় কামরায় ঢুকতে হয়। বুধবার কিষাণগঞ্জে অবরোধের জেরে অবর্ণনীয় দুর্দশায় পড়তে হয়েছে হাজারো ট্রেনযাত্রীকে।
আর তার রেশ না-কাটতেই এ বার বিভ্রাটের শিকার হলেন আপ বেঙ্গালুরু-গুয়াহাটি (ভায়া হাওড়া) এক্সপ্রেসের আরোহীরা। শুক্রবার দুপুরে পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখায় বারুইপাড়ার কাছে গুয়াহাটিমুখী ট্রেনটির একটি বাতানুকূল কামরার ব্যাটারি-বাক্সে আগুন ধরে যায়। প্রচণ্ড ধোঁয়ায় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ট্রেন থামিয়ে দেওয়া হয়। আগুন নিভিয়ে ট্রেন যখন ফের চলতে শুরু করে, ততক্ষণে প্রায় চার ঘণ্টা দেরি হয়ে গিয়েছে। রোদে-গরমে নাজেহাল হয়ে পড়েছেন যাত্রীরা।
আগুন লাগা কামরা খতিয়ে দেখছেন রেলের আধিকারিকেরা।
১২৫০৯ আপ বেঙ্গালুরু-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস এ দিন হাওড়া স্টেশন ছেড়েছিল সকাল ১১টা ২০ মিনিটে। বেলা বারোটায় বারুইপাড়া ছাড়ানোর পরে নজরে আসে, বাতানুকূল দ্বিতীয় শ্রেণির (এ-১) একটা কামরার দরজার তলা থেকে বিপুল ধোঁয়া আর আগুনের ফুলকি বার হচ্ছে। এক টিকিট পরীক্ষক সঙ্গে সঙ্গে চেন টানেন। বারুইপাড়া ও মির্জাপুর-বাঁকিপুর স্টেশনের মাঝে শ্যামপুরের কাছে ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়। ধরা পড়ে, কামরাটির ব্যাটারি-বাক্সই হল ধোঁঁয়া-আগুনের উৎস।
আচমকা এ হেন কাণ্ডে যাত্রীদের মধ্যে ত্রাস ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে মালপত্র সমেত নীচে নেমে আসেন। ট্রেনে ‘আগুন লাগার’ খবর শুনে দলে দলে গ্রামবাসী এসে ভিড় জমান। রেলের কন্ট্রোল ও দমকলে বার্তা যায়। রেল অফিসার-ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে রেল পুলিশ ও জেলা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আসে দমকলের দু’টো ইঞ্জিনও। যদিও তার আগেই ট্রেনের গার্ড তাঁর কামরায় রাখা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলেছেন।
এই ঘটনায় যাত্রীদের কোনও ক্ষয়ক্ষতি না-হলেও ভোগান্তি হয়েছে বিস্তর। ক্ষতিগ্রস্ত কামরার বৃদ্ধা যাত্রী অর্পিতা গোস্বামীর কথায়, “হঠাৎ ধোঁয়া দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ট্রেন থামতেই বাক্স-প্যাঁটরা নিয়ে নেমে পড়ি।” কামরার আর এক যাত্রী রাজেশ শোবানির অভিযোগ, “বাইরে চড়া রোদ। মাঝরাস্তায় ট্রেন দাঁড়িয়ে যাওয়ামাত্র হকারেরা খাবারদাবারের জন্য বেশি বেশি দাম হাঁকতে লাগলেন।” ট্রেনের মধ্যে জলের জোগানও পর্যাপ্ত ছিল না বলে যাত্রীদের অভিযোগ।
ট্রেন আবার চলল কখন?
পুড়ে যাওয়া কামরার অংশ।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীর গোস্বামী জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত কামরাটিকে ট্রেন থেকে আলাদা করে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে হাওড়া থেকে বাতানুকূল দ্বিতীয় শ্রেণির একটা কামরা এনে ট্রেনে জুড়ে যাত্রীদের তাতে তোলা হয়। এত সব সেরে বিকেল ৪টে ২০ মিনিটে ফের গুয়াহাটির দিকে রওনা দেয় বেঙ্গালুরু-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস।
ক্ষতিগ্রস্ত কামরাটিকে তদন্তের জন্য হাওড়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ছবি: দীপঙ্কর দের।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.