স্বাস্থ্য ফিরছে হাসপাতালে |
চারটি বিভাগে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসক যাতে থাকেন, তা নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয়েছেন জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে মেডিসিন, সার্জারি, আইটিইউ এবং জরুরি বিভাগের কাজের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। নতুন তালিকা অনুযায়ী, এই বিভাগগুলিতে ২৪ ঘন্টা চিকিৎসক থাকবেন। সব চিকিৎসকদেরই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কাজের দিন ধার্য করা হয়েছে। প্রতি চতুর্থ দিনে চিকিৎসকদের ছুটির দিন রাখা হয়েছে। তবে হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা কম। সেই কারণে নয়া নির্দেশিকা নিয়ে চিকিৎসকদের একাংশ আপত্তি তুলেছেন। অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্থ সার্বিস ডক্টরসের তরফে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে হাসপাতালের সুপারকে স্মারকলিপি দিয়ে ওই নির্দেশের প্রতিবাদ জানানো হয়। কাজের তালিকা চালু করলে কাজ থেকে সরে দাড়ানোর হুমকিও দেওয়া হয়। তাই নতুন নির্দেশিকা কবে থেকে কার্যকরী হবে তা নিয়ে আরও এক দফায় আলোচনায় বসার কথা ভাবছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার ব্রজেশ্বর মজুমদার বলেন, “পরিষেবা উন্নত করতেই নতুন কাজের তালিকা হয়েছে। সরকারি চিকিৎসকদের সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করতেই এই তালিকা তৈরি করা হয়। দেখা গিয়েছে অনেক চিকিৎসক তুলনামুলক কম কাজ দেওয়া হয়ে আসা হয়েছে। সকলকে সমান কাজ দিয়ে হাসপাতালের পরিষেবা উন্নত করা সম্ভব হবে বলে ধরে নিয়েই এই তালিকা তৈরি করা হয়। পুজোর পরে বিষয়টি রূপায়ণ হবে। প্রয়োজনে কিছু সংশোধন এবং পরিমার্জনও করা হতে পারে।” অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্থ সার্বিস ডক্টরস-এর সম্পাদক স্বস্তিশোভন চৌধুরী অভিযোগ করেন, “গত জুলাই মাসে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর থেকে যে নীতি স্থির করে দেওয়া হয়, সদর হাসপাতালের নতুন কাজের তালিকা তার পরিপন্থী। রাজ্য সরকারের নির্দেশে চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনার কথা বলা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে আমরা তা জানি না। নতুন নিয়মে মেডিসিন, সার্জারি-সহ কিছু বিভাগে ২৪ ঘন্টা একজন চিকিৎসক থাকার কথা বলা হয়েছে। চিকিৎসকদের যা সংখ্যা তাতে সেটা সম্ভব নয়। এ ছাড়া আইটিইউতে যে চিকিৎসককে দায়িত্বে রাখা হয়েছিল তাঁকেও সরিয়ে নিয়ে যাওযা হয়েছে। নতুন নিয়মে আইটিইউতে চিকিৎসকের সংখ্যাও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের আপত্তির কথা জানিয়েছি। শুধু আমাদের সংগঠন নয় চিকিৎসকদের অনেকেই এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন।”
|
প্রসূতিকে ফেরাল হাসপাতাল, পথেই মৃত সদ্যোজাত |
সন্তানসম্ভবাকে ফেরাল হাসপাতাল। একাধিক বার। সন্তান জন্মাল হাসপাতালের বাইরের ফুটপাথে। বাঁচলও না সেই সদ্যোজাত। মুম্বইয়ে গত কাল গভীর রাতের ঘটনা। কুরলার বৃহন্মুম্বই পুরসভার ভাবা হাসপাতালে রাত ১১টা নাগাদ ভর্তি হতে যান সন্তানসম্ভবা তবসুম সোহরাব শেখ। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তবসুমকে ভর্তি করেননি। বরং অন্য একটি হাসপাতালে তাঁকে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করাতে যেতে বলা হয়। আল্ট্রোসানোগ্রাফি করিয়ে রাত একটা নাগাদ তবসুম ভাবা হাসপাতালে ফিরলেও তাঁকে ভর্তি করতে চাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য ছিল, তবসুমের প্রসবে কিছু সমস্যা আছে। তাই তাঁকে অন্য কোনও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত। কিন্তু ততক্ষণে তবসুমের প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়ে গিয়েছিল। তাই হাসপাতাল থেকে বেরোনোর পরে আর বেশিদূর যেতে পারেননি ওই ২২ বছরের যুবতী। রাত দেড়টা নাগাদ হাসপাতালের বাইরের ফুটপাথেই এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তবসুম। প্রত্যক্ষদর্শী ফিরোজ মানিয়ালের কথায়, “রাত দেড়টা নাগাদ একটি মেয়ের চিৎকার শুনলাম। দৌড়ে গিয়ে দেখি হাসপাতালের বাইরের ফুটপাথে একটি মেয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছে।” তবসুমের এক কাকা জানিয়েছেন, রাস্তায় জড়ো হওয়া সকলে মিলে প্রতিবাদ শুরু করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তবসুম ও তাঁর ছেলেকে ভর্তি করেন। কিন্তু সকালে চিকিৎসকরা জানান, তবসুমের ছেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। পরে জানানো হয় বাচ্চাটি মারা গিয়েছে। তবসুমের পরিবারের অভিযোগ, ঠিক সময়ে চিকিৎসা না হওয়াতেই বাচ্চাটি মারা গিয়েছে। তবসুমের কাকা জানিয়েছেন, ছেলের মৃত্যুর সংবাদ এখনও তবসুমকে দেওয়া হয়নি। তিনি জানেন, তাঁর ছেলের কিছু সমস্যা হওয়ায় সে এখন আইসিইউয়ে আছে। গোটা ঘটনার তদন্ত হবে বলে হাসপাতালর জানিয়েছে। এই নিয়ে গত তিন মাসে তিন বার হাসপাতাল ভর্তি করতে না চাওয়ায় হাসপাতাল চত্বরেই প্রসবের ঘটনা ঘটল।
|
উজানি অসমের ডিব্রুগড় জেলার ছাবুয়া এলাকায় পুজোর প্রসাদী ভোগ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন অন্তত ৭০ জন। অসুস্থদের আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সরকারি সূত্রে আজ জানানো হয়, ছাবুয়া শহর ঘেঁষা রাজাবাড়ি গ্রামে কাল একটি গৃহস্থবাড়িতে পুজোর আয়োজন হয়েছিল। পূজানুষ্ঠানের পর আগত ভক্তদের মধ্যে ভোগ বিলি করা হয়েছিল। বড়-ছোট সবাই ওই প্রসাদী ভোগ খেয়েছিলেন। গভীর রাতেই একের পর এক লোক অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকেন। শুরু হয় পেটের যন্ত্রণা ও বমি। ভোর হতেই স্থানীয় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কার্যত লাইন পড়ে যায় অসুস্থদের। সংখ্যাটা অন্তত ৭০। তার মধ্যে ১৫ জনই শিশু। ২৫ জনকে ছাবুয়ার সেন্ট লিউকস হাসপাতালে ও বাকিদের ডিব্রুগড়ের অসম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, অতি পুরনো চাল দিয়ে ভোগ বানানোতেই এই বিপত্তি।
|
পেটের রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে রামপুরহাট পুরসভার ১৩ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে। এখনও পর্যন্ত ১৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের রামপরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে সাত ও এগারো বছরের দু’জন বালক-বালিকা আছে। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরওয়ার্ড ব্লকের স্বপন দত্ত জানান, সোমবার সন্ধ্যা থেকে আক্রান্তদের মধ্যে পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব দেখা দিয়েছে। খবর পেয়ে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে তিনি এলাকায় গিয়েছিলেন। কয়েক জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করা হয়। মঙ্গলবার এলাকায় গিয়ে দেখা যায় আরও কয়েক জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদেরকেও হাসপাতালে পাঠানো হয়। স্বপনবাবু বলেন, “পুকুরের জল থেকে এই রোগ দেখা দিয়েছে কি না বলা সম্ভব নয়। পুরপ্রধানকে জানানো হয়েছে।” পুরপ্রধান নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দুপুরে কাউন্সিলরের কাছ থেকে খবর পেয়েছি। বিকেলের দিকে মেডিক্যাল টিম গঠন করে এলাকায় পাঠানো হয়েছে।” |