|
|
|
|
ছেলে ভ্রমণে |
তালা ভেঙে বৃদ্ধাকে বের করলেন পড়শিরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
তালাবন্ধ গ্রিলের দরজার পিছন থেকে চিৎকার করে পড়শিদের ডাকছিলেন বৃদ্ধা। শুক্রবার দুপুরে আসানসোলের শ্রীপল্লিতে সেই ডাকাডাকি শুনে প্রতিবেশীরা যেতে ইলা গঙ্গোপাধ্যায় নামে ওই বৃদ্ধা অভিযোগ করেন, ছেলে-বৌমা তাঁকে বাড়িতে তালাবন্ধ করে বেড়াতে চলে গিয়েছেন।
দু’দিন তিনি মুড়ি ও বিস্কুট খেয়ে কাটিয়েছেন। এলাকার লোকজনই তালা ভেঙে তাঁকে বের করে আনেন। শারীরিক দুর্বলতা থাকায় তাঁকে আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সন্ধ্যায় তাঁর ছেলে অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় ফিরলেও এ নিয়ে তিনি কোনও কথা বলতে চাননি। |
|
নিজের বাড়িতে ইলাদেবী। নিজস্ব চিত্র। |
বিকেলে হাসপাতালে শুয়ে বৃদ্ধা জানান, তাঁর বয়স প্রায় আশি। স্বামী সন্তোষ গঙ্গোপাধ্যায় ইস্কোর কর্মী ছিলেন, বছর কয়েক আগে মারা গিয়েছেন। তাঁদের তিন ছেলের মধ্যে বড় গৌতম বাবার বদলে ইস্কোয় চাকরি পেয়েছেন। সস্ত্রীক অন্যত্র থাকেন। মেজো ছেলে উত্তম ছোটখাটো ব্যবসা করেন। তিনিও আলাদা থাকেন। সন্তোষবাবুর তৈরি করা দোতলা বাড়িতে স্ত্রী ও ১২ বছরের ছেলেকে মায়ের সঙ্গে নিয়ে থাকেন শুধু তাঁর ছোট ছেলে, স্থানীয় একটি দোকানের কর্মচারী অনির্বাণ।
ইলাদেবীর কথায়, “বুধবার ওরা আমায় তালাবন্ধ করে রেখে চলে যায়। কোনও রকমে মুড়ি-বিস্কুট খেয়ে কাটিয়েছি।” বৃদ্ধার মুখে তাঁর দুরবস্থার কথা শুনে পাড়ার লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। স্থানীয় বাসিন্দা বাবন বন্দ্যোপাধ্যায়, রেবা রায়, অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়দের ক্ষোভ, “ভাবতেই পারছি না, কোনও সন্তান বৃদ্ধা মাকে এ ভাবে গৃহবন্দি করে চলে যেতে পারে।”
সন্ধ্যায় অনির্বাণবাবুরা বাড়ি ফেরেন। তখনও এলাকায় যথেষ্ট উত্তেজনা থাকায় পুলিশ তাঁকে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে রাখে। পুলিশকে অনির্বাণবাবু জানান, তাঁরা তারাপীঠে বেড়াতে গিয়েছিলেন। মা-কে তালাবন্ধ করে গিয়েছিলেন? অনির্বাণবাবু পাল্টা বলেন, “পাড়ার লোকেরাই তো তালা ভেঙেছেন শুনলাম। আমাকে আর জিজ্ঞাসা করছেন কেন?” |
|
|
|
|
|