মা দুর্গার বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গেই আম-বাঙালিরও আর ঘরে মন টেকে না। কোথাও না কোথাও বেড়াতে
যাওয়া চাই। তাতে হাত ধরে থাকে বাণিজ্য এবং জ্ঞানচর্চা। তারই বিভিন্ন দিক নিয়ে এই প্রতিবেদন। |
সুস্থ প্রতিযোগিতা বাণিজ্যের সুস্বাস্থ্যের ইঙ্গিত বলেই মনে করেন ব্যবসায়ীরা। তাই প্রতিযোগিতাকে ভয় নয়, বরং প্রতিযোগিতাতেই ভরসা রাখেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
কথাটা খোলসা করে বলেন এক ব্যবসায়ী। তাঁর বক্তব্য, আসলে পর্যটকের কোনও অভাব নেই। কিন্তু ছোট ছোট শহরের ছোট ছোট পর্যটন ব্যবসায়ীরাও যে ভাল ভাবেই ইচ্ছে মতো জায়গা থেকে তাঁদের ঘুরিয়ে আনতে পারেন, সেই ভরসাটা তৈরি করাই এখন সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। ছোট পর্যটন ব্যবসায়ীরা যে ব্যবস্থা করেন, তাতে খরচ থাকে সাধ্যের মধ্যে এবং আরাম থেকে বঞ্চিত হতে হয় না, সে কথাটা সাধারণ পর্যটকদের বিশ্বাস করানোটাই প্রধান কথা। তাঁর দাবি, বেশিরভাগ বাঙালি পর্যটকই চান নিজেরাই ব্যবস্থা করে কোথাও বেড়াতে যেতে। সেখানে এই ছোট ছোট পর্যটন সংস্থাগুলি যত বেশি থাকবে, তত তাদের কথা লোকে জানবেন, তারপর ভরসাও করবেন।
বৈদ্যুতিন মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে পর্যটনে লগ্নি করার সূচনা পর্ব থেকে এই ব্যবসা করছেন বাসুদেব চৌধুরী। তাঁর কথায়, “স্টেশনে না গিয়েই ট্রেনের টিকিট কাটা যায়, এমনটা আগে কেউ বিশ্বাস করতেন না। এখন সেটা বিশ্বাস করছেন কারণ প্রতিযোগিতা। সব শহরে ছোট ছোট এমন অজস্র দোকান রয়েছে, যারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে টিকিট কেটে দেয়। সেই দেখে দেখে মানুষের বিশ্বাস জন্মেছে।” তেমনই ছোট ছোট পর্যটন ব্যবসায়ীরাও যে কাশ্মীর থেকে অসম, কেরল থেকে আন্দামান নিয়ে যেতে পারে, তা-ও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠছে। অনেকে যাচ্ছেন অরণ্যে বেড়াতে। কেউ চান সমুদ্র। কোনও ব্যবসায়ী বড় দল নিয়ে যাচ্ছেন দূরপাল্লার ভ্রমণে কেউ বা ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন একটি বা দু’টি পরিবারের কাছাকাছি কয়েকদিন একটু বিশ্রামের। কিন্তু তাঁদের মূল কথা সব সময়তেই হল ছোট বাজেটের সঙ্গে তাল মেলানো।
একটি পর্যটন সংস্থার মালিক সুমনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ছোট পর্যটন ব্যবসায়ীরা শুরুটা করেন নিজের চেনাজানা ছোট গণ্ডিটা থেকেই। এই ব্যবসায় পরিষেবা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ততটাই গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার সুনাম। যাঁরা বেড়াতে যান, তাঁরাই ফিরে এসে যে কথা বলেন, তাতেই মানুষ বেশি বিশ্বাস করে।” শুক্রবারই ২০ জনের একটি দল নিয়ে তিনি বেরিয়ে পড়ছেন হরিদ্বার-কেদারনাথ-বদ্রিনাথ। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিবারই নতুন কিছু শুনি, নতুন কিছু দেখি। এই ব্যবসায় অভিজ্ঞতাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটা কাজে লাগে পরের বার।”
সমররঞ্জন মজুমদার সম্প্রতি ৬০ জনের একটি দল নিয়ে অমরনাথ কাশ্মীর ঘুরে এলেন। তিনি বলেন, “আমরা গিয়েছি শ্রীনগর, পহেলগাঁও, বৈষ্ণোদেবী, অমরনাথ।” তাঁর কথায়, “আমরা চেষ্টা করি সাধারণ মানুষকে সাধ্যের মধ্যে পরিষেবা দিতে। এক সঙ্গে অনেকে হলে খরচ কমে, লোকে সেটা বোঝেন।” |