|
|
|
|
চিঠি দেবেন প্রধানমন্ত্রীকে |
রেল অবরোধ রুখতে নয়া আইন চান দীনেশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা খুলতে দেরি হচ্ছে, সবার আগে অবরোধ করো রেল লাইন।
স্বাধীন রাজ্য তেলেঙ্গানা দিতে কেন্দ্র গড়িমসি করছে, আগে গিয়ে ট্রেন আটকাও।
জাঠদের সংরক্ষণ চাই, না দিলেই গরু-মোষ নিয়ে এসে রেললাইনের উপরেই খাটাল খুলে ফেলো।
গোটা দেশে যার যা চাই না পেলেই রেল আটকে, লাইন উপড়ে, স্টেশনে হামলা চালিয়ে বিক্ষোভ করার এই চিরাচরিত রেওয়াজ নিয়ে রীতিমতো তিতিবিরক্ত রেলমন্ত্রক। রেল ও যাত্রীদের হয়রানি রুখতে এ বার কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে মন্ত্রক।
স্থানীয় আন্দোলন বা বিক্ষোভের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক না থাকা সত্ত্বেও কেন বারবার ভুগবেন যাত্রীরা? প্রধানমন্ত্রীর দরবারে এই প্রশ্নগুলি রাখতে চাইছেন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। তাঁর সওয়াল, সন্ত্রাসবাদীরা সাধারণ মানুষকে পণবন্দি করে রাখলে তাদের ‘হাইজ্যাকার’ বলা হয়ে থাকে। তা হলে ট্রেনের কয়েক হাজার যাত্রীকে এত ক্ষণ ধরে আটকে রাখলেন যে আন্দোলনকারীরা, তাঁদের কী বলা হবে? দীনেশের কথায়, “কিষাণগঞ্জের গত কালের ঘটনা এক কথায় সন্ত্রাসের নামান্তর। এই ভাবে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে ফেলার অধিকার কারও নেই।” কিষাণগঞ্জের ঘটনায় একটি এফআইআর দায়ের করেছে রেল। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের একটি সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ওই এফআইআরে কিষাণগঞ্জের সাংসদ আসসারুল হক-সহ ১৪ জনের নাম রয়েছে। আসরারুল ছাড়াও কিষাণগঞ্জ ও সংলগ্ন এলাকার বেশ কয়েক জন বিধায়কের নাম এফআইআরে রয়েছে বলে সূত্রটির দাবি।
যদিও কিষাণগঞ্জ কোনও বিক্ষিপ্ত ঘটনা নয়। প্রতি মাসেই বিভিন্ন স্থানে রেল অবরোধে চরম ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয় মানুষকে। বিক্ষোভ-অবরোধে জেরবার রেল মন্ত্রক এখন চাইছে, এই ধরনের আন্দোলনের বিরুদ্ধে কড়া আইন প্রণয়ন করুক কেন্দ্র। যাতে রেললাইন অবরোধ করে যারা রেলের সম্পত্তি নষ্ট এবং যাত্রীদের হয়রানি করবে, সংশ্লিষ্ট সেই দল বা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি রেল পুলিশের হাতে আরও ক্ষমতা দেওয়ার দাবি জানিয়ে সরব হয়েছে রেল মন্ত্রক। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি সমস্ত রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বকেও চিঠি দিয়ে এ ধরনের ‘ধ্বংসাত্মক’ আন্দোলনের চাঁইদের বহিষ্কারের দাবি জানাবেন দীনেশ।
রেলযাত্রীদের হয়রানি রুখতে সলতে পাকানোর কাজটা অবশ্য শুরু করেছিলেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রিত্বের শেষ দিকে একের পর এক মাওবাদী হামলা-অবরোধে ভুগতে হয়েছিল তাঁকে। সে সময় প্রায়শই মাওবাদীরা বন্ধের ডাক দিত। যাতে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল রেল পরিচালন ব্যবস্থা। এছাড়া তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠন বা জাঠদের সংরক্ষণের প্রশ্নেও একাধিক বার সমস্যায় পড়তে হয় তাঁকে। সে সময়ে সংসদে দেওয়া একটি তথ্যে মমতা জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন অবরোধ ও বিক্ষোভের কারণে ট্রেন চলাচল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রায় পাঁচশো কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে তাঁর মন্ত্রক। তিনি রেলমন্ত্রী থাকাকালীনই একটি কড়া আইন তৈরির বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছিলেন। এখন সেই পথে হাঁটতে চলেছেন দীনেশও। |
|
|
|
|
|