|
মফসসলে বেড়ানোয়
ভরসা পড়শি-ব্যবসায়ী
নিজস্ব সংবাদদাতা • নবদ্বীপ
|
|
বেড়াতে যাওয়া শুরু হয়ে যায় বেড়াতে যাওয়ার কথা ভাবার সময় থেকেই। নতুন জায়গা যাওয়ার আগে সেই জায়গার কথা ভাবতে ভাবতেই শুরু হয়ে যায় সেখানে পৌঁছনোর প্রস্তুতি। আর সেই অনুষঙ্গেই উল্টে চলে ইতিহাসের নানা পাতা। পরিচিত সংস্কৃতি থেকে অন্য সংস্কৃতিতে যাতায়াতের এই মনের ভ্রমণটাই তখন মুখ্য হয়ে ওঠে।
সমাজবিজ্ঞানের গবেষক বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত বলেন, “সেই জায়গা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে নানা সূত্র থেকে মানুষের একটা ধারণা তৈরি হয়, যা সত্যি হতেও পারে, না-ও হতে পারে। সেই আলো ছায়ার কাহিনিটাই মানুষকে আকর্ষণ করে। সে তাই নতুন সংস্কৃতির স্বাদ পেতে চায়। সেই স্বাদ তাকে নতুনত্বের সন্ধান দেয়। সেটা মনে থেকে যায়।’’
পাহাড় ঘুরে আসার পরে কান্তি বসু বলেন, “আমি পাহাড়ের ছবি দেখেছি। পাহাড় সম্বন্ধে সারা জীবন অনেক শুনেছি। কিন্তু নিজের চোখে না দেখলে হিমালয়ের বিশালত্বের ধারণা তৈরি হত না। নিজের চোখে দেখলে তীর্থস্থানের নোংরা যেমন চোখে পড়ে, তেমন কোনও মানুষের অকুণ্ঠ ভক্তিও চোখে পড়ে। দুই মিলে তৈরি হয় জায়গাটার চরিত্র।” তাই তিনি ঠিক করেছেন পরের ছুটিতে আবার হিমালয়েই যাবেন। আবার সকলেই যে ঐতিহাসিক জায়গা বা তীর্থক্ষেত্রে যান তা নয়। বারাসত কলেজের শিক্ষক দেবজ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, “ইকোটুরিজমও এখন পছন্দের তালিকায় ঢুকে পড়েছে। অনেকে চান শুধু অরণ্যেই যেতে।” সেই পথেও ব্যবসা বাড়াচ্ছেন ছোট পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সেই যাওয়াটা যেন চিন্তামুক্ত হয়। মফসসলের পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, অনেকেই বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে চেনাজানা লোকের উপরেই নির্ভর করেন। তাই যে শহরে তিনি থাকেন, সেখানকার চেনাজানা ছেলেরা যদি পর্যটন ব্যবসা শুরু করে, তা হলে তাদের সঙ্গে যেতে বাধা থাকে না পরিবারের। তাতে টাকাও কম লাগে, চিন্তাও কমে। কনক মুখোপাধ্যায় বলেন, “যাদের সঙ্গে গিয়েছি, তাদের সকলকেই চিনি। তাই আমার বাড়ি থেকেও ছেলেরা আমাকে যেতে দিয়েছে। টাকাও কম লেগেছে।” নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উত্তম সাহা বলেন, “পর্যটন ব্যবসা এখন বেশ জমজমাট। ছোট শহরের ছেলেরা তার সুযোগ নিয়ে খুবই সাফল্য পাচ্ছে। সামগ্রিক ভাবেই তা অর্থনীতির পক্ষে উপকারী।”
এই অবস্থায় পর্যটক ব্যবসায়ীরাও ভ্রমণার্থীদের জন্য নিজেরা পাঠ নিয়ে নিচ্ছেন। যে তরুণেরা এই ব্যবসায় এসেছেন, তাঁরা তাই ভ্রমণের সঙ্গে জ্ঞানচর্চার নিবিড় সম্পর্ক খুঁজে পাচ্ছেন। |