কিষাণগঞ্জ নিয়ে দীনেশের সঙ্গে সংঘাতে নীতীশ
বিহারের কিষাণগঞ্জে বিক্ষোভ মিটলেও ওই ঘটনাকে ঘিরে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর মূল দ্বন্দ্ব এখন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদীর সঙ্গে।
কেন?
প্রথমত, বুধবার যে ভাবে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল নেতারা কিষাণগঞ্জে গিয়ে আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেন, তাতে ক্ষুব্ধ নীতীশ কুমার।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী মনে করছেন, ওই ঘটনা প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত। কেন পার্শ্ববর্তী রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীরা বিহারের স্থানীয় বিষয় নিয়ে আন্দোলন করবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিহার বিধান পরিষদের নীতীশ-ঘনিষ্ঠ নেতা সঞ্জয় ঝা। তাঁর বক্তব্য, “আমরা এখন যদি সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম প্রশ্নে আন্দোলন শুরু করি, তাহলে সেটা কি ঠিক হবে?”
আগামিকাল কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনারদের বৈঠকে নিজের বক্তব্য রাখতে দিল্লি আসার কথা নীতীশ কুমারের। তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গেও আলোচনা করতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনও আন্দোলনে ইউপিএ-র শরিক দলের নেতারা অন্তত তাঁর রাজ্যে আন্দোলনের পথে না নামেন, সেটা প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে বলবেন তিনি। যদিও তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য, বিষয়টি এ ভাবে দেখা উচিত নয়। কিষাণগঞ্জে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটি হলে বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের উপকার হবে। বৃহত্তর স্বার্থে ওই আন্দোলনকে সমর্থন করা হয়েছে। তবে যে ভাবে সাধারণ মানুষের অসুবিধা করে আন্দোলন চালানো হয়েছে তার নিন্দা করেছেন দলীয় নেতৃত্ব।
উপরন্তু বুধবার বিহারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে বিহারের রাজ্যপালকে ফোন করেছিলেন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। তাতেও বিস্তর চটেছেন নীতীশ। রেল মন্ত্রকের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় যথাযথ পদক্ষেপ না করায় নীতীশ কুমারকেই দায়ী করা হয়েছে। সে দিন কিষাণগঞ্জে অবরোধ শুরু হলে নীতীশ কুমারেরই দ্বারস্থ হয়েছিলেন দীনেশ। অবরোধ ওঠাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য রেলমন্ত্রী ব্যক্তিগত ভাবে অনুরোধ করেন নীতীশকে। কিন্তু তাঁর অক্ষমতার কথা দীনেশকে তখনই জানিয়ে দেন নীতীশ। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি ছিল, বিষয়টির সঙ্গে স্থানীয় মানুষের ভাবাবেগ জড়িয়ে রয়েছে। তা ছাড়া তিনি দীনেশকে জানান, ওই বিক্ষোভে স্থানীয় কংগ্রেস সাংসদ ছাড়াও তৃণমূলের কিছু নেতা, বিধায়ক এমনকী মন্ত্রী পর্যন্ত রয়েছেন। জোর করে অবরোধ ওঠাতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে সংযত থাকার সিদ্ধান্ত নেয় বিহার সরকার। নীতীশ বরং রেলমন্ত্রীকেই অনুরোধ করেন, তৃণমূল যেন তাদের নেতাদের ওই আন্দোলন থেকে সরিয়ে নেয়। সঞ্জয় ঝা এ দিন অভিযোগ করেন, “তৃণমূল নেতৃত্ব দলীয় নেতাদের আন্দোলন থেকে সরে আসতে তো বলেনইনি। উপরন্তু অবরোধ না তোলার জন্য নীতীশ কুমারের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন।”
তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য মনে করছেন, নামে কংগ্রেসের আন্দোলন হলেও সে দিনের বিক্ষোভের পিছনে মূল মাথা ছিলেন নীতীশই। তৃণমূলের অভিযোগ, ওই ঘটনার আগের দিনই লালকৃষ্ণ আডবাণীর রথযাত্রার সূচনা করেছিলেন নীতীশ। ফলে তাঁর ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি বজার রাখার জন্য পরের দিন সংখ্যালঘুদের আন্দোলনকে পরোক্ষ ভাবে সমর্থন করেন নীতীশ। তাই ওই বিক্ষোভ তোলার কোনও চেষ্টা করেননি তিনি।
তৃণমূলের ওই অভিযোগ মানতে চায়নি জেডিইউ শিবির। বরং নীতীশ ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, সে দিনের আন্দোলনের পিছনে বিহার কংগ্রেসের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের গ্রন্থাগার মন্ত্রী তৃণমূলের আব্দুল করিম চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, “আমাদের দলের নেতারা ঘটনাস্থলে থাকলেও পরে যাত্রীদের কথা ভেবে তাঁরা চলে আসেন।” আবার দলের একাংশ এ-ও বলছেন, রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা সংখ্যালঘু রাজনীতি করতে কিষাণগঞ্জ পৌঁছে যাওয়ায় তৃণমূল নেতৃত্বকে বাধ্য হয়েই সেখানে যেতে হয়। তবে আজ জেডিইউ সূত্রে এ কথাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, এই ঘটনার ফলে নীতীশ কুমার ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে ব্যক্তিগত সুসম্পর্কে কোনও প্রভাব পড়বে না। সেখানে কোনও সংঘাত নেই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.