কর্মরত স্কুলশিক্ষকদের মধ্যে যাঁদের বিএড ডিগ্রি নেই, ২০১৫ সালের মধ্যে তাঁদের ওই ডিগ্রি পেতেই হবে বলে জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের স্কুলশিক্ষা বিভাগের অধিকর্তা বিক্রম সহায় কলকাতায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের এক কর্মশালায় এ কথা জানান।
ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই)-এর নিয়মানুযায়ী, বিএড পড়তে হলে স্নাতক স্তরে ন্যূনতম ৫০% নম্বর থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু এ রাজ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় বসার জন্য এই রকম নম্বরের বাধ্যবাধকতা নেই। ফলে যে সব কর্মরত শিক্ষকের বিএড ডিগ্রি নেই, তাঁদের অনেকেরই স্নাতকে ৫০% নম্বর নেই। এখন এই শিক্ষকরা কী ভাবে বিএড পাঠ্যক্রমে ভর্তি হবেন, তা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে।
এ রাজ্যে স্কুলের শিক্ষকতার জন্য বিএড ডিগ্রি থাকাটা এখনও বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু এনসিটিই-র সিদ্ধান্তে আগামী দিনে তা বাধ্যতামূলক হচ্ছে। রাজ্যের স্কুলশিক্ষা সচিব বিক্রম সেন এ দিন জানান, এই শিক্ষকদের জন্য স্নাতকে ন্যূনতম নম্বরের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানানো হবে।
তাঁর কথায়, “২০০৯ সাল থেকেই শিক্ষকদের বিএড বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ জন্য ইতিমধ্যেই কর্মরতদের বিএড করানো হচ্ছে।”
এ দিন কর্মশালার পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় শিক্ষাকর্তা বিক্রম সহায় বলেন, “২০০১ সালের ৩ সেপ্টেম্বরের পরে যাঁরা স্কুলে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের ২০১৫ সালের মধ্যে বিএড ডিগ্রি অর্জন করতেই হবে।” তবে কেন্দ্রের এই নির্দেশ মেনে কর্মরত শিক্ষকদের পক্ষে বিএড করা যে খুব সহজ হবে না, শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের অনেকেই সে কথা মানছেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও বাণিজ্য বিভাগের প্রাক্তন সচিব (শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজগুলির দায়িত্বেও ছিলেন) ধূর্জটিপ্রসাদ দে বলেন, “স্নাতকে ন্যূনতম ৫০% নম্বর না থাকায় কর্মরত অনেক শিক্ষকই বিএড করার সুযোগ পাননি।
এখন কেন্দ্র কোনও ছাড় না দিলে ওই শিক্ষকদের বিএড করা মুশকিলই হবে।”
এ ব্যাপারে সরকার কী ভাবছে?
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “কর্মরত শিক্ষকদের বিএড করার ব্যাপারে কোনও চিঠি এখনও পাইনি। আগে সেটা পাই, তার পরে বিবেচনা করব।”
এ দিকে, এনসিটিই-র নিয়ম মেনে এখনই স্নাতকে ন্যূনতম ৫০% নম্বর পাওয়া এবং বিএড ডিগ্রিধারী ছেলেমেয়েদের স্কুল শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা কার্যত অসম্ভব বুঝে আগামী তিন বছর এই নিয়মে ছাড় দেওয়ার জন্য ওই সংস্থার কাছে আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ২০১৪ পর্যন্ত এই দুই ক্ষেত্রে রাজ্যকে ছাড় দিয়েছে এনসিটিই। ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিএড ডিগ্রি ছাড়া শিক্ষক নিয়োগ করা যাবে বলে আগেই জানিয়েছিল এনসিটিই। ওই সময় পর্যন্ত স্নাতকে ন্যূনতম নম্বরের ব্যাপারেও ছাড় দেওয়া হবে বলে এ দিন জানিয়েছেন বিক্রম সহায়। |