বৃত্তি ফিরছে প্রাথমিকে, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নিখরচায় পাঠ্যবই দেবে রাজ্য সরকার |
এ বার থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সব পড়ুয়াকে নিখরচায় পাঠ্য বই দেবে রাজ্য সরকার। জানুয়ারি মাসে আগামী শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই ছাত্রছাত্রীদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার বন্দোবস্ত হবে বলে স্কুলশিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু মঙ্গলবার জানিয়েছেন। পাশাপাশি, তিনি জানান, চতুর্থ শ্রেণির পরে বৃত্তি পরীক্ষা আবার চালু হচ্ছে। এখন প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সব বিষয়ের পাঠ্য বই বিনা মূল্যে দেয় প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। কিন্তু মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বইগুলি বাইরে থেকেই ছাত্রছাত্রীদের কিনতে হয়। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্তই সব পড়ুয়াই নিখরচায় বই পাবে। জানুয়ারিতে ক্লাস শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই পড়ুয়াদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু বামফ্রন্ট সরকার প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছিল। নতুন সরকার ওই পরীক্ষা ফিরিয়ে আনার কথা ভাবল কেন? রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য বলেন, “এর দু’টি উদ্দেশ্য। পড়াশোনায় পড়ুয়াদের উৎসাহ বাড়ানো, মেধাবীদের চিহ্নিত করা। পাশাপাশি কোন স্কুলে কেমন পড়াশোনা হচ্ছে, সেটাও দেখা।” মানিকবাবু জানান, চলতি বছরে ডিসেম্বরের শেষে এই পরীক্ষা নেওয়া হবে। রাজ্যের প্রায় ৫৬ হাজার প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ারা বৃত্তি পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবে। কিন্তু প্রতিটি স্কুল থেকে সর্বাধিক কত জন পড়ুয়া এই পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবে বা সফল পরীক্ষার্থীদের কত বৃত্তি দেওয়া হবে, তা এখনও স্থির হয়নি। রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, “স্কুলপিছু কত জন পরীক্ষায় বসবে বা কত জনকে বৃত্তি দেওয়া হবে, তা সপ্তাহখানেকের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে স্থির করা হবে।” এর আগেও এ রাজ্যে সরকারি ভাবে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হত। ১৯৮৪ সালে বিগত বাম সরকারের জমানায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। একটি বেসরকারি সংস্থা বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে। ’৯২ সাল থেকে শুরু হওয়া ওই পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়েছে। এখন বেশ কয়েক লক্ষ পড়ুয়া ওই পরীক্ষায় বসে।
|
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ম্যানেজমেন্ট কোর্স |
রাজ্যে অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য এই প্রথম পেশাদারি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হচ্ছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে একটি ম্যানেজমেন্ট সংস্থার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ কোর্স চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। পুরোদস্তর পেশাদারি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে সেখানে। পূর্ব ভারতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য এই ধরনের প্রশিক্ষণ অন্য কোনও রাজ্যে নেই বলে সরকারি সূত্রের বক্তব্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা-সফর সেরে ফিরলে সল্টলেকে ওই প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনের চেষ্টা চলছে। রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পমন্ত্রী মানস ভুইঁয়া এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গেও আলোচনা চালাচ্ছেন। মানসবাবুর কথায়, “চার মাস এই দফতরে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, মানবসম্পদ এবং ম্যানেজমেন্টের দক্ষতা আরও উন্নত করার প্রয়োজন আছে। সেই জন্যই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রের জন্য ম্যানেজমেন্ট কোর্স চালু করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় ফিরলে তাঁর সঙ্গে কথা বলে প্রশিক্ষণ শুরুর দিনক্ষণ ঠিক করা হবে।” ইস্টার্ন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টিগ্রেটেড লার্নিং ইন ম্যানেজমেন্ট (ইআইআইএলএম) নামে একটি সংস্থার মাধ্যমে ওই ম্যানেজমেন্ট কোর্সের ব্যবস্থা করা হবে। সংস্থাটির অধিকর্তা আর পি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আরও এক আধিকারিক প্রদীপ্ত ভট্টাচার্যের সঙ্গে মন্ত্রী মানসবাবুর এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মানসবাবু বলেন, “ওঁদের সহযোগিতায় বিষয়টি চূড়ান্ত করা গিয়েছে। পূর্ব ভারতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের মানবসম্পদের জন্য এই ধরনের ম্যানেজমেন্ট শেখানোর ব্যবস্থা নেই। এই উদ্যোগের ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে আমরা দক্ষ কর্মী পাব।” ওই সংস্থাটি ‘স্পেশ্যালাইজেশন’-সহ এমবিএ, বিবিএ-র মতো ম্যানেজমেন্ট কোর্স করিয়ে থাকে। নতুন উদ্যোগেও পুরোদস্তুর কোর্সের ব্যবস্থা করা হবে বলে সরকারি সূত্রের খবর। |